logo
আপডেট : ১ জুন, ২০২১ ০৮:৩৪
ডাক্তার সাবিরাকে খুন করা হয়েছে আগুনের ঘটনা সাজানো নাটক
নিজস্ব প্রতিবেদক

ডাক্তার সাবিরাকে খুন করা হয়েছে আগুনের ঘটনা সাজানো নাটক

রাজধানী ঢাকার কলাবাগানে ডা. কাজী সাবিরা রহমানকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়, আগুনের ঘটনা নাটক বলেই জানতে পারছে তদন্তকারীরা। হত্যাকা-ের ঘটনাটি অন্যদিকে প্রবাহিত করতেই আগুন দেওয়ার নাটক সাজানো হয় বলে মন্তব্য করেন তিনি। সিআইডির এই কর্মকর্তা আরও বলেন, ফ্ল্যাটের কোথাও আগুন লাগার সূত্রপাত আমরা পাইনি। কোথা থেকে আগুন লেগেছে, এমন কোনও উৎসও আমরা পাইনি। যেহেতু ডা. সাবিরাকে স্টেপ করা হয়েছে, আঘাতজনিত কারণে তার মৃত্যু হয়েছে। এদিকে রমনা বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার শাহেনশাহ বলেন, ডা. সাবিরা হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ফ্ল্যাটের সাবলেটের বাসিন্দা কানিজ সুবর্ণা, তার এক বন্ধু ও বাসার দারোয়ান রমজানকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। তাদের থেকে হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। তবে তদন্তের খাতিরে এখনই তা বলা যাচ্ছে না বলে মন্তব্য করেন তিনি।
 কে হত্যা করলো ডাক্তার কাজী সাবিরা রহমানকে এই প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। পুলিশ খুনীদের খুজে বের করতে মাঠে নেমেছে। গত ৩১ মে সোমবার রাজধানীর কলাবাগানের ৫০/১ নম্বর বাড়ির ফ্ল্যাট থেকে  ডাক্তার  কাজী সাবিরা রহমানের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গ্রিন লাইফ হাসপাতালের রেডিওলোজি বিভাগের চিকিৎসক ছিলেন। নিহতের পিঠে দু’টি ও গলায় একটি ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। গত ৩১ মে সোমবার দুপুরে সাবিরার লাশ উদ্ধারের ঘটনাটি তদন্ত করতে যায় মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ।  এ সময় ডিবি পুলিশের রমনা বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) আজিমুল হক বলেন, ডা. সাবিরা ৫০/১ নম্বর বাড়ির একটি ফ্ল্যাটে ভাড়া থাকতেন। তিনি ফ্ল্যাটের দু’টি রুম অন্য একজনকে সাবলেট দিয়েছেন। সকালে সাবলেটে থাকা তরুণী কানিজ ফাতেমা হাঁটতে বের হয়েছিলেন। পরে ঘরে ফিরে দেখেন চিকিৎসক সাবিরার রুম বন্ধ। রুমের ভেতর থেকে ধোয়া বের হচ্ছে। এ সময় তিনি দারোয়ানকে ডেকে তারা চাবি এনে তালা খুলে দেখতে পান চিকিৎসক নিচে পড়ে আছেন। সবাই ভেবেছিল চিকিৎসক আগুনে পুড়েছে। পরে ডিবি এসে তার গলায় একটি ও পিঠে দু’টি আঘাতের চিহ্ন পায়। তদন্ত করছি। আশা করছি দ্রুত রহস্য উদঘাটন করবো। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে এটি হত্যাকাণ্ড।
তিনি আরও বলেন, চিকিৎসক নিহতের ঘটনায় এখন পর্যন্ত জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিনজনকে হেফাজতে নিয়েছে মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। বিস্তারিত তদন্তের পরই বলা যাবে।
রাজধানীর কলাবাগানে চিকিৎসক সাবিরা রহমান লিপির (৪৭) হত্যার বিষয়টি নিয়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। সিআইডি জানিয়েছে, আগুনে দগ্ধ হয়ে নয়, চিকিৎসককে হত্যা করা হয়েছে। সাবিরাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাতের পর বিছানার তোশকে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। তবে দাহ্য পদার্থ না থাকায় আগুন তেমন ছড়াতে পারেনি। খবর পেয়ে সোমবার ঘটনা¯’লে যায় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) ক্রাইম সিন ইউনিট।  তারা দগ্ধ লাশ উদ্ধার করে।  ক্রাইম সিন জানায়, দাহ্য পদার্থ না থাকায় আগুন তেমন ছড়াতে পারেনি। তবে, সাবিরার শরীরের কিছু অংশ দগ্ধ হয়। সিআইডির ক্রাইম সিন ইউনিটের পরিদর্শক শেখ রাসেল কবির গণমাধ্যমকে বলেন, ধারালো অস্ত্র দিয়ে সাবিরার শ্বাসনালী কেটে ফেলা হয়েছে। তার দেহে রক্ত ও পোড়ার ক্ষত আছে। তবে আমরা নিশ্চিত হয়েছি যে, এটি হত্যাকাণ্ড। আলামত দেখে মনে হয়েছে, মধ্যরাতের যেকোনো সময় হত্যাকাণ্ডটি সংঘটিত হয়েছে। শামসুদ্দীন আজাদ সাবিরার দ্বিতীয় স্বামী। তার আগের স্বামী সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান।  তিনি চিকিৎসক ছিলেন। দুই ছেলে-মেয়ের মধ্যে ছেলে আগের স্বামীর ঘরের। সাবিরার মামাতো ভাই জানান, সাবিরার এক ছেলে, এক মেয়ে। ছেলে বড় মেয়ে ছোট। ছেলে বিবিএ পড়ে, মেয়ের বয়স ১০ বছর। ওনার স্বামী আবুল কালাম আজাদ এখানে থাকেন না। মনোমালিন্যের কারণে এক বছর ধরে আলাদা থাকেন সাবিরা-আজাদ। তবে ওনাদের ভেতরে যোগাযোগ ছিল এবং ভালো সম্পর্ক ছিল। সাবিরার স্বামী সামসুদ্দীন আজাদ বলেন, আমি সকাল ১১টার দিকে খবর পেয়ে এখানে আসি। পুলিশ প্রথমে ভেতরে ঢুকতে দেয় নাই। পরে ভেতরে ঢুকে দেখি রক্তাক্ত লাশ। আমি কাউকে সন্দেহ করতে পারছি না। পুলিশের তদন্তের মাধ্যমে আমি এর সঠিক বিচার চাই। ডা. সাবিরা কলাবাগানের ৫০/১ নম্বর বাড়ির একটি ফ্ল্যাটে ভাড়া থাকতেন।  তিনি গ্রিন লাইফ হাসপাতালের রেডিওলোজি বিভাগের চিকিৎসক ছিলেন। ওই বাড়ির একটি ফ্ল্যাট থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়।  নিহতের পিঠে দু’টি ও গলায় একটি ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। তিনি ফ্ল্যাটের দু’টি র“ম অন্য একজনকে সাবলেট দিয়েছেন। ডিবি পুলিশের রমনা বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) আজিমুল হক বলেন, চিকিৎসক নিহতের ঘটনায় এখন পর্যন্ত জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিনজনকে হেফাজতে নিয়েছে মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। বিস্তারিত তদন্তের পরই বলা যাবে।