রাজধানীতে ১০ তলা বঙ্গবাজার পাইকারি মার্কেট নির্মাণসহ ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) চারটি উন্নয়ন প্রকল্প উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (২৫ মে) সকাল ১০টায় বঙ্গবাজার থেকে এসব উন্নয়ন কাজের উদ্বোধন করবেন তিনি।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন জানায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাজধানীর বঙ্গবাজারে ‘বঙ্গবাজার নগর পাইকারি বিপণিবিতান’, পোস্তগোলা ব্রিজ থেকে রায়েরবাজার স্লুইসগেট পর্যন্ত আট লেনের ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজলুল হক মণি সরণি (ইনার সার্কুলার রিং রোড)’, ধানমন্ডি হ্রদে ‘নজরুল সরোবর’ এবং শাহবাগে ‘হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী শিশু উদ্যান’ আধুনিকীকরণ শীর্ষক চারটি উন্নয়ন প্রকল্প উদ্বোধন করবেন।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত থাকবেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম ও দক্ষিণ সিটির মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।
উদ্বোধনের অপেক্ষায় থাকা ১০তলা বিশিষ্ট বঙ্গবাজার নগর পাইকারি বিপণিবিতানে পাঁচটি সাধারণ সিঁড়ি ও ছয়টি অগ্নি প্রস্থান সিঁড়িসহ পর্যাপ্ত অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। বিপণিবিতানের প্রতিটি ব্লকের জন্য আলাদা বাহির ও প্রবেশ দ্বার থাকবে। ভবনে বৈদ্যুতিক যান্ত্রিক কক্ষ এবং প্রতিটি ব্লকের প্রতি তলায় চারটি করে শৌচাগার থাকবে। এছাড়া ভবনের ভূমিতলে ১৬৯টি গাড়ি ও ১০৯টি মোটরসাইকেল পার্কিংয়ের সুবিধা থাকবে।
পোস্তগোলা ব্রিজ থেকে রায়েরবাজার স্লুইসগেট গেট পর্যন্ত ৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের আট লেনের বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজলুল হক মণি সরণির নির্মাণ কাজেরও উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী।
৯৭৪ কোটি ৫৮ লাখ টাকা ব্যয় সাপেক্ষ এ প্রকল্পের আওতায় ১০ কিলোমিটার নর্দমা (ড্রেন), ১০ কিলোমিটার পথচারী হাঁটার পথ (ফুটপাত), তিনটি উড়াল সেতু (ভেহিকেল ওভারপাস), তিনটি পথচারী পারাপার সেতু (ওভারব্রিজ), দুই কিলোমিটার সংরক্ষণকারী দেয়াল (রিটেইনিং ওয়াল), তিনটি মসজিদ, ছয়টি যানবাহন বিরতির স্থান (বাস-বে) ও ছয়টি যাত্রী ছাউনি নির্মাণ করা হবে। এতে ঢাকা শহরের ভেতরে বাস, ট্রাক ও পণ্যবাহী যানবাহনের চাপ কমার পাশাপাশি বহুলাংশে যানজট নিরসন হবে।
নিজস্ব তহবিল থেকে প্রায় ৫১ কোটি টাকা ব্যয়ে ধানমন্ডি হ্রদে নজরুল সরোবর নির্মাণ করছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন। শনিবার এ কাজেরও উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম স্মরণে ‘নজরুল সরোবর’ নামের উন্মুক্ত বিনোদন মঞ্চে একটি ঘাটলা, উন্মুক্ত মিলনায়তন, পথচারীদের হাঁটার পথ, গণপরিসর, রেস্তোরাঁ, বসার স্থান (বেঞ্চ), দৃষ্টিনন্দন বাতি, পর্যাপ্ত সবুজায়ন ও শব্দযন্ত্র (সাউন্ড সিস্টেম) স্থাপনের পাশাপাশি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও নজরুল ইসলামের স্মৃতিময় মুহূর্ত ও সাহিত্যকর্ম সংবলিত ফলক স্থাপন করা হবে।
এছাড়া শাহবাগে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী শিশু উদ্যানের আধুনিকীকরণ কাজেরও উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা (শাহবাগে জিয়া শিশু পার্কের নতুন নাম হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী শিশু উদ্যান করা হয়েছে)।
প্রায় ৬০৪ কোটি টাকা ব্যয়ে এ শিশু উদ্যানের আধুনিকায়নের কাজ করা হবে। ১৯৭৯ সালে স্থাপিত এ পার্কে আগে ১১টি রাইড ছিল। আধুনিকায়নের মাধ্যমে সেখানে মেগা ডিস্কও, সুপার এয়ার রেস, ফ্লাইং ক্যারোস্যাল, গ্যালিয়ন, ১২ডি থিয়েটার, মাইন কোস্টার, ক্লাইম্বিং কার, সুপার হ্যাপী সুইং, ওয়াটার ম্যানিয়াসহ অত্যাধুনিক নতুন ১৫ ধরনের রাইডস বসানো হবে।
এছাড়াও এতে আগত দর্শনার্থীদের জন্য শৌচাগার, চত্বর, রেস্তোরাঁ, বিশ্রামস্থল, প্রশস্ত হাঁটার পথ, বসার আসন ইত্যাদি প্রয়োজনীয় সুবিধাদি সংযোজন করা হয়েছে।