স্বাস্থ্য কর্মকর্তার কক্ষে গোনা হচ্ছিল ‘ঘুষের টাকা’, তদন্ত কমিটি
বরগুনা: জেলার বেতাগী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. ফাহমিদা লস্করের অফিসকক্ষে ‘ঘুষের টাকা’ গোনার ভিডিও ভাইরাল হওয়ার ঘটনার তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
২৫ অক্টোবর এই তদন্ত কমিটি গঠন করে ৭ কর্ম দিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলেছেন বরগুনার সিভিল সার্জন ডা. মো. ফজলুল হক।
তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কর্মকর্তারা হলেন - তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক আমতলীর স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আব্দুল মুনয়েম, ও বাকি দুই সদস্য ডাক্তার মো. মনিরুজ্জামান এবং ডাক্তার অরুনাম চৌধুরী।
গত ২৫ অক্টোবর বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল প্রায় ৭ মিনিটের একটি ভিডিওতে দেখা যায়, স্বাস্থ্য কর্মকর্তার অফিসকক্ষে ঠিকাদার মামুন খানের কাছ থেকে একটি খামসহ বান্ডিল থেকে টাকা বের করে গুনছেন ফার্মাসিস্ট কৃষ্ণ কুমার পাল।
ঠিকাদার মামুন খান এই টাকা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মাহমুদা লস্করকে দিয়েছেন বলে জানান কৃষ্ণকুমার।
ডাক্তার মাহমুদা লস্করকে তিনি এই টাকা পৌঁছে দেন বলেও জানান তিনি।
স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মাহমুদা লস্কর তার কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা ঘুষ নিয়েছেন বলে স্বীকার হাসপাতালের পথ্য এবং খাদ্য সরবরাহকারী ঠিকাদার মামুন খান।
তিনি বলেন, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাকে ঘুষ না দিলে তিনি কোনো বিল ছাড় দেন না। পারসেন্ট কেটে রাখেন আমার প্রতিটি বিল থেকে ৬০ শতাংশ দিতে হয়। ৬ মাসের পাওনা বিলের জন্য তাকে ৫০ হাজার টাকা ঘুষ দিতে হয়েছে।
মামুন আরও বলেন, ডা. মাহমুদা লস্কর অত্যন্ত খারাপ আচরণ করেন। ৫০ হাজার টাকার পর আবার ৩ মাসের বিল পেতে আরও ১৫ হাজার টাকা দিতে হয়েছে।
হাসপাতালে একাধিক কর্মচারীর অভিযোগ, ডা. ফাহমিদা লস্করের আচরণ খুবই খাবার। তিনি ফার্মাসিস্ট কৃষ্ণ কুমার পালের মাধ্যমে সব অবৈধ লেনদেন করে থাকেন।
ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ অস্বীকার করেছেনঅভিযুক্ত বেতাগী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. ফাহমিদা লস্কর।
তিনি বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ ভিত্তিহীন। ফার্মাসিস্ট কৃষ্ণ কুমার পাল জানেন কোথা থেকে টাকা পেয়েছেন। আমি জানি না। তদন্ত হলে সব সত্য বের হয়ে আসবে।
বরগুনার সিভিল সার্জন ডাক্তার মো. ফজলুল হক সাংবাদিকদের বলেন, খাদ্য সরবরাহকারী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ঘুষ বা বাড়তি টাকা গ্রহণের কোনো সুযোগ নেই। অভিযোগের ভিত্তিতে গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন পাওয়ার পরে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সূত্র : বাংলানিউজ