রাশিয়ার বেলগোরদ শহরে ইউক্রেনের গোলাবর্ষণে দুই শিশুসহ অন্তত ১৪ জন নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে মস্কো। রাশিয়ার জরুরি মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা তাস এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
এর আগে শুক্রবার রাতভর ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভসহ বিভিন্ন স্থানে ভয়াবহ ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালায় রুশ বাহিনী। এতে ৩১ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হন এবং আহত হন ১৫০ জনেরও বেশি।
হামলার পর ইউক্রেনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রুস্তেম উমেরভ জানান, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি অভিযান শুরুর পর থেকে এই প্রথম এত বড় মাত্রার ক্ষেপণাস্ত্র-ড্রোন হামলা চালালো রুশ বাহিনী।
ইউক্রেনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, কিয়েভ, লভিভ, ডিনিপ্রো, ওডেসা, খারকিভ, খমেলনিটস্কি এবং অন্যান্য ইউক্রেনীয় অঞ্চলকে লক্ষ্য করে ক্ষেপনাস্ত্র ছুড়েছে রুশ বাহিনী। আঘাতপ্রাপ্ত স্থানগুলির মধ্যে একটি শপিং সেন্টার, অ্যাপার্টমেন্ট বিল্ডিং এবং একটি মেট্রো স্টেশন রয়েছে। একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, শুক্রবারের প্রথম দিকে রুশ ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ডিনিপ্রোর একটি মাতৃসদন হাসপাতালের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
হামলার বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টেলিগ্রামে একটি পোস্ট করেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি।
তিনি বলেন, ‘রাশিয়ার অস্ত্রাগারে যত গোলাবারুদ-ক্ষেপণাস্ত্র ছিল, তার প্রায় সবই উজাড় করে দিয়েছে রুশ বাহিনী। অন্তত ১১০টি ক্ষেপণাস্ত্র এবং অজস্র ড্রোন ছোড়া হয়েছে ইউক্রেনকে লক্ষ্য করে। তবে আমরা অধিকাংশই ধ্বংস করতে সক্ষম হয়েছি। ’
জেলেনস্কি দাবি, ইউক্রেনের ভূখণ্ড লক্ষ্য করে রাতভর ছোড়া বেশিরভাগ মিসাইল ভূপাতিত করেছে তাদের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। এর পরও কিছু মিসাইল লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হেনেছে। এতে অসংখ্য মানুষ আহত হয়েছেন। এছাড়া ধ্বংসস্তূপের নিচে অনেকেই আটকা পড়ে আছেন।
ইউক্রেনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এ ভয়াবহ হামলায় নিহত হয়েছেন ইউক্রেনের বিখ্যাত বাস্কেটবল খেলোয়াড় ভিক্টর কোবজিস্তি ও কোচ আন্তন নিকুলিন। জাপোরিঝিয়াতে ৫৩ বছর বয়সী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক নিহত হয়েছেন।
সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে ইউক্রেনের ছয়টি শহরকে লক্ষ্য করে এ হামলা শুরু করে রাশিয়ার। যা সারারাত ধরেই চলে। যুদ্ধক্ষেত্র থেকে অনেক দূরের লভিভেও পৌঁছেছে রুশ বাহিনীর মিসাইল।
ইউক্রেনের সেনাপ্রধান জেনারেল ভ্যালেরি জালুঝনি জানিয়েছেন, শুক্রবার রাত থেকে ইউক্রেনের সামরিক ও অবকাঠামোগত স্থাপনাগুলো লক্ষ্য করে অনবরত ক্ষেপণাস্ত্র-ড্রোন হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। তবে তাদের বিমান বাহিনীর সেনারা ৮৭টি ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র এবং ২৭টি ড্রোন ধ্বংস করতে সক্ষম হয়েছে।