logo
আপডেট : ২৯ মার্চ, ২০২৪ ১১:১১
ধারাবাহিক উপন্যাস- পর্ব-০৭
নিশিকথা
ওমর ফারুক

নিশিকথা

নিশি বড় ঘৃুম কাতরে মেয়ে। ঘুম থেকে জেগে মোবাইলটা হাতে নেয়। দেখে ১৬৪টি মিসড কল উঠে আছে। চমকে যায় সে। চিন্তায়ও পড়ে খানিকটা। কোনদিনতো এমন হয় না। কি হয়েছে দেশে? নিশ্চয়ই বড় ধরণের কোন ঘটনা ঘটেছে। 

২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি পিলখানায় যখন বিডিআর বিদ্রোহ হয়েছিল সেদিনও সে সকালের দিকে খুব ঘুমিয়েছিল। উঠে দেখতে পায়, তার মোবাইলে ২৫ টি মিসড কল উঠে আছে। কল খুলে দেখতে পায় তার ঘনিষ্ঠ বন্ধুরাই ফোন করেছিল তাকে। তবে রিংটোন বন্ধ করে রাখায় সে কারো ফোনই ধরতে পারেনি। আজ আবার কি হলো? একবার ভাবে প্রায়ই পত্রিকায় সংবাদ ছাপা হয় দেশে ভয়াবহ ভূমিকম্প হবে। তা হলে কি ভূমিকম্প হয়েছে? সে ঘরের চারদিকে তাকায়। এত বড় ভূমিকম্প হলে বাড়িতেও কিছু একটা হতো। সবইতো ঠিক আছে। তা হলে কি হয়েছে? দেশের কোন মন্ত্রীর কোন সমস্যা হলো। কিছুই বুঝে উঠতে পারে না। হিসাব মিলাতে না পেরে বিছানা ছেড়ে ওঠে। ভাবে একজনকে অন্তত কল ব্যাক করে জানা দরকা, কেন ফোন করেছিল। কিন্তু কাকে ফোন করবে বুঝে উঠতে পারে না। কারণ যাদের ফোন থেকে কল এসেছে, তার মধ্যে বেশিরভাগই সেইভ করা নাম রয়েছে ফালতু-১, ফালতু-২ এমন ৪০ টির বেশি ফালতু নাম্বার।
নিশি যা পছন্দ করে না এসব বিষয়ই বেশি ঘটে তার। মোবইল ফোনে জরুরি কথা ছাড়া বাড়িত কথা একদম অপছন্দ তার। আর যদি কেউ ফালতু আলাপ করতে চায়, তা হলে তার মেজাজ বিগড়ে যায়। এ পর্যন্ত সে তিনবার তিনটা সিমকার্ড বদলেছে। এরপরও কোত্থেকে যে লোকজন নাম্বার পেয়ে যায়? অর দিন রাত বিরক্ত করে। পরে বিরক্ত করা নম্বরগুলো সে ফালতু নাম দিয়ে সেইভ করে রেখেছে। ফালতু নম্বর থেকে ফোন আসার সঙ্গে সঙ্গে সে রিসিভ করে কোন কথা না বলে খাটের উপর, টেবিলের উপর বা অন্য কোথাও রেখে দেয়।
প্রথম প্রথম অনেক অনুরোধ করেছে সে ফোন কারীকে ফোন না করার জন্য। কিন্তু কে কার কথা শোনে। তাই এক বন্ধু তাকে ফোন রিসিভ করার বুদ্ধিটা দেয়। এর পর কাজ হয়েছে। একজনতো রোজ ১০ বার ফোন করতো। এখন সে একবারও ফোন করে না। ফালতুদের বিরক্তি থেকে বেঁচে বেশ শান্তিতেই ছিল নিশি। কিন্তু হঠাৎ আজ এক সঙ্গে সব ফালতুরা তাকে ফোন করেলাে কেন বুঝে উঠতে পারছে না। গোলক ধাঁধাঁয় পড়ে গেছে নিশি।