আপডেট : ১৮ জানুয়ারী, ২০২৪ ১১:১০
আজকের ছড়া/কবিতা
একটি খণ্ডচিত্র
মুঈন হুদা
জীবন কেমন বদলে যায়...
সে খুব আগে নয় ;
আজ থেকে কয়েকটি বৎসর পূর্বেই
এমন একদিন ছিলো ;
যখন পড়ন্ত বিকেলে পায়ে থাকতো বল
কিংবা ঘরে বসে ইস্কুলের অংক কষা
কিংবা হল্লা দিয়ে ঘুরে বেড়ানো দিগ্বিদিক।
সময় যেন উড়ন্ত শকুন...
এক এক করে নিয়েছে সব।
এখন হাতে শোভে খবরের কাগজ
মুখে ফোটে রাজনীতির বোল ;
নয়তো মূর্খের গালি খাওয়ার
জুয়ারির নষ্ট হবার
বিনোদনী তাস।
মাঝে মধ্যে দুঃসময়ে
লোকের যখন নিতান্ত অভাব পড়ে ;
পারমানেন্ট সাথীসহ
বড়ো রাস্তায় মুখোমুখি ব্রীজের ঘাড়ে চড়ে
এক রাজ্যির আলাপ, আবোল তাবোল ভাবনা ;
অবশ্য তোমায় নিয়ে নয়-
পাশের বাড়ির কলিমুদ্দিনের দুঃখ নিয়ে।
সে অনেক কথা,একটি ইতিহাস।
গত শীতের এক নিখাদ রাতে
শুয়েছিলো থুরথুরে বুড়ি মাকে নিয়ে ;
মাঝরাতে শীতের ধমকানি যখন তুঙ্গে
কলিমুদ্দিন অচেতন শ্রবণ অঙ্গে
শুনেছিলো দু’একটি আঁই খুঁই।
তারপর ভোরে, সূর্যের ওম নিয়ে
ন্যাংটা ছেলেটা যখন রাস্তায় নেমে আসে ;
উঠে দেখে সব শেষ।
ফ্রিজ শকে স্থির
লোহিত-শ্বেতের গতি লীন।
শেষ ভরসা ন্যাংটা ছেলেটা
যে মায়ের অযত্নে বর্ধিত পাঁচটি বৎসর।
সে এক করুণ গাঁথা রীতিমত দুঃসহ ;
জন্মসনেই ভীষণ আকাল
খাই খাই শুধু চারদিকে।
সে আর কতো ! মাস দুই যেতেই
এক নিশীথ রজনীর নৈঃশব্দ ভেদ করে
করুণ আহাজারি, ফ্রিজ শক ;
কলিমুদ্দিনের সে কী বুক ফাটা চিৎকার!
তারপর সব স্থির ; থেকে থেকে শিশুর কান্না।
কলিমুদ্দিনের বয়স হয়েছে
আমারও কম নয় ;
হয়তো আবার বদলে যাবো
তোমায় নিয়ে চারু ঘর বাঁধবো
হাসবো খেলবো জিসান থাকবে কোলে ;
আসবে মন্বন্তর, পুড়বে কপাল আমার।
ফের যদি আসে -
তবে নিশ্চিত জেনে রাখো,
আদিম হিংস্রতায় মেতে উঠে
দফার রফা করে
নেতা দিয়ে ঝোল খাবো
তত্ত্বের ভর্তা খাবো
তারপর, কবর হব
আঁকবো মানচিত্র নিজের!