logo
আপডেট : ১৫ নভেম্বর, ২০২৩ ১০:১১
আ.লীগ-বিএনপি ও পিটার হাসকে নিয়ে যা বললেন কাদের সিদ্দিকী
নিজস্ব প্রতিবেদক

আ.লীগ-বিএনপি ও পিটার হাসকে নিয়ে যা বললেন কাদের সিদ্দিকী

কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বলেছেন, ‘গামছাকে আপনারা ভয় দেখাবেন না, নৌকার কিন্তু এমনিই অসুবিধা। নৌকার নেতা যদি শেখ হাসিনা না হয়ে অন্য কেউ হতেন তাহলে নৌকা আমি ডুবিয়ে দিতাম। কাজের সময় নাই, লাফাবার সময় আছে। মুক্তিযুদ্ধের সময় কোথায় ছিলেন আপনারা (চেংড়ারা)? সম্মান করবেন, আমি ভাইসা আসিনি। মুক্তিযুদ্ধ করে বঙ্গবন্ধুকে পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্ত করে এনেছি, আমি সেই মানুষ। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর যখন গুম করা হয় সেদনিও ঘরবাড়ি ছেড়ে এক কাপড়ে প্রতিবাদে বেরিয়েছিলাম।’

মঙ্গলবার (১৪ নভেম্বর) সন্ধ্যায় গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার মাওনা গ্রামে (পিয়ার আলী কলেজ সংলগ্ন মাঠে) কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের আয়োজনে ১৩ নভেম্বর দলের শ্রীপুর উপজেলা শাখার কর্মীসভা বানচালের প্রতিবাদে আয়োজিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

কাদের সিদ্দিকী বলেন, ‘১৬ বছর দেশে ফিরি নাই, ঘরে ফিরি নাই, প্রতিবাদ চালিয়ে গেছি। সেই ফল হিসেবে আজকে কিন্তু আপনারা নৌকা মার্কা এবং সরকারে। যে সময় আপনারা নৌকা মার্কা এবং সরকারে যান সে সময় যে ১০টা মানুষ লাখের ওপর ভোট পাইছিল এর মধ্যে আমিও একজন। আমার সঙ্গে এক সময় আওয়ামী লীগের মিলে নাই, তারা চাকরি দিতে চাইছিল দেই নাই, পাটের দাম দেওয়ার কথা ছিল দেয় নাই, সারের দাম কমাইতে চাইছিল কমায় নাই। সেই জন্য আমি আওয়ামী লীগ ছেড়ে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ (গামছার) দল বানাইছি। আজকে দেশে পানি নাই, নৌকা চলে না। বাদামের নৌকাও নাই, বৈঠার নৌকাও নাই। দুই চারটা যা আছে সেটা ইঞ্জিনের, সেটারে নৌকা বলে না, ট্রলার বলে। আমি সেই জন্যে একটা গামছা নিছি।’

তিনি বলেন, ‘স্বাধীনতার পর দুষ্ট লোকেরা, ঘুষখোরেরা, দুর্নীতিবাজরা দেশটাকে যে নোংরা করেছে আমরা গামছা দিয়ে ঘষে ঘষে পরিষ্কার করতে চাই, ঝকঝকে করতে চাই। আমি দুর্নীতিবাজ, অন্যায়কারী এবং ঘুষখোরদের গলায় গামছা বেঁধে বিচার করতে চাই। চোর নিয়ে রাজনীতি করে কোনও শান্তি নাই। বঙ্গবন্ধু একসময় বলেছিলেন সবাই সোনার খনি পাই, আমি পাইছি চোরের খনি।’

বিএনপির উদ্দেশে কাদের সিদ্দিকী বলেন, ‘আপনারা আন্দোলন করছেন করেন, কে না করছে, গাড়ি পুইড়েন না, লাভ হবে না। ২৮ তারিখের পর আপনারা যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন আট বছরেও এই ক্ষতি পোষাতে পারবেন না। ধানের শীষে মুসলমানরা ভোট দেবে? আমি তো মনে করি না। যে মুসলিম হত্যাকারী তার পক্ষে বিএনপি।’

আওয়ামী লীগ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘ভোটকেন্দ্রে যদি ভোটার না যায় তাহলে আপনার কোনও উপায় নাই। এবার ভোটে কে আসলো না আসলো এটা বড় কথা না। যথেষ্ট বদনাম হয়েছে। যদি ভোটাররা ভোট দিতে যায় এবং ভোট দিতে পারে তাহলে আপনার এ সমস্ত বদনাম ঘুচে সুনামের সৃষ্টি হবে।’

তিনি বলেন, ‘সেদিনও একটা ইলেকশন করছেন আপনি। এক ব্যক্তি ৪৩ সেকেন্ডে ৫৭টি ভোট দিছে। সবার আগে আওয়ামী লীগ থেকে চোরগুলোকে বিদায় করে দেন। দেখবেন যিনি ভোটে জিতবেন তিনি অন্তত আপনাকে নেতা মানবেন, কমপক্ষে আমি তো মানবো। এরকম চোর নিয়া আপনি দেশ চালাতে পারবেন না। চোর নিয়ে রাজনীতি করে কোনও শান্তি নাই।’

আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের উদ্দেশে কাদের সিদ্দিকী বলেন, ‘আপনি বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট না। আপনার রাষ্ট্রদূতকে এতো দৌড়াদৌড়ি করতে দিচ্ছেন কেন? ওনার বাংলাদেশে কাজ কী। আমেরিকা বলছে বাংলাদেশের সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে তারা আছে। এককভাবে কোনও দলের পক্ষে না। তাহলে আপনারা আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টিকে দাওয়াত করছেন, আমরা কী ভাসা পানা (কচুরিপানা)। আপনার গলায় কিন্তু পয়লা গামছা দেওয়ার দরকার পড়বে মিস্টার পিটার (পিটার হাস) সাহেব। আপনি সবকটি দলের সঙ্গে কাজ সারেন, আপনার কী কাজ? ভোট দেবে বাংলাদেশের মানুষ।’

শ্রীপুর উপজেলা কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের আহ্বায়ক আব্দুল হামিদের সভাপতিত্বে প্রতিবাদ সভায় প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক শফিকুল ইসলাম দেলোয়ার।