আপডেট : ১৭ জানুয়ারী, ২০২৪ ১১:১৫
আজকের গল্প
পাপের ভারে পূণ্য সারা
খোকন রায়
নরেন্দ্র রায় দেব গ্রামের মোড়ল। সহজ সরল উদার মন। মোটা মাথা খাটো বুদ্ধি হলেও গ্রামের সবাই তাকে খুব ভালবাসে। গরিবের প্রতি তার ভীষণ মায়া। মানুষের সেবাকেই সে শ্রেষ্ঠ ধর্ম মনে করে। কখনও অর্থ দিয়ে আবার কখনও ধান, চাল তরিতরকারি ইত্যাদি দিয়ে সে প্রতিনিয়ত দরিদ্র অসহায় মানুষকে সহযোগিতা করে থাকে। তাই গ্রামের সকলেই তাকে যথেষ্ট সম্মান এবং মান্য করে।
মোড়লের অনেক জমি। মাঠে যতদূর চোখ যায় সবই তার। ভোজন রসিক নরেন্দ্র রায়ের ইলিশ মাছে মাস ডাল খুবই প্রিয় খাবার। সেজন্যেই প্রতি বছর অনেক জমিতে মাস কলাইয়ের চাষ করে। এবারও তাই । বেশি প্রিয় হওয়ার কারণে এর প্রতি তার দৃষ্টি,নজর আলাদা। ভোর হতেই এই কলাই ক্ষেত দেখতে যাওয়া তার নিত্য কাজ। আজও যায় এবং দেখতে পায়, তার অর্ধেক কলাই ক্ষেত কিসে যেন খেয়ে রেখেছে। দেখেই মোড়লের মাথায় আগুন । প্রচণ্ড রাগে বাড়ি ফিরে। উত্তেজিত কণ্ঠে গ্রামের সবাইকে ডেকে শরীরের রাগ ঝারে। ভালবাসার এই প্রতিদান! সে বিষয়টি দেখে নেবে বলে হুশিয়ার করে। সবাই অবাক হয়ে বলাবলি করে, এই গ্রামে এমন কে আছে শত্রু হয়ে মোড়লের ক্ষতির সাহস দেখাবে! আর কারইবা এমন যুদ্ধের গরু ঘোড়া আছে যে রাতে চুপি চুপি কলাই খাওয়াবে! বিষয়টি সবার কাছেই অন্যরকম খটকা লাগে।
মোড়ল পরদিন আবারও ক্ষেত দেখতে যায়। প্রত্যক্ষ করে আজ আরও বেশি খেয়েছে। তার রাগ গায়ে ধরে না। শরীরে রক্ত দৌড়াতে থাকে। যে মানুষটির এত দরদের শরীর, এত মায়া এত সহযোগিতা তারই এমন সর্বনাশ! তাই বুদ্ধি করে, বেটা চোরকে হাতে নাতে ধরে কঠিন বিচারের মাধ্যমে বুঝিয়ে দেবে, মোড়ল দয়ালু হলেও এতো বোকা না। তাই, ঠান্ডা মাথায় অতি গোপনে রাতের আঁধারে চুপি চুপি ক্ষেতে চলে যায়। সেখানে গিয়ে উঁচু ঘন কলায়ের ফাঁকে চিৎ হয়ে শুয়ে থাকে। রক্তখেকো মশার কামড় আর মৌমাছির শব্দ তাকে অতিষ্ঠ করে তোলে। কানের ছিদ্রে নানারকম পোকা ঢোকার জন্যে বিরবির করে। কলাইয়ের ঘন আঁধারে জোনাকির আলো মিটি মিটি করছে। চারপাশ থেকে ভেসে আসছে ঝিঁ ঝিঁ পোকার একটানা ডাক। পাশ দিয়ে মাঝেমধ্যেই আবছা আবছা কী যেন দৌড়ে যায়। তার ভয়ে গা শির শির করে শরীর কাঁটা দিয়ে উঠছে। তবে এসবই রাগের কাছে হার মানছে। মনে মনে ভাবে যদি চোরটা ধরতে পারি, তখন