আপডেট : ৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১১:১০
কাব্য নাটক : মুক্তির মিছিল
নাট্যকার : জাহিদুল কবির রিটন
(পূর্ব প্রকাশিতের পর-ষষ্ঠ কিস্তি )
দ্বিতীয় অঙ্ক
দৃশ্য -২
[ মঞ্চে একটি কাঠের হাতল ওয়ালা চেয়ার থাকবে। আছাদুল্লাহ ভাব নিয়ে মঞ্চে এসে চেয়ারটির দিকে কিছুসময় তাকিয়ে থেকে বসবে। সে চেয়ারে বসে বিভিন্ন ভাব-ভঙ্গি করবে।]
আছাদুল্লাহ : একেই বলে ভাগ্য
যদি থাকে
ঘুরে-ফিরে আসবেই সৌভাগ্য
কষ্টের দিন করেছি পার
হাল কভু ছাড়িনিকো,
সদা হাস্য চেহারা রাখি
পরিকল্পিত পদযাত্রায়!
কোথায় ছিলাম, কোথায় এলাম
নিজের কাছেই অবাক লাগে
এখানে বসেই থামবো নাকো
যাবো আমি আরো দূরে!
সুযোগের বৃষ্টি আসে যখন
কায়দা মতো ছাতা ধরি
এমনি করেই ধাপে ধাপে
এই চেয়ারে বসেছি আজি!
[হট্টগোলের শব্দ আসবে]
আছাদুল্লাহ : [রাগন্বিত কণ্ঠে ]
আবার কেন হৈ-চৈয়ের শব্দ আসে কানে !
সারাটা জীবন গেল হৈ-চৈ শুনে শুনে!
তরফের সংসার আমাদের
ঝগড়া-ঝাটি নিত্য সার
আমাদের নিয়ে
অন্য মানুষের মাতব্বরী
দেখে দেখে দিন করেছি পার !
আজ কিসের হৈ-চৈ
আমাদের ঘরে
এই বিজয়ের দিনে ?
[ভালো করে কান পেতে]
ধুর ছাই, কি বলি!
শব্দতো আসছে অন্য কোথা থেকে
মনের মাঝে স্থান পেয়ে গেছে
অতীত দিনে স্মৃতি,
কোলাহলের শব্দকে মনে হয়
ঝগড়-ঝাটি!
[তুতুর প্রবেশ]
তুতু : [বশ্যতার কণ্ঠে ]
একা একা বসে আছো
এটা কোন কথা হলো
তুমি যদি একা থাকো
আমার কি কাজ বলো,
ছাতার কাজ ছাতা জানে
রোদ বৃষ্টি আড়াল করে
আমি হলাম সেই ছাতা
আমার কথা ভুলো নাকো,
চেয়ারে বসে সিদ্ধান্ত দেবে
কাছে-দূরে শত্রু হবে
ছাতা তোমার লাঠিয়াল যেন
রাত্রি-দিনের সঙ্গী মেনো!
আছাদুল্লাহ : একা আমি নই কখনো
আপনি আছেন সাথে সাথে
আপনার কথা মনেতে আমার
সারাক্ষণই বাজতে থাকে!
তুতু : [তুতু খুশিতে উদ্বেলিত হয়ে মঞ্চে চক্রাকারে ঘুরবে]
হুল্লোড়!
হুল্লোড়!
হুল্লোড়!
হুল্লোড়!
[আছাদুল্লাহ বিদ্রুপের হাসি হাসবে]
তুতু : খবর আছে, জব্বর খবর
শাহিনা বেগম ছাড়বো ভিটা
তোমার সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার
ফল এবার বুঝবো সিধা!
শাহিনা বেগমও পুত্র ছাড়া
কন্যার মিছিলের বাহারি মেলা
ঐখানেতেও হাত দেবো
ভাই-ভাতিজাদের ভাগ দেবো
লাল-চানুর সুখের বিতান
ভেঙ্গে করবো খান খান!
আছাদুল্লাহ : গোপন সূত্রে খবর পাাইছি
ঋণের কিস্তি তাদের খেলাপ হইছে
মাইকিং করে জানাবো তা
পাড়া-গেরামের সক্কলকে
ক্রোকের কথা শুনবে সবাই
কলকাঠি নাড়বো আড়ালে বসে
দৌড়াদৌড়ি করবে তারা
দেখবো তা হেসে হেসে
কাক-পক্ষীও বুঝবে না যে
আমি আছি এই খেলার পেছনে !
[আছাদুল্লাহ ও তুতু দুষ্ট হাসি হাসবে]
তুতু : যে কথা বার বার বলি তোমায়
জবাব আসে না এই আনন্দ-বর্ষায়
বুঝি না তোমার মনের মতিগতি
আমি যে জবাবের আশায় দাঁড়ায়ে থাকি!
আছাদুল্লাহ : কোন কথা ?
কি ব্যথা ?
বলে যান আপনি
শোনার অপেক্ষায় আমি!
তুতু : লাল মিয়া বড় ভাই
নির্বাচনে সাথে নাই
শাহিনার সঙ্গে ছিল
এই কথা ভুলে গেছো!
ভাগাভাগির বাড়ি হইছে
নিজের পায়ে কুড়াল মারছে
আমি কিন্তু ভুলি নাই
দোকান আমার চাই-ই চাই!
আছাদুল্লাহ : কিছুই আমি ভুলি নাই
ভুলার মানুষ আমি নই
সময় মতো শোধ নেবো
কোমড়ের হাড় ভেঙ্গে দেবো!
তুতু : [আনন্দে চক্কর দেবে]
হুল্লোড়!
হুল্লোড়!
হুল্লোড়!
হুল্লোড়!
[আছাদুল্লাহর মুখে দুষ্ট হাসি]
[আছাদুল্লাহ ও তুতুর প্রস্থান]
চলবে..