রাজশাহী: রাজশাহী-১ ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনের জন্য মনোনয়নপত্র তুলেছিলেন বাংলা সিনেমার নায়িকা মাহিয়া মাহি। কিন্তু তিনি আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাননি। তাই স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করতে চান তিনি।স্বতন্ত্র তালিকায় রয়েছে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের স্ত্রী আয়েশা আখতার ডালিয়া, তানোরের মুণ্ডুমালা পৌরসভার সাবেক মেয়র গোলাম রাব্বানী, রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের নেতা ও গত জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নির্বাচনের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী আখতারুজ্জামান আক্তারের নামও।
আজ সোমবার (২৭ নভেম্বর) দুপুরে রাজশাহী-১ (তানোর-গোদাগাড়ী) আসন থেকে নির্বাচনের জন্য তানোর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে মনোনয়ন ফরম তুলেছেন মাহি। জাতীয় পরিচয়পত্রের (এনআইডি) নামানুসারে ফরমে তার নাম লেখা হয়েছে- শারমিন আক্তার নিপা।
বিষয়টি জানতে রাজশাহীর স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীরা মাহির সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তিনি মনোনয়ন ফরম তোলার বিষয়টি নিশ্চিতও করেন। সংশ্লিষ্ট কাজের জন্য তিনি ঢাকায় ফিরছেন বলেও জানান।
ঢাকাই সিনেমার এ নায়িকার গ্রামের বাড়ি ভারত সীমান্ত ঘেঁষা রাজশাহী বিভাগের সব শেষ জেলা চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল উপজেলায়। নাচোল, ভোলাহাট ও গোমস্তাপুর উপজেলা নিয়ে গঠিত হয়েছে চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ সংসদীয় আসন।
মাহির নানার বাড়ি আবার তানোর উপজেলায়। তানোর ও গোদাগাড়ী উপজেলা নিয়ে রাজশাহী-১ সংসদীয় আসন।
নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রায় দুই বছরের বেশি সময় ধরে রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জে গণসংযোগ চালিয়ে আসছিলেন মাহিয়া মাহি। নৌকার মনোনয়নও কেনেন, তবে দুই আসনেই আওয়ামী লীগের হেভিওয়েট নেতা থাকায় বাদ পড়েন তিনি।
তিনি এখন যে আসন থেকে নির্বাচন করতে চাচ্ছেন, সেখানে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন তিনবারের সংসদ সদস্য ওমর ফারুক চৌধুরী। তিনি এক সময় শিল্প প্রতিমন্ত্রীও ছিলেন।
স্বতন্ত্র হিসেবে দাঁড়ালেও মাহির প্রত্যাশা, জনগণ তাকে ভোট দেবেন। মাহি বলেন, আমি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করলে এলাকার মানুষ আমার পক্ষে থাকবেন। আমাকেই নির্বাচিত করবেন।
রাজশাহী-১ (তানোর-গোদাগাড়ী) আসনে নৌকার ওমর ফারুক চৌধুরীর পাশাপাশি নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের স্ত্রী আয়েশা আখতার ডালিয়া। দলের অনুমতি সাপেক্ষে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে তিনি নির্বাচন করবেন বলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। এ ছাড়া তানোরের মুণ্ডুমালা পৌরসভার সাবেক মেয়র গোলাম রাব্বানীও এককভাবে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের নেতা ও গত জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নির্বাচনের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী আখতারুজ্জামান আক্তারও স্বতন্ত্র নির্বাচন করবেন।
আওয়ামী লীগ ছাড়া এ আসনের নির্বাচনে দাঁড়াতে মনোনয়ন নিয়েছেন নতুনভাবে নিবন্ধন পাওয়া রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের (বিএনএম) নেতা শামসুজ্জোহা বাবু। তিনি দলের গোদাগাড়ী উপজেলা সভাপতি।
আওয়ামী লীগ কর্তৃক সরাসরি মনোনীত ওমর ফারুক চৌধুরী রাজশাহী-১ আসনে শক্তিশালী। তবে, নতুন যারা এই আসনে নির্বাচন করতে চান তারাও কোনো না কোনোভাবে এলাকায় পরিচিত। ফলে ওমর ফারুক চৌধুরীকে তার দলের বিদ্রোহী প্রার্থীদের পাশাপাশি অন্য দলের প্রার্থীকেও শক্ত হাতে মোকাবিলা করতে হবে বলে মনে করছেন ভোটাররা।