সবাই বুঝবে মোড়ল কত দুরন্ত চালাক। বিচারের খেলাটাও দেখাবে সেই। এমন সময় শুনতে পায় আকাশে শোঁ শোঁ বিকট শব্দ। সে কিছুই বুঝতে পারছে না। শব্দটি ক্রমেই বৃদ্ধি পেয়ে কাছাকাছি আসছে মনে হয়। সে ভিত শঙ্কিত চোখে একদৃষ্টে তাকিয়ে থাকে। হঠাৎই দেখতে পায় বিশাল দৈত্যের মতো অদ্ভুত কালো কী একটা নিচের দিকে নেমে আসছে। তার বুক ধক্ ধক্ করে ওঠে। শরীর থর থর কেঁপে নিথর হতে চায়। কিছুতেই বুঝতে পারে না এই অদ্ভুত জিনিসটা কী । নিজের গায়ে চিমটি কেঁটে সাহস বাড়িয়ে ভাবে, আমি গ্রামের মোড়ল ভয় পেলে চলবে? মুখে বিড়বিড় করে বলে তুমি যাই হও বাছা, তোমাকে ধরব তারপর...। ততক্ষণে দৈত্যটি কলাই ক্ষেতে নেমে পড়ে। সে কনুইয়ের উপর ভর করে আস্তে আস্তে এগিয়ে যায়।
মোড়ল একটু এগিয়ে গিয়ে দেখতে পায় কুঁচকুঁচে কালো এক বিরাট আকৃতির দৈত্যাকার হাতি। লম্বা শুড় পেঁচিয়ে কলাই খাচ্ছেই তো খাচ্ছেই। রাগের চোটে তার বুকের ভয় দূরে চলে যায়। মনে মনে ভাবে, কার এত বড় দুঃসাহস আমাকে না জানিয়ে হাতি কিনে রাতের আঁধারে এমন সর্বনাশ করছে! আমাকে অবশ্যই জানতে হবে এই বেঈমান, নিষ্ঠুর,ভয়ানক শত্রুটা কে। সে চুপি চুপি হাতির পিছু নেয়। ক্রমেই রাতের শেষ প্রহর ঘনিয়ে আসে। পেট ভরে যেতেই হাতি উড়াল দিতে চায়। সুযোগ বুঝে সেও শক্ত হাতে লেজ ধরে ফেলে। হাতি পক্ষীরাজের মত শন শন গতিতে উড়ে চলে। সে চোখ বন্ধ করে লেজ ধরে রাখে। হাতি চলছে, সে ঝুলছে আর পৃথিবী দুলছে। অনেকক্ষণ পর থেমে যাওয়া আঁচ করতে পেরেই চোখ মেলে। ঝলমল করে ওঠে নানা বর্ণের বাহারী আলো। সে অবাক হয়ে থমকে যায়। ভাবতেই পারছে না কোথায় এলো। যেদিকে তাকায় অপূর্ব আলোর বন্যা। চারিপাশে অসংখ্য ফুলের বাগানে হাজার রকমের ফুল। ঝাঁকে ঝাঁকে রঙিন ভ্রমর বর্ণিল পাখায় ফুলে ফুলে উড়ছে। গাছে গাছে ঝুলছে বাহারী সব ফল। নাকে লাগছে বিভিন্ন ফুল ফলের অপূর্ব মিষ্টি ঘ্রাণ। আম, কাঁঠাল, লিচু, আপেল কমলাসহ আরও কত রকমের পাকা কাঁচা ফল ছোট ছোট গাছে ঝুলে আছে। এক ঋতুতে সব রকম ফলের সমাহার দেখে সে অবাক হচ্ছে। প্রতিটি গাছই যেন গাঢ় সবুজ পাতা আর থরে থরে ফুলে ফলে সাজানো। পেছনে তাকিয়েই দেখতে পায় সুসজ্জিত পরিচ্ছন্ন অপূর্ব সুন্দর ঘর। সোনার পালঙ্ক বর্ণিল আলোতে ঝলমল করছে। সে মাতালের মত চোখ ঘুরিয়ে ক্লান্ত হয়। কোথাও কোন মানুষের অস্তিত্ব নেই।
