logo
আপডেট : ৭ ডিসেম্বর, ২০২৩ ১৭:২১
শাহজাহান ওমর শান্তির পক্ষে, তাই জামিন পেয়েছেন: কৃষিমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদক

শাহজাহান ওমর শান্তির পক্ষে, তাই জামিন পেয়েছেন: কৃষিমন্ত্রী

শাহজাহান ওমর শান্তির পক্ষে সহযোগিতা করছেন, কাজেই তিনি জামিন পেয়েছেন—এমন মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক। একই সঙ্গে তিনি বলেন, বিএনপি নির্বাচনে না এলে আমাদের কিছু করার নেই, তাদের তো জোর করে নির্বাচনে আনতে পারি না। কৃষিমন্ত্রী বলেন, আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জ হলো, বেশির ভাগ মানুষের অংশগ্রহণের মাধ্যমে একটি সুন্দর সুষ্ঠু নির্বাচন করা।

বৃহস্পতিবার (০৭ ডিসেম্বর) কৃষি মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে কৃষিকে উন্নত করতে এবং দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা বাড়াতে বাংলাদেশ ও আর্জেন্টিনার মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষর শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন কৃষিমন্ত্রী। এ সময় কৃষিসচিব ওয়াহিদা আক্তারসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

আপনারা বলেন বিচার বিভাগ স্বাধীন। বিএনপির অন্য নেতারা যখন কারাগারে তখন শাহজাহান ওমর আওয়ামী লীগে যোগ দিয়ে নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করছেন। বিচার বিভাগ স্বাধীন হয় কীভাবে—এমন প্রশ্নের জবাবে ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, যারা সহিংসতায় জড়িত, তারা গ্রেপ্তার হয়েছেন। সহিংসতা তো একজন কর্মী করেন, সে জন্য নির্দেশ দিতে হয়। ফখরুল ইসলাম আলমগীর তো আর বিচারপতির বাসায় হামলা করেননি, তিনি নির্দেশ দিয়েছেন। যিনি নির্দেশ দিয়েছেন, তাকে কারাগারে থাকতে হবে। এটা না করলে দেশে আরও বেশি সন্ত্রাস হতো। কাজেই সন্ত্রাস ও সহিংসতার হুকুমদাতাদের গ্রেপ্তার না করলে এগুলো কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করব? শাহজাহান ওমর শান্তির পক্ষে সহযোগিতা করছেন। কাজেই তিনি জামিন পেয়েছেন।

শাহজাহান ওমর কেন আওয়ামী লীগ থেকে নির্বাচন করছেন জানতে চাইলে কৃষিমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগের দরজা তো বন্ধ না। ১৯৭০ সালেও আমরা মুসলিম লীগের অনেক লোককে দলে নিয়েছি। মানুষ তার মতাদর্শ পরিবর্তন করেন, এটা সারা পৃথিবীতেই হয়। যুক্তরাজ্যে চার্চিলের মতো নেতাও দল পরিবর্তন করেছেন।

আওয়ামী লীগ কি ৩০০ আসনে একাই লাড়বে, নাকি জাতীয় পার্টিকে সঙ্গে নেবে—এমন প্রশ্নের জবাবে আব্দুর রাজ্জাক বলেন, জাতীয় পার্টির সঙ্গে আমাদের আলোচনা চলছে। আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা ঘনিষ্ঠভাবে নির্দেশনা দিচ্ছেন। কাজেই এ বিষয়ে আমার কোনো মন্তব্য করা ঠিক হবে না। তবে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি। আমরা চাচ্ছি, সংসদে একটি বিশ্বাসযোগ্য বিরোধী দল থাকবে। তারপর আমরা কিছুটা উন্মুক্ত করে দিয়েছি। আমাদের অনেক সম্ভাবনাময়ী স্বতন্ত্র প্রার্থী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন। তাদের মধ্যে যারা পাস করে আসবেন, তারাও সংসদে ভূমিকা রাখবেন। বাংলাদেশে সবার অংশগ্রহণে একটি প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচন হতে যাচ্ছে।

নিজেরা নিজেরা কীভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়—এমন প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, আমরা চাই সংসদে যোগ্য, নিবেদিত, অঙ্গীকারবদ্ধ কাউকে। যদি জনগণ ভোট দেয়, আমরা নৌকার প্রার্থী দিয়েছি, ভোট দিল না, এটা তো ভোটারদের পছন্দ। তারাই ঠিক করে দিল।

বিএনপি যেখানে নির্বাচনে আসছে না, সেখানে আপনারা কি ভোটাদের অংশগ্রহণ পাবেন, জানতে চাইলে আব্দুর রাজ্জাক বলেন, কেন পাবে না? দুইজন যদি প্রার্থী হয়? আমাদের কাছে তথ্য আছে, আমাদের অনেক স্বতন্ত্র ও বিদ্রোহী প্রার্থী প্রতিযোগিতায় আছে। তারা অনেক সম্ভাবনাময়ী। কাজেই আমাদের নৌকার প্রার্থীরাও নিজেদের প্রমাণ করে সংসদে আসুক যে, তারা মানুষের জন্য ভালো কাজ করেছে, নিবেদিত ছিল।

৭ জানুয়ারির নির্বাচনে আওয়ামী লীগের জন্য চ্যালেঞ্জ কী, জানতে চাইলে কৃষিমন্ত্রী বলেন, আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জ হলো, বেশির ভাগ মানুষের অংশগ্রহণের মাধ্যমে একটি সুন্দর সুষ্ঠু নির্বাচন করা। এটি অস্বীকার করলে চলবে না যে, বিএনপি একটি বৃহৎ রাজনৈতিক দল, তারা এলে নির্বাচন আরও গ্রহণযোগ্য হবে। কিন্তু তারা না এলে আমরা কী করব? আমরা তো চেষ্টা করেছি, তাদের আনার জন্য। জাপানে ছোট্ট বিরোধী দল, কিন্তু বিরোধীদল তো আছে। বিএনপি নির্বাচনে না এলে আমাদের তো কিছু করার নেই। তাদের তো জোর করে নির্বাচনে আনতে পারি না।

এখন যারা প্রার্থী হচ্ছেন, ক্ষমতাসীন দলের প্রতীক নেওয়াই তাদের মূল উদ্দেশ্য—এ বিষয়ে মতামত জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর এই সদস্য বলেন, ১৭ তারিখ পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। তারপর এ ব্যাপারে আমরা মন্তব্য করব।

হরতাল-অবরোধের পরেও কীভাবে শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হবে, জানতে চাইলে তিনি বলেন, আসলে সহিংসতার মাত্রা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে। রাজনৈতিক দল হিসেবে আমরাও চেষ্টা করছি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সক্ষমতা অনেক বেশি, তারা অনেক বেশি সুশৃঙ্খলা ও বড়। ২০১৪ ও ২০১৫ সালে যে সহিংসতা হয়েছে, তার তুলনায় এখন অনেক কম। আমরা বিশ্বাস করি, আরও কয়েকদিন পর এটা স্বাভাবিক হয়ে যাবে।