আপডেট : ৯ মে, ২০২০ ১৭:৪৯
মাত্র ১০০ টাকার জন্য বড় ভাইকে খুন!
অনলাইন ডেস্ক
জীবন ও রাজীব বাবা নারায়ণ ঘোষের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ‘জীবন ফুড ফ্যান্টাসি’-তে কাজ করেন দুই ভাই। জীবন ঘোষ (২৯) ও রাজীব ঘোষ (২৪)। গত ৭ মে সন্ধ্যায় বড় ভাই জীবন ঘোষের কাছে ১০০ টাকা চান ছোট ভাই রাজীব ঘোষ। কিন্তু টাকা না দিয়ে চড় মারেন জীবন। এতেই ক্ষিপ্ত হয়ে বড় ভাই জীবনকে ইট দিয়ে আঘাত করে খুন করেন রাজীব।
গত ৭ মে ইফতারের পরপরই রাজধানীর ৯৩/এ, উত্তর মুগদার ‘জীবন ফুড ফ্যান্টাসি’ নামক দোকানের ভেতরে এ ঘটনা ঘটে।
চাঞ্চল্যকর ওই ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী না থাকায় এবং খুনি রাজীব দোকানের শাটার বন্ধ করে বাসায় চলে যাওয়ায় খুনিকে শনাক্ত করা কঠিন হয়ে পড়ে। তবে আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ দেখে ছোট ভাই রাজীবকে খুনি হিসেবে শনাক্ত এবং তাকে গ্রেফতার করে মুগদা থানা পুলিশ।
শুক্রবার বাবার করা মামলায় শনিবার দুপুরে বিজ্ঞ আদালতে গ্রেফতার রাজীব ১৬৪ ধারায় খুনের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
ঢাকা মহানগর পুলিশের মতিঝিল বিভাগের সবুজ জোনের সহকারী কমিশনার (এসি) রাশেদুল হাসান জাগো নিউজকে বলেন, নির্মম ওই হত্যাকাণ্ড ঘটানোর পর সুকৌশলে ভিকটিম জীবন ঘোষের মরদেহ দোকানের ভেতরে ফেলে রেখে দোকানের শাটার তালাবদ্ধ করে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ইট রাস্তায় এবং দোকানের চাবি ম্যানহোলে ফেলে বাসায় ফেরেন খুনি রাজীব।
ওই ঘটনায় শুক্রবার (৮ মে) মুগদা থানায় বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন নিহতের বাবা নারায়ণ ঘোষ। মামলা নং-৩।
রাশেদুল হাসান আরও বলেন, মুগদা থানা পুলিশ হত্যা মামলার মূল আসামিকে শনাক্তে তদন্ত শুরু করে। আশপাশের ভবনের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়। সেই ফুটেজ পর্যালোচনা এবং তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় বড় ভাই জীবন ঘোষ হত্যায় ছোট ভাই রাজীব ঘোষকে (২৪) শনাক্ত করা হয়। এরপর গতরাতে অভিযান চালিয়ে মুগদা থানার ওসি প্রলয় কুমার সাহা, ইন্সপেক্টর (অপারেশন) মাসুদুর রহমান ও তদন্ত কর্মকর্তা এসআই রহিদুল ইসলামের নেতৃত্বে থানা পুলিশ রাজীব ঘোষকে গ্রেফতার করেন।
জিজ্ঞাসাবাদে রাজীব ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন এবং শনিবার দুপুরে বিজ্ঞ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে দেয়া তথ্য এবং আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে তিনি উল্লেখ করেন, প্রায়ই জীবনের কাছ থেকে টাকা নিতেন রাজীব। গত ৭ মে ৯৩/এ, উত্তর মুগদার জীবন ফুড ফ্যান্টাসি দোকানে কাজ করছিলেন দুই ভাই। ওইদিনও জীবনের কাছে ১০০ টাকা চান রাজীব। টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে রাজীব বড় ভাইয়ের সঙ্গে বাকবিতণ্ডে জড়ান। একপর্যায়ে জীবন একটা চড় মারেন রাজীবের গালে। এতেই ক্ষিপ্ত হয়ে বাইরে আসেন রাজীব। বাইরে তখন ইফতারের সময়। রাস্তায় মানুষের উপস্থিতি নেই। দোকারের শাটারের বাইরে থাকা একটা ইট নিয়ে ভেতরে ঢুকে রাজীব ঘোষ বড় ভাই জীবন ঘোষের মাথায় পেছনের দিক সজোরে একাধিক আঘাত করেন।
জীবন ঘোষ মারা গেছেন ভেবে ভয়ে মোবাইল ফোন, দোকানের চাবি নিয়ে বাইরে আসেন রাজীব ঘোষ। শাটার তালাবদ্ধ করে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ইট রাস্তায় এবং দোকানের চাবি ম্যানহোলে ফেলে বাসায় ফেরন তিনি।
রাজীবকে খুনি হিসেবে শনাক্তের পর তার দেয়া তথ্য মতে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ঘটনাস্থল থেকে রক্তমাখা ইট এবং বাসার বাথরুম থেকে হত্যাকাণ্ডের সময় পরনে থাকা গেঞ্জি জব্দ করেন।