হঠাৎ একটা গলার আওয়াজ। মধুর স্বরে তাকে বলছে, মোড়ল-নিজস্ব ভাবনা চিন্তায় কোন কিনার পাবি না। স্বর্গ অলৌকিক বৈচিত্র্যময়। তুই বড়ই পূণ্যবান মানুষ। আর সেই শক্তি বলেই অবিশ্বাস্য ভাবে সশরীরে স্বর্গে চলে এসেছিস। আসলে, পৃথিবীতে মানুষের সেবা করাই হচ্ছে সবচেয়ে বড় ধর্ম। এতে অধিক পূণ্য অর্জন করা যায়। প্রকৃত জ্ঞানের অভাবেই মানুষ পৃথিবীতে ক্ষণিক সুখের নেশায় মত্ত থাকে। অর্থের নেশা এমনই নেশা সঠিক সত্যটাকে ভুলিয়ে রাখে। পৃথিবীর কিছুই যে নিজের নয় তা বুঝতেই চায় না। তুই সারাজীবন মানুষের কল্যাণ করেছিস বলেই এত পূণ্য অর্জিত হয়েছে । ভাল মহৎ কাজের মাধ্যমে পূণ্য অর্জন করতে পারলে হাতির লেজ ধরেও স্বর্গে আসা যায়। প্রকৃত সত্য এমনই, জীবনে পূণ্য অর্জন করতে পারলে স্বর্গের সুখ অবধারিত। পূণ্যবানের প্রাপ্তি অবিশ্বাস্য। এর ফল অনন্তকাল সুখের হয়। কর্মেই সৌভাগ্য প্রস্ফুটিত হয়। এটাই প্রকৃত সত্য, বিধাতার বিধান। ভাবনা চিন্তা বাদ দিয়ে সোনার পালঙ্কে আরাম কর।
মোড়ল কাউকে দেখতে না পেয়েও সাহসিকতা নিয়ে এগিয়ে যায়। আনন্দে উদ্বেলিত হয়ে পালঙ্কের উপর বসে পড়ে । কী সুন্দর নরম তুলতুলে বিছানা! সারা ঘরেই সোনার প্রলেপের কারুকাজ। আসবাবপত্রসহ সবকিছুই স্বর্ণখচিত। মিষ্টি ঘ্রাণে যেন পরান জুড়িয়ে যাচ্ছে। এক অদৃশ্য পুলকিত সুখের ছোঁয়ায় নিমেষেই চোখে ঘুম নেমে আসে। সে বিছানায় শরীর এলিয়ে দিতেই শান্তির ঘুম তাকে আদর বুলিয়ে কোলে তুলে নেয়।
মোড়ল প্রশান্তির ঘুম শেষে চোখ মেলেই দেখতে পায়, সোনার থালায় হরেক রকম খাবার সাজানো। পাশে অগণিত রসালো ফল। এত খাবার কে দিল, কেন দিল,কি করবে ভেবে পায় না। এমন সময় আবারও সেই সুরেলা কণ্ঠের আওয়াজ-মোড়ল, স্বর্গে সবকিছুই এমন। পূণ্য আত্নাকে কখনও খাবার চেয়ে নিতে হয় না, পূণ্য শক্তির বলেই সব গায়েবী পেয়ে যায়। এটা স্বর্গের অলৌকিক প্রাপ্তি। এই সবকিছুই তোর পূণ্য আত্মার খাবার, ভাল কাজের ফল। এখন পেট ভরে ইচ্ছে মত খেয়ে নে। সে খেতে আরম্ভ করে। কী অপূর্ব স্বাদের খাবার! রসালো ফলের কী দারুণ স্বাদ! পরাণ ভরে খেয়ে তৃপ্তসিক্ত হয়। ভোজন শেষে তার দৃষ্টি যায় বাহিরের দিকে। মনোমুগ্ধকর চারিপাশ। খুব ইচ্ছে জাগে সবকিছু ঘুরে ফিরে দেখতে। ছোট ছোট গাছে লাল,সবুজ,হলুদ কতো রকম ফল! সোনার গাছে রূপার পাতাগুলো ঝকমক করছে। কি নেই