ঈদের পর অনলাইন ক্লাসে যাওয়ার পরিকল্পনা ঢাবির
করোনাভাইরাসে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস-পরীক্ষা স্থগিত থাকায় শিক্ষার্থীদের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে এখনই অনলাইন ক্লাসে যাচ্ছে না ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। ঈদের ছুটির পর শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের প্রযুক্তিগত অবকাঠামো ও অন্যান্য সুবিধা নিশ্চিত করার পরই অনলাইন ক্লাসের পরিকল্পনা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
সোমবার (১১ মে) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান উপাচার্য ভবন থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের ডিনদের সঙ্গে একটি ভার্চুয়াল সভা করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. নাসরীন আহমাদ এবং উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ ভার্চুয়াল সভায় সংযুক্ত ছিলেন।
সভায় করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) জনিত পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস-পরীক্ষা স্থগিত থাকায় শিক্ষার্থীদের যে ক্ষতি হচ্ছে তা নিরসনের উপায় ও করণীয় বিষয়ে বিশেষ করে অনলাইনে ক্লাস নেয়ার সম্ভাব্যতা নিয়ে আলোচনা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশ শিক্ষার্থীই দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে নিজ বাড়িতে অবস্থান করছেন। সেখানে ইটারনেটসহ প্রযুক্তিগত অন্যান্য আধুনিক সুবিধা না থাকায় অনলাইন ক্লাসে তাদের অংশগ্রহণের সক্ষমতা নেই বলে সভায় উল্লেখ করা হয়।
এছাড়া অনেক শিক্ষার্থীর অর্থনৈতিক অসচ্ছলতা, বিভিন্ন সীমাবদ্ধতা ও প্রতিবন্ধকতা রয়েছে। এমতাবস্থায় এখনই অনলাইন ক্লাস নেয়া সম্ভব হবে না বলে সভায় অভিমত ব্যক্ত করেন অনেকে। তবে অনির্ধারিত এই ছুটি দীর্ঘায়িত হলে সে পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে ঈদের ছুটির পর শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদর প্রযুক্তিগত অবকাঠামা ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিতকরণ সাপেক্ষে অনলাইন শিক্ষাকার্যক্রম গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয়া যেতে পারে বলে সভায় জানানো হয়।
সভায় গৃহীত যেকোনো ব্যবস্থা বা পদ্ধতিতে সমতা, অংশগ্রহণ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক মূল্যবোধের প্রতিফলনের প্রতি গুরুত্বারোপ করা হয়।
এই অনাকাঙ্ক্ষিত ও অনির্ধারিত ছুটিকালীন অবস্থায় শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ায় যে ক্ষতি হচ্ছে, তা পুষিয়ে নিতে বিশ্ববিদ্যালয় খোলার পর সাপ্তাহিক ছুটির দিনসহ অন্যান্য সময়ে অতিরিক্ত ক্লাস নেয়ার বিষয়ে সভায় ঐক্যমত প্রকাশ করা হয়।
এছাড়া শিক্ষার্থীরা যাতে বিছিন্ন ও হতাশাগ্রস্থ না হয় সেজন্য সম্ভাব্য সব উপায়ে শিক্ষার্থীদের শিক্ষাকার্যক্রমের সঙ্গে সম্পৃক্ত রাখা এবং তাদের প্রয়োজনীয় মানবিক ও অন্যান্য সহযোগিতা অব্যাহত রাখার জন্য বিভাগ, ইনস্টিটিউট এবং শিক্ষকদের প্রতি বিশেষভাবে অনুরাধ জানানো হয়।
সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত/উপাদানকল্প সব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষাকার্যক্রমের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ডিন ও প্রতিষ্ঠানসমূহের অধ্যক্ষ ও শিক্ষকদের পরামর্শ অনুযায়ী শিক্ষাকার্যক্রম পরিচালনার অনুরোধ করা হয়।
এছাড়াও চিকিৎসা অনুষদসহ অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত বিদেশি শিক্ষার্থী যারা বর্তমানে বাংলাদশ অবস্থান করছেন, তাদের প্রতি যত্নশীল থাকা এবং বিশেষ মানবিক সহযাগিতা প্রদানের জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি অনুরোধ জানানো হয়।
সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ে করানাভাইরাস পরীক্ষা ল্যাব স্থাপন এবং করোনা শনাক্তকরণ কার্যক্রম শুরু করায় সংশ্লিষ্ট সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানানো হয়।