দেশে আসার জন্য লন্ডনে বিমান ধরতে ঝামেলা হয়নি দিবার। প্রথমে টেনশনে পড়ে গিয়েছিলেন বিমানের টিকিট পান কি না। একদিন আগে টিকিট পাওয়া তো কষ্টকর। যেখানে কখনো কখনো ১০-১২ দিন আগেই বিমানের টিকিট পাওয়া যায় না।
যে বিমানে দেশে এসেছে তারও কোন সিট ফাঁকা ছিল না। লন্ডন থেকে ঢাকাগামী এক যাত্রী শেষ সময়ে টিকিট বাতিল করেন। সেই সিটটিই ধরতে পারে দিবা।
দিবা দেশের মাটিতে বিমান থেকে নেমেই প্রচণ্ড গরম অনুভব করে। সে যখন বিমানবন্দরে বিমানে চাপে তখন তাপমাত্রা ছিল ১২ ডিগ্রী সেলসিয়াস। বিমান থেকে নেমেই ৩৯ ডিগ্রীর তাপে পড়তে হয় তাকে। যেন কেউ তার গায়ে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। অবশ্য দিবা জেনে শুনেই এসেছে যে, দেশে গরমের পরিমাণ বেড়েছে। ঢাকার তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রী পর্যন্ত উঠে যাচ্ছে। তা একটি পত্রিকায় পড়ে বেশ কষ্ট হয়েছিল তার। কিন্তু শীতের ভেতর বসে থেকে চরম গরমের বিষয়টি আঁচ করা কঠিন হয়ে যায়। বিমান থেকে নেমে সেটি সহজেই আঁচ করতে পারে সে।
দিবা বিমানবন্দরে নেমেই ফােন করে বন্ধু তারিককে। ফোন ধরে তারিক বিস্মিত হয়। দিবার সঙ্গে খুব বেশি আগে কথা হয়নি। এরই মধ্যে সে ঢাকায়! কিভাবে সম্ভব? দিবাকে বিমানবন্দরে থাকতে বলে তারিক। কিন্তু দিবা সরাসরি নাহিদের বাসায় চলে যায়। তারিককে বলে নাহিদের বাসায় চলে আসার জন্য।
তারিক প্রথমে দিবাকে আটকে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু তার আবেগী ভাব বুঝতে পেরে আর তা করেনি। তা হলে হয়তো তারিককে সে ভালাে মনে করবে না। তারিক ভাবে ২০ বছর ধরে দেখা নেই দিবার। কেমন হয়েছে ও। বুড়ো হয়ে গেছে! মোটা হয়েছে নাকি আগের মতোই সুন্দরী আছে।
এসব চিন্তা করতে করতেই তার সম্বিৎ ফিরে। মনে পরে তাকে নাহিদের বাসায় যেতে হবে। তা না হলে দিবাই বরং তার আগে ওই বাড়িতে চলে যােব। তারিক দিবার কাছে জানতে চেয়েছিল সে বাসাটা চিনে কি না। দিবা জানিয়েছে তার ভুল হওয়ার কথা নয়। ঢাকা শহর ২০ বছরে যতই বদলে যাক নাহিদের বাসা চেনা তার জন্য কষ্টকর হবে না। এ ছাড়া যে বাসায় নিশি রয়েছে সেটি ভোলার সুযোগ নেই। এও জানিয়েছিল তার রস্তাঘাট খুব মনে থাকে। লন্ডন শহরে একই গিয়েছিল। নিজে নিজেই বাসা খুঁজে বের করেছে। চাকরি জুটিয়েছে। বিয়ে করেছে ভারতীয় এক নাগরিককে। তাদের ঘরে এক ছেলে হয়েছে।
তারিক মোবাইল ফোনে আর কথা বাড়ায়নি। যে কারণে দিবা দেশে ফিরেছে তা আগে সমাধান হওয়া দরকার। কিন্তু তার মনে আশংকা কাজ করে, জবা বিষয়টিকে কিভাবে নেয়। নিশিও কিভাবে নেয়। তারিক না আবার তাদের পরিবারে ভিলেন হয়ে যায়। কিন্তু সেতো কখনো নাহিদের পরিবারের অমঙ্গল কামনা করেনি। সব সময় চেয়েছে নাহিদের পরিবার ভালো থাকুক।
চলবে..