logo
আপডেট : ১০ জুলাই, ২০১৯ ২৩:২৭
চুমু খেতে বাধ্য করে কাঠগড়ায় সৌদি রাজকন্যা
নিজস্ব প্রতিবেদক

চুমু খেতে বাধ্য করে কাঠগড়ায় সৌদি রাজকন্যা

 
 
প্যারিসে এক সৌদি রাজকন্যা ও তার দেহরক্ষীর বিরুদ্ধে এক ব্যক্তিকে শারীরিকভাবে নির্যাতনের অভিযোগের বিচারিক কার্যক্রম শুরু হয়েছে। রাজকন্যা তার দেহরক্ষীকে আদেশ দিয়েছিলেন এক ব্যক্তিকে প্রহার করতে; এমন অভিযোগ আনা হয়েছে রাজকন্যা ও তার দেহরক্ষীর বিরুদ্ধে।
 
যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের বোন রাজকন্যা হাসা বিনতে সালমানের বিরুদ্ধে অস্ত্রসহ সহিংসতায় সহায়তা ও অপহরণে সহায়তার অভিযোগ আনা হয়েছে। ২০১৬ সালের এ ঘটনায় রাজকন্যার দেহরক্ষীর বিরুদ্ধে এক ব্যক্তিকে জোরপূর্বক রাজকন্যার পায়ে চুমু খেতে বাধ্য করার অভিযোগও রয়েছে।
 
 
তবে রাজকন্যা হাসা এবং তার দেহরক্ষী দু'জনই অন্যায় আচরণের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। এদিকে রাজকন্যা হাসার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছে। তবে মঙ্গলবার বিচার চলার সময় অভিযুক্ত রাজকন্যা বা অভিযোগকারী, কেউই আদালতে ছিলেন না। তবে রাজকন্যার দেহরক্ষী রানি সাইদি এবং তার পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
 
রাজকন্যাকে আইনি সহায়তা প্রদানকারী দলের বক্তব্য অনুযায়ী, রাজকন্যার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ আনা হয়েছে।
 
কী অভিযোগ আনা হয়েছে?
 
মিসরীয় কর্মী আশরাফ ইদ পুলিশকে বলেন, ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে প্যারিসের অ্যাভিনিউ ফশে সৌদি রাজার অ্যাপার্টমেন্টে কাজ করার সময় বাথরুমের ছবি নিতে যান, যেন পরবর্তীতে সব জিনিস সঠিক জায়গা মতো রাখতে পারেন।
 
ফরাসী সংবাদপত্রের তথ্য অনুযায়ী, সেসময় রাজকন্যা সন্দেহ করেন যে ইদ আয়না ব্যবহার করে অনুমতি না নিয়ে রাজকন্যার ছবি তুলছিলেন এবং সন্দেহে নিরাপত্তা রক্ষীদের ডাকেন। ফরাসী এক সূত্র থেকে জানা যায়, মিসরীয় ব্যক্তি অভিযোগ করেন যে রাজকন্যা বলেন, এই কুকুরকে হত্যা করতে হবে, তার বেঁচে থাকার অধিকার নেই। তারপর তুমি বুঝতে পারবে কীভাবে রাজকন্যার সাথে, রাজপরিবারের সদস্যদের সাথে কথা বলতে হয়।
 
ফরাসী পুলিশকে ইদ বলেন যে, রাজকন্যার দেহরক্ষী তাকে প্রহার করে এবং রাজকন্যার পায়ে চুমু খেতে বাধ্য করে। আদালতে দেহরক্ষী বলেন, আমি যখন শুনতে পাই যে রাজকন্যা সাহায্যের জন্য চিৎকার করছেন, তখন দৌড়ে গিয়ে দেখি যে তারা দু'জন হাত দিয়ে ফোন ধরে রেখেছে।
 
আমি জোর করে তাকে (মি. ইদ) সরিয়ে নেই এবং এরপর তার কী অবস্থা হয় জানি না, এএফপিকে এক সাক্ষাৎকারে জানান তিনি।
 
ওই ঘটনার বেশ কয়েক ঘন্টা পর ইদকে ছাড়া হয়, যদিও তার ফোনটি ফেরত দেয়া হয়নি তাকে। পরবর্তীতে ফোনটি নষ্ট করে ফেলা হয়।
 
রাজকন্যা হাসা কেন প্যারিসে নেই?
 
রাজকন্যার দেহরক্ষীর বিরুদ্ধে সশস্ত্র সহিংসতা, চুরি এবং ব্যক্তির ইচ্ছার বিরুদ্ধে তাকে আটকে রাখার অভিযোগ আনা হয়েছে। তবে ওই ঘটনার কয়েকদিন পরই রাজকন্যা হাসা ফ্রান্স ত্যাগ করেন।
 
রাজকন্যার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের ভিত্তিতে একটি গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন একজন বিচারক, যেটির মাধ্যমে সৌদি আরবের বাইরে গেলেই গ্রেফতার করা হতে পারে তাকে। যুক্তরাজ্যের ডেইলি টেলিগ্রাফ বলছে, রাজকন্যার সহযোগীরা এটিকে গৃহবন্দী থাকার সাথেই তুলনা করছেন।
 
রাজকন্যার আইনজীবী ময়নে বলেছেন যে, রাজকন্যা স্কাইপে ভিডিও কলের মাধ্যমে তার বাড়ি থেকেই আদালতে হাজিরা দেয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন। বিবিসি বাংলা।