logo
আপডেট : ২২ মার্চ, ২০২৪ ১১:১৫
নারী, তোর মনে নেই -?
তপন কুমর দত্ত

নারী, তোর মনে নেই -?

নারী, তোর মনে নেই-?
পথে ছিলো বিস্তীর্ণ জলাভূমি,বড় বন্ধুর ছিলো সেই পথ-
যে পথে এসেছিলেন তাঁরা-
ঘাড়ে রোঁয়া উঠা মোড়লদের দেয়া বিধানে-
ক্ষতবিক্ষত হয়েছিলেন আমাদের জননীরা।
 
সেদিন,সভার বিধান বলেছিলো-শোন- তোমরা নারী,
পড়াশোনায় তোমাদের নেই কোন অধিকার-
পর্দার ভেতরে থাকবে তোমরা,অন্দরমহলে ছিলেন জননীরা,তাঁদের চারদিকে ছিলো কেবলই অন্ধকার। 
 
আজো বিধান সভায় এই রায় ঘোষিত হয়-
নারী,তোরা কেবলই মাংসপিণ্ড,ভোগ্যবস্তু,এর বেশিকিছু নস-
বিধান সভার এই রায় মেনে নেয় বিজ্ঞ সমাজ-
বাতাসের ঘূর্ণিবলয়ে ভেসে বেড়ায় কেবলই আফসোস। 
 
নারী,আমি তোকে বলি-
চেয়ে দ্যাখ্- জননীরা এখনো অদৃশ্য শেকলে বাঁধা-
এখনো চারদিকে কেবলই অন্ধকার!
আমি শুনি। তুই শুনিসনি- তুই কি শুনিসনি-
ঐ শোনা যায়,প্রসব ব্যাথার আর্তচিৎকার!
 
পাশবিক নির্যাতনে ভয়ে শিউরে উঠে গা,
মন কেঁদেকেটে মরে লাজে-
নারীরা কি মানুষ নয়- কেবলই কি ভোগ্যপণ্য-?
জননীরা আজ ব্যস্ত সবাই প্রসবের কাজে।
 
ঐ চেয়ে দ্যাখ্- অন্ধকারের বুক চিরে করোটি রঙের আলোয় কেমন উদ্ভাসিত পূর্ব দিগন্ত-
তোর মনে নেই- মনে নেই নারী- জননী সর্বংসহা,অসুর মর্দিনী। আমাদের জননীরা কখনো হয় না ক্লান্ত।
 
কেটে গ্যাছে সন্ধ্যার ঘোর- দ্যাখিস আসবেই নতুন ভোর,
নারীরা আর- আর কতোদিন থাকবে অন্তরীন-
পর্দার অন্তরালে যে নারী- যে জননী ছিলেন আমার,
অরণ্যের গহীন অন্ধকারে তাঁকে দেখি আজ- ভয়ডর শঙ্কাহীন। 
 
সারাদিন চুন লবণের জলে খেলা করে বন্য শূকরের দল
জননীরা ভাবে- হায় ! আমরা মানুষ ছিলাম কবে-?
আমি বলি শোন্- এই দিন বদলের দিনে- তোরা কী কোনোদিন- মানুষ হবি না তবে-?
 
নারী, তোকে বলি-
তোর হাতের মেহেদী মুছে ফেল,মুছে ফেল ঠোঁটের রঙ,
শক্ত হাতে মুছে ফেল- ঐ চোখের কাজল-
শিরদাঁড়া সোজা করে দাঁড়া। তৈরি হোক নতুন বিধান,ঘূর্ণি হাওয়ায় আজ নাহয় উড়ুক, উড়ুক-
তোর শাড়ির আঁচল।