Main Logo
আপডেট : ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ০৯:৫৫

কাব্য নাটক : মুক্তির মিছিল ( ধারাবাহিক )

নাট্যকার : জাহিদুল কবির রিটন

কাব্য নাটক : মুক্তির মিছিল ( ধারাবাহিক )
( পূর্ব প্রকাশিতের পর-নবম কিস্তি )
 
               দৃশ্য ৩
[মঞ্চে লাল মিয়া ও হেলালের প্রবেশ। হেলালের ভাব-ভঙ্গিতে রাগান্বিত ভাব। লাল মিয়ারও নতভাব নয়।]
 
হেলাল : মনে পড়ে লাল মিয়া সেদিনের কথা 
সীমানা নিয়ে ফেসাদ বেঁধেছিল বাজারের যেথা
মানো নাই সেথা
সেদিন তোমার জিত হয়েছিল
সঙ্গিদের ভীড়ে
সেদিন আর নাই
হারা মনের ব্যথা মোরা
আজও টের পাই!
লাল মিয়া : ন্যায্য কথা বলি আমি সদা সর্বদাই
অন্যায্য দাবীর পক্ষে আমি কভু নাই
সেদিনের কথা আমার ভালো মনে আছে
সরল পথে চলি আমি ভণিতা নাই!
হেলাল : অন্যায্য দাবী বারেবারে ঘুরে ঘুরে আসে
এখন তুমি পড়ে গেছো সেই গ্যাঁড়াকলে!
[বিদ্রূপের হাসি]
লাল মিয়া : প্রতিশোধের মন নিয়ে থাকেন
বড় ভাই হয়ে
সেই শোধ এখনো চান
এতো দিন পরে
তাও যদি ন্যায্য হতো
কথা ছিল না
অন্যায়ের সাথে কভু আপোষ করি না,
দলিলে হইছে দাগ ভুল
সেটাই এখন গণ্ডগোল
সাফ কাওলা দলিল দিছেন
গুণে গুণে টাকা নিছেন
মৌলভি হয়ে আপনি ভুলে গেছেন পরকাল
গুটিকতক আপনার জন্যেই
মহান পেশা খায় গাল!
হেলাল : [রাগান্বিত উচ্চকণ্ঠে]
মুখের মাঝে লাগাম লাগা
দেখছিস্ নাকি সাপের পাঁচ পা
এতো জোর কোথায় পাস্
জামাইয়ের উপর ভর করোস্ ?
লাল মিয়া : লাগাম লাগান আপনার মুখে
জামাইয়ের কথা কেন আসে
সমস্যা আমাদের
এখানে জামাই কিসের ?
হেলাল : মেয়েদের নামে দোকান লিখছিস্
এই কাজ কেন করছিস্
পুত্র ছাড়া মানুষ তুই
ভাই-ভাতিজা অংশী তোর
ধর্মে আছে এই কথা
তুই হইছোস্ ধর্ম ছাড়া!
লাল মিয়া : ধর্মের কথা আমিও জানি
সেই আদেশের মর্মও বুঝি
বেঁচে থাকতেই তাচ্ছিল্য ভাব
না থাকলে তো গত্যন্তর নেই
সম্পদ হাসিলে ধর্মের কথা
আর সব বেলায় খেলতামাশা
অন্তর ভরা ভণ্ডামিতে 
আল্লাপাক সব জানে!
হেলাল : তুই বিরাট পণ্ডিত মানুষ 
আর সবাই মূর্খ ফানুস
অল্প ঘায়ে রক্ষা আছে
ক্যান্সার হলে বাঁচন নাই রে!
 
লাল মিয়া : [আঙ্গুল উঁচিয়ে]
হুমকি আমায় দিয়েন না
শুনে আমি মচকাবোও না!
হেলাল : দূর হয়ে যা এখান থেকে 
তোরে আমাদের দেখার আছে!
লাল মিয়া : আপনার সাথে কথা বলা
বৃথা সময় নষ্ট করা!
[লাল মিয়ার প্রস্থান]
 
[হেলাল উত্তেজিত ভঙ্গিতে লাল মিয়ার প্রস্থান দেখতে থাকবে।]
 
[তুতুর প্রবেশ। তুতু উঁকিঝুঁকি দিয়ে লাল মিয়ার প্রস্থান দেখবে। হেলালের কাছে তুতু আসবে]
 
তুতু : লাল মিয়া চলে গেলো
কি কথা বলে গেলো
তার মনের ভাব-গতি
বুঝতে কি পারছেন কম-বেশি ?
হেলাল : তোরা হইছোস্ গোঁয়ারের ধারা
হাঁটু পানিতে লাফ পারা
কৈ মাছের মতো পড়বি ধরা
ছট্ফটাইয়া প্রাণ হারা!
তুতু : এই কথা কেনো এলো
মেঘ ছাড়াই বৃষ্টি যেনো
আপনে হলেন মানীজন
সব কথা খুইল্যা কন্।
হেলাল : ভাই ভাতিজা সাথে নে
লালের কোমড় ভেঙ্গে দে
কতো বড় বুকের পাটা
আঙ্গুল তুলে কয় কথা!
তুতু : কত্তো বড় বেয়াদবি
এইটা কেমনে সহ্য করি
আপনে হলেন বড় ভাই
তার কি কোনো মূল্য নাই!
জানাই গিয়ে এসব কথা
শিবলি আছে দোকানে বসা।
হেলাল : ঐডাও তো আঁটকুড়া
পুত্র নাই কন্যাওয়ালা
ধান্ধায় ঘুরে সারাবেলা
পতন থেকে নিশানওয়ালা
ইজ্জত বেচে চলার দল
চৈত্র মাসে ভরা বাদল!
তুতু : এইভাবে বলবেন না
কথা ভাসে জানেন না
এই কথা কানে গেলে
ধুন্ধুমার কাণ্ড ঘটবে!
হেলাল : তুই এখন পালের গোদা
কথা শেখাস্ আমাকে এথা
বদের বদ ফয়েজের বেটা
সবগুলাই একই কথা!
[হেলালের উত্তেজিতভাবে প্রস্থান]
 
তুতু : [কূট হাসি]
ফয়েজের বেটা বদের বদ
ময়েজের বেটা বিরাট সৎ
দোকান আগে হাসিল করি
তারপরে তোগরে আছাড় মারি!
[তুতুর প্রস্থান]
 
চলবে...
 
উপরে