logo
আপডেট : ৭ নভেম্বর, ২০২১ ১১:১২
অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন হেফাজতে ইসলামের আমির
নিজস্ব প্রতিবেদক

অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন হেফাজতে ইসলামের আমির

অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন হেফাজতে ইসলামের আমির আল্লামা মুহিবুল্লাহ বাবুনগরী।
গতকাল ৬ নভেম্বর শনিবার তাকে চট্টগ্রাম নগরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হেফাজতের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা মীর ইদ্রিস। তিনি বলেন, ‘অসুস্থতাবোধ করায়  শনিবার হুজুরকে ডাক্তার দেখানো হয়। পরে ডাক্তারের পরামর্শে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। তার শরীর বেশ দুর্বল রয়েছে। তিনি চিকিৎসকের পর্যবেক্ষণে রয়েছেন।’
গত ২৯ আগস্ট হেফাজতের খাস ও কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠক শেষে আমির হিসেবে মুহিবুল্লাহর নাম আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হয়। এর আগে ১৯ আগস্ট আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরীর মৃত্যুর দিন তাকে ভারপ্রাপ্ত আমিরের দায়িত্ব দেওয়া হয়। মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী জন্ম: ১৯৩৪ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি। তিনি একজন বাংলাদেশি দেওবন্দি ইসলামি পন্ডিত, রাজনীতিবিদ ও শিক্ষাবিদ। আল জামিয়াতুল ইসলামিয়া আজিজুল উলুম বাবুনগরের মহাপরিচালক। এছাড়াও তিনি ইসলামী ঐক্যজোট, বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশ ও আল হাইআতুল উলয়া লিল জামিআতিল কওমিয়া বাংলাদেশের নেতৃস্থানীয় পদে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। তিনি বাংলাদেশে দেওবন্দ আন্দোলনের অন্যতম পথপ্রদর্শক হিসেবে বিবেচিত হন।

মুহিব্বুল্লাহ ১৯৩৪ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রাম জেলার ফটিকছড়ির দৌলতপুর ইউনিয়নের বাবুনগর গ্রামের এক আলেম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা হারুন বাবুনগরী বাবুনগর মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা এবং মাতা উম্মে ছালমা।  ভাইবোনের মধ্যে তিনি সবার বড়।
তার বাবার  প্রতিষ্ঠিত আল জামিয়াতুল ইসলামিয়া আজিজুল উলুম বাবুনগরে তার প্রাথমিক শিক্ষার হাতেখড়ি হয়। এই মাদ্রাসায় ৮ বছর লেখাপড়া করার পর ১৯৪৯ সালে তিনি আল জামিয়াতুল আহলিয়া দারুল উলুম মুঈনুল ইসলাম হাটহাজারী মাদ্রাসায় ভর্তি হন। হাটহাজারী মাদ্রাসায় ২ বছর লেখাপড়া করে উচ্চশিক্ষা লাভের উদ্দেশ্যে ১৯৫২ সালে তিনি ভারতের দারুল উলুম দেওবন্দ চলে যান। ১৯৫৯ সালে দেওবন্দ মাদ্রাসায় দাওরায়ে হাদিস (স্নাতক) সম্পন্ন করে আরও এক বছর উচ্চতর হাদিস শাস্ত্র অধ্যয়ন করেন।

তার উল্লেখযোগ্য শিক্ষকদের মধ্যে হুসাইন আহমদ মাদানি অন্যতম। তিনি দেওবন্দ গমনের ৩ বছর পর মাদানি মৃত্যুবরণ করেন। মাদানির নিকট তিনি হেদায়ার ২য় খণ্ডটি পড়েছেন। এছাড়া তিনি সৈয়দ ফখরুদ্দিন আহমদের কাছে সহীহ বুখারী, ইব্রাহিম বলিয়াভির কাছে সহীহ মুসলিম ও সুনান আত-তিরমিজী, ফখরুল হাসান মুরাদাবাদীর কাছে সুনানে আবু দাউদ, জহির আহমদের কাছে তহাবী শরীফ এবং বশির আহমদের নিকট মুয়াত্তা মুহাম্মদ পড়েছেন।
১৯৬০ সালে দারুল উলুম দেওবন্দ থেকে দেশে ফিরে তিনি পিতার পরিচালিত আল জামিয়াতুল ইসলামিয়া আজিজুল উলুম বাবুনগরে শিক্ষকতার মাধ্যমে কর্মজীবনের সূচনা করেন। ১৯৮৬ সালে পিতার মৃত্যুর পর তিনি অত্র মাদ্রাসার মহাপরিচালক নিযুক্ত হন।
হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে তিনি নায়েবে আমীর ছিলেন। ২০২০ সালের ১৫ নভেম্বর তিনি সংগঠনটির প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচিত হন। ২০২১ সালের ১৯ আগস্ট জুনায়েদ বাবুনগরীর মৃত্যুর পর তিনি সংগঠনটির আমীর নির্বাচিত হন।