logo
আপডেট : ১৮ অক্টোবর, ২০২৩ ১১:৩১
সংসদ নির্বাচন শেষে নির্বাচনী এলাকায় ১৫ দিন পুলিশ রাখার চিন্তা
নিজস্ব প্রতিবেদক

সংসদ নির্বাচন শেষে নির্বাচনী এলাকায় ১৫ দিন পুলিশ রাখার চিন্তা

জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর ১৫ দিন পর্যন্ত নির্বাচনে দায়িত্বে রাখার চিন্তা ভাবনা করছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। সাধারণত ভোট গ্রহণ শেষ হওয়ার পরও এক বা দুই দিন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা নির্বাচনী দায়িত্বে নিয়োজিত থাকেন। জানা গেছে নির্বাচন–পরবর্তী সহিংসতার আশঙ্কা থেকেই এমন পরিকল্পনা করছে ইসি।।
সাধারণত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার কাজে পুলিশ, র‍্যাব, বিজিবি, কোস্টগার্ড, আনসার বাহিনী নিয়োজিত থাকে। এ ছাড়া নির্বাচনের সময় ‘স্ট্রাইকিং ফোর্স’ হিসেবে কাজ করে সশস্ত্র বাহিনী। পুলিশ ভোটের আগে দুই দিন ও পরে দুই দিন পর্যন্ত মোট চার দিন দায়িত্ব পালন করে। আনসার সদস্যরা ভোটের আগে–পরে মিলিয়ে দায়িত্ব পালন করেন মোট পাঁচ দিন। অন্যান্য বাহিনীর সদস্যরাও তিন থেকে চার দিন নির্বাচনী দায়িত্বে থাকেন।

ইসি সূত্র জানায়, এবারও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মূল দায়িত্ব পালন করবে নির্বাচনের আগের দুই দিন, নির্বাচনের দিন ও নির্বাচনের পরের দুই দিন। তবে নির্বাচনী এলাকার শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখার স্বার্থে নির্বাচনের পরবর্তী ১৫ দিন পর্যন্ত নির্বাচনী এলাকায় যাতে তারা দায়িত্ব পালন করে, সে জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ বিষয়ে পুলিশ ও প্রশাসনকে ইসি থেকে সময়মতো নির্দেশনা দেওয়া হবে। ভোটের পরবর্তী ১৫ দিন পর্যন্ত নির্বাচন কমিশন আইনশৃঙ্খলার বিষয়টি তদারকিতে রাখবে। তবে সব জায়গায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের নিয়োজিত রাখা হবে, তা নয়। যেখানে পরিস্থিতি অবনতি হওয়ার আশঙ্কা থাকবে, সেখানে এ বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
লম্বা সময় রেখে তফসিল ঘোষণা করতে চায় নির্বাচন কমিশন
আগামী ডিসেম্বরের শেষে বা জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোট গ্রহণ করার কথা বলে আসছে ইসি। সংসদের ৩০০ আসনে ভোটকেন্দ্র হবে ৪২ হাজারের কিছু বেশি। গত নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত বিভিন্ন বাহিনীর ছয় লাখের বেশি সদস্য দায়িত্ব পালন করেন। ‘স্ট্রাইকিং ফোর্স’ হিসেবে ছিল সশস্ত্র বাহিনী। আগামী নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় গত নির্বাচনের চেয়েও অনেক বেশি সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন বলে ইসি সূত্র জানায়। এর অন্যতম কারণ, গত নির্বাচনের চেয়ে ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা আগামী নির্বাচনে বেশি থাকবে।

জাতীয় নির্বাচনের তফসিল কবে ঘোষণা করা হবে, তা চূড়ান্ত করা হয়নি। তফসিল ঘোষণার কত দিনের মধ্যে কোন কাজটি করা হবে, তা ঠিক করা হয়েছে। ইসির কর্মপরিকল্পনা অনুযায়ী, ৩১ অক্টোবর থেকে নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে ভোট গ্রহণ কর্মকর্তাদের যাঁরা প্রশিক্ষণ দেবেন, সেসব প্রশিক্ষকের প্রশিক্ষণ কর্মসূচি হবে। নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে অনলাইনে মনোনয়নপত্র দাখিলের সফটওয়্যারের কাজ শেষ করা হবে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি শান্তিপূর্ণ রাখতে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরদিন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগের আদেশ জারি করা হবে। মনোনয়নপত্র দাখিল (বিশেষ করে মনোনয়নপত্র দখিলের শেষ সময়ের আগের দুই দিন) ও মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের সময় প্রার্থীদের মহড়া (শোডাউন), প্রার্থীদের আচরণবিধি ভঙ্গের মতো বিষয়গুলো মূলত দেখভাল করবেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা।

প্রার্থিতা প্রত্যাহারের সময় শেষ হওয়ার পর বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তাদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলাবিষয়ক সভা করবে ইসি। প্রতিটি নির্বাচনের আগেই এ ধরনের সভা করা হয়। সেখানে মূলত আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির একটি মূল্যায়ন করা হয়। ভোটের আগে আগে এ ধরনের আরেকটি সভা করারও পরিকল্পনা আছে ইসির।

নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ প্রথম আলোকে বলেন, বিভিন্ন সংগঠন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে নির্বাচন কমিশনের কাছে তাদের উদ্বেগের কথা জানাচ্ছে। আইনে নির্বাচনের পরবর্তী ১৫ দিন পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য মোতায়েন রাখার সুযোগ আছে। নির্বাচনের সময় পরিস্থিতি বুঝে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।