সেখানে! স্বর্গ যে এত সুন্দর, এত সুখের---আহারে--! দুদিনেই তার শরীরের রং বদলে যায়। নিজেকে নিজেই যেন চিনতে পারে না। পালঙ্কে শুয়ে শুয়ে ভাবে, যেহেতু স্বর্গের হাতি আমার কলাইয়ের স্বাদ পেয়েছে, সে অবশ্যই প্রতিদিন নিয়মিত যাচ্ছেই। আমারও একা একা সুখ ভোগে শান্তি লাগছে না। বউকে যদি নিয়ে আসতে পারি তাহলে, দুজন একত্রে সারাজীবন পরম সুখেই কাটিয়ে দেয়া যাবে। সুনিপুণ পরিকল্পনা করে সে হাতির লেজ ধরে ঠিকঠাক নেমে পড়ে।
গভীর রাত। মোড়ল আনন্দে দৌড়ে বাড়ি পৌঁছেই ব্যস্ত কণ্ঠে বউকে ডাক দেয়। বউ তাকে দেখেই হাউমাউ করে কেঁদে উঠে। মোড়ল রাগ হয়ে বলে- রাখো তোমার কান্নার ঢং। মেয়ে মানুষের আছে শুধু কান্না আর অভিমান। আগে আমার কথা শোনো, তারপর...। খবর আছে, দারুণ খবর! যা করতে হবে সব অতি গোপনে। সে স্বর্গের সমস্ত ঘটনা বলতে থাকে। ইয়া বড় আম, কতো রকম পাকা রসালো ফল, কী সুন্দর সোনার পালঙ্ক, নরম তুলতুলে বিছানা, ইয়া বড় সোনার থালায় বাহারী স্বাদের খাবার, আরো যে কতো কী! গল্প শুনে বউয়ের চোখে স্বপ্ন জেগে ওঠে। খুশীতে ডগমগ হয়ে বলে- ওগো, তুমি কি এসব সত্যি বলছো ! স্বর্গে এতই সুখ! তাই তো বলি দুদিনেই তুমি এত সুন্দর হলে কি করে! এদিকে আমি তোমার চিন্তা করে পাগল প্রায়। চল সোনা,তাহলে বিলম্ব না করে কাল রাতেই আমরা স্বর্গে চলে যাই। বড় বড় সুস্বাদু ফল, এত সৌন্দর্য সুখ কখন যে পাবো, আমার আর তর সইছেনা গো! মোড়ল চোখ লাল করে কানে কানে বলে একদম চুপ। এই খবর কাউকেই কিচ্ছু বলা যাবে না। যে পর্যন্ত আমার ক্ষেতে কলাই আছে, হাতি মামা আসবেই। তাই আমাদের স্বর্গে যাওয়া কোন ব্যাপারই না।
গোপন কথা বউয়ের পাকস্থলিতে পাক তুলে বদ হজম হয়,অশান্তি বাড়ায়। সে ভাবে, চলেই যখন যাব প্রিয় বান্ধবী মিনতিকে একটু করে বলে যাই, নয়ত বেঈমানী হবে। তাই ভোর হতেই পাশের বাড়ির প্রিয় মিনতিকে খবরটি বলে অশ্রুসিক্ত হয়ে বিদায় নেয়। মিনতিও এমন তাজা খবরে অবাক হয়। সেও মনে মনে ভাবে, খবরটি মলি দিদিকে এখনই জানানো দরকার। কারণ সেতো আমার খুবই আপন। আর এভাবেই সারা গ্রাম--------।
