নির্বাচন ঠেকানোর আন্দোলনের নামে হামলা হলে ছাড় দেওয়া হবে না জানিয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, হামলা করলে মামলা হবে, সাজা হবে, ছাড়াছাড়ি নেই। সোমবার (১১ ডিসেম্বর) বিকেলে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের সঙ্গে যৌথসভায় তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, পুলিশ মারবেন, আর এটি বিনা বিচারে থেকে যাবে? এ ঘটনা যারা ঘটিয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে মামলা হবে না? হামলা আমরা করি না, হামলা করে তারা (বিএনপি)। আর হামলা হলে মামলা হবেই। ছাড়াছাড়ি নেই।
তিনি বলেন, কোনো রাজনৈতিক দল যদি নির্বাচনে না আসে, তাহলে তো জোর করে আর নির্বাচনে আনা যায় না। পৃথিবীর কোথায় আছে যে ইনকামবেন্ট সরকার হঠাৎ ত্যাগ করে নির্বাচন দেয়? আমাদের দেশে কেন হবে? তারা শেখ হাসিনার পদত্যাগ চায়। তারা মৃত তত্ত্বাবধায়ক সরকার চায়।
কাদের বলেন, সারা বিশ্বে যে পদ্ধতিতে নির্বাচন হয়, এখানেও সেই একই পদ্ধতিতে নির্বাচন হচ্ছে। ২০০৯ সালের পরে শেখ হাসিনা নির্বাচন কমিশনকে স্বাধীন করেছেন। এখন যদি তারা নির্বাচনে না আসে, তাহলে আমরা কি করতে পারি?
এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, নির্বাচন উপলক্ষে দলে দলে বৈঠক করব! এখন কি জনসভা ডাক দিয়ে আমরা এগুলো করব? আলোচনার জন্য একটি পরিবেশ লাগে। এসব আলোচনা খুবই গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা। এটি তো জনসভা ডেকে হবে না, গণমাধ্যম ডেকে হবে না। আলোচনা এভাবেই হয়, অতীতেও হয়েছে। আলোচনা হয়েছে, ১৪ দল হয়েছে, মহাজোট হয়েছে এবং আসন সমঝোতাও হয়েছে। প্রক্রিয়াটা এমনই। আগামী ১৭ তারিখের মধ্যে সব সমাধান হয়ে যাবে। এটা তো আর ঢাকঢোল পিটিয়ে হবে না।
লোক দেখানো নির্বাচন- বিএনপির এমন বক্তব্যের জবাবে তিনি বলেন, যারা এদেশের সংবিধান মানে না, আইনের শাসন মানে না। তারা এ ধরনের কথা বলবেই। এ নিয়ে আমাদের মাথাব্যথা নেই।
নেতাকর্মীদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমাদের নেতাদের অনেকেই ইলেকশনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন, ব্যস্ত হয়ে যাবেন। তারপরও যারা এ সিটিতে আছেন, শৃঙ্খলা মেনে, আচরণবিধি মেনে দায়িত্ব পালন করবেন। সঙ্গে সঙ্গে সতর্ক পাহারায় থাকতে হবে।
তিনি বলেন, নির্বাচনবিরোধী শক্তি বিএনপির নেতৃত্বে যে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে, জনগণকে নিয়ে তাদের প্রতিহত করতে হবে। আমরা সতর্ক থাকব। কারণ, এ নির্বাচন আমাদের সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা রক্ষার নির্বাচন।
কাদের বলেন, বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ, উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির পথে নব নব বিজয়ের জন্য এ নির্বাচন আমাদের অবশ্যই প্রয়োজন। যথাসময়ে পাঁচ বছর পরে নির্বাচন হচ্ছে। এটিই গণতন্ত্রের বিউটি। নির্বাচিত সরকার নির্বাচিত সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করবে।
এ নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি অবশ্যই চোখে পড়ার মতো হবে মন্তব্য করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, দুনিয়ার অন্যান্য গণতান্ত্রিক দেশের তুলনায় আমরা বিশ্বাস করি এবারের টার্ন-আউট অবশ্যই ভালো হবে। স্বতন্ত্র প্রার্থীরা আছে এবং অন্যান্য ২৮টি দল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। আমরা আশা করি, সারা বাংলাদেশে নির্বাচনের যে সুবাতাস শুরু করেছে, এতটা হবে আমরা ভাবতে পারিনি।
নেতাকর্মীদের নির্বাচনী আচরণবিধি মেনে চলার নির্দেশ দিয়ে তিনি বলেন, নির্বাচন নিয়ে আমরা বদনামের ভাগীদার হতে চাই না। এমন একটি নির্বাচন করব, সারাবিশ্ব যার প্রশংসা করবে। সেরকম নির্বাচন করতে চাই। অতীতে অনেক কথা, অনেকেই বলেছে। নির্বাচন গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রা, কোথাও ত্রুটিমুক্ত নয়। আমরা অনেকদূর এগিয়েছি। এবার আরও ভালো একটি নির্বাচন করব, উপহার দেব। এটিই আমাদের শপথ, অঙ্গীকার।