মজার বিষয়টি মুহূর্তেই সারা গ্রামে ছড়িয়ে পড়ে। সবাই কৌতূহল নিয়ে লম্বা লম্বা পায়ে মোড়লের বাড়িতে আসতে থাকে, ভিড় জমায়। সকলের আবদার একটাই, তুমি আমাদের গ্রামের মোড়ল। তোমাকে আমরা কত ভালবাসি! আমাদের এভাবে ফেলে রেখে স্বর্গে চলে যাবে,সে কেমন কথা! তুমি যেখানেই যাবে আমরাও যাবো। আমাদেরকে নিতেই হবে। শুনেছি, কী সুন্দর ইয়া বড় বড় ফল, ভাল খাবার, আরও কত কী ! দুদিনেই তুমি কত সুন্দর হয়ে গেছো। আমরা যাবই যাবো । মোড়ল কিছুতেই মানাতে পারে না। বউয়ের সাথে প্রচন্ড রাগ ঝেরে অবশেষে নিরুপায় হয়ে সবাইকে নিতে রাজি হয়।
পরিকল্পনা অনুযায়ী পরদিন সন্ধ্যায় সকলেই মোড়লের বাড়িতে এসে হাজির হয়। সংখ্যায় প্রায় তিনশত জনের মতো । মোড়লের নির্দেশে সবাই একে অপরের পা ধরে এক লাইনে শুয়ে পড়ে। একেবারে অগ্রভাগে মোড়ল। সবার মুখেই হাসির ঝিলিক আর ফুল, ফল,পালঙ্কের ফিসফিস গল্প। কখন যাবে আর স্বাদ নিবে সেই প্রতীক্ষা সবার। কখন দেখবে স্বর্গের অলৌকিক সৌন্দর্য। কারো তর সইছে না। রাত গভীর হতেই শো শো শব্দে হাতি নেমে আসে। মোড়ল লক্ষ্য রাখে কখন উড়াল দেবে। পেট ভরে যেতেই হাতি উড়াল দেয়ার প্রস্তুতি নেয়। মোড়ল পূর্ব অভিজ্ঞতার আলোকে শক্ত হাতে লেজ ধরে ফেলে। হাতি উড়াল দেয়। সবাই মালার মত ঝুলে । আজ তার উড়ে যেতে খুব কষ্ট হচ্ছে। লেজের দিকটা বড্ড ভারি লাগছে। আকাশ থেকে মাটি পর্যন্ত এত লম্বা মালা নিয়ে উড়ে যেতে হাফ ছুটে যাচ্ছে, বায়ু বের হচ্ছে। তবুও সে যাচ্ছে। অর্ধেক পথ যেতেই সবাই কথা কাটাকাটি আরম্ভ করে। কেউ বলে তুই ভুল শুনেছিস। তোকে সব বলেনি, আমকে বলেছে কত্ত বড়। আবার কেউ কেউ বলছে, না আরো একটু ছোটো। এভাবে বিতর্ক বাড়তেই থাকে। কেউ কেউ বলছে,বিশ্বাস না হয় মোড়লকে জিজ্ঞেস কর।
এই তর্ক কথা ক্রমশ মোড়ল পর্যন্ত যায়। সে বলে ঐ যে স্বর্গের আলো দেখা যাচ্ছে। একটু ধৈর্য ধারণ করলে নিজ চোখেই সব দেখতে পাবে। কিন্তু না, কেউ মানতেই চাইছে না। সকলে তার বউকে অতিষ্ট করে তোলে। বউ রাগ করে বলতে থাকে-তুমি স্বামী হয়ে আমাকে মিথ্যাবাদী বানালে। সবাই একবাক্যে বলছে আমি মিথ্যাচার করেছি।ওগো,
তুমি নিজের মুখেই একবার শুনিয়ে দাও না, দেখিয়ে দাও না ফলগুলি কেমন বড়। একবার বলে আমাকে একটু স্বস্তি দাও। ওরা যে আমাকে বারবার চিমটি কাটছে। মোড়ল আর সহ্য করতে না পেরে, উত্তেজিত হয়ে দু'হাতে দেখিয়ে দেয়... ইয়া বড়! সাথে সাথেই হাতি পরম শান্তিতে বলতে থাকে- ওরে বাবারে, লেজটা আজ সত্যিই খুব ভারী লাগছিলো । ওহ্! মুহুর্তের মাঝেই কী যে শান্তি পেলাম, বলতে বলতে হাতি স্বর্গের হাতিশালার দিকে চলে যায়।