এবারই প্রথম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলছে উগান্ডা। জিম্বাবুয়ের মতো দলকে পেছনে ফেলে বিশ্বকাপে জায়গা করে নিয়েছে দলটি। বল হাতে প্রতিপক্ষের সামনে প্রতিরোধ গড়ে তুললেও ব্যাট হাতে দাড়াতেই পারছে না দলটি। আফগানিস্তানের পর আজ ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষেও তাসের ঘড়ের মত ভেঙ্গে পরল উগান্ডার ব্যাটিং লাইন। ১২ ওভারে মাত্র ৩৯ রান তুলতেই গুটিয়ে গেলেন তারা। গড়লো টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সর্বনিম্ন রান করে হারের রেকর্ড।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের আকিল হোসেন একাই ধ্বসিয়ে দিয়েছেন উগান্ডার ব্যাটিং লাইনকে। ১১ রান খরচায় ৫ উইকেট শিকার করেছেন তিনি। এছাড়া আলজারি জোসেপ ২ টি এবং রোমারিও জোসেপ, আন্দ্রে রাসেল, মোট একটি করে উইকেট শিকার করেছেন। ক্যারিবীয়দের দেয়া ১৭৪ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে দাড়াতেই পারেনি উগান্ডার ব্যাটসম্যানরা। ২০ রান তুলতেই হারাতে হয়েছে পাঁচ উইকেট। এরপর একে একে সকলেই যোগ দিয়েছেন আত্মহুতির মিছিলে। ১৩ রানে অপরাজিত ছিলেন জুমা মিয়াজি। এছাড়া দলের কোনও ব্যাটসম্যানই দুই অঙ্কের ঘড়ে পৌছাতে পারেননি।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সর্বনিম্মরানের রেকর্ড এতদিন ছিল নেদারল্যান্ডসের। চট্টগ্রামে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ১০.৩ ওভারে ৩৯ রানের অলআউট হয়েছিল তারা। দ্বিতীয় সর্বনিম্ন রানের রেকর্ডও ছিল নেদারল্যান্ডসেরই। শারজাহতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৪৪ রানে অলআউট হয়েছিলেন তারা। তবে এই লজ্জার রেকর্ডে নেদাল্যান্ডসকে ছাড়িয়ে এবার শীর্ষে উগান্ডা। নেদারল্যান্ডসের সমান ৩৯ রান করলেও রান রেটের কারণে শীর্ষে রয়েছে উগান্ডার নাম। এই বিশ্বকাপে আরও একবার এমন ব্যাটিং বিপর্যয়ে পরতে হয়েছিল দলটিকে। আফগানিস্তানের বিপক্ষে ৫৮ রানে অল আউট হয়েছিলেন তারা।
এই তালিকায় তৃতীয় স্থানে ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। দুবাইতে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৫৫ রানে অল-আউট হয়েছিল ক্যারিবীয়রা। আফগানিস্তানের বিপক্ষে ৫৮ রানে অল আউট হয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের পরেই অবস্থান করছিল উগান্ডা। এবার সকলকে ছাড়িয়ে এক নম্বরে উঠে এসেছে তারা।
এর আগে ব্যাট হাতে শুরুতে ভালোই করেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। দুই ওপেনার ব্রান্ডন কিং এবং জনসন চার্লস দলকে এগিয়ে নিচ্ছিলেন ভালোভাবেই। উগান্ডাকে প্রথম ব্রেক থ্রু এনে দেন আলপেস রামজানি। ৪.৩ ওভারে ব্রান্ডন কিংকে বোল্ড করে সাজঘরের পথ দেখান। দলীয় ৪১ এবং ব্যাক্তিগত ১৩ রানে ফেরেন তিনি।
চার্লসকে সঙ্গ দিতে মাঠে আসেন নিকোলাস পুরান। আজ তার সামনে ছিল টি-টোয়েন্টিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড গড়ার সুযোগ। কিন্তু অল্পের জন্য রেকর্ড গড়া হয়নি তারা। ক্রিস গেইলকে ছাড়িয়ে যেতে পারেননি তিনি। রেকর্ড গড়ার পথে বেশ ভালো ভাবেই এগিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি। তবে ২২ রানে মাসাবার বলে কট অ্যান্ড বোল্ড হয়ে ফির যান পুরান।
ক্যারিবিয় ব্যাটসম্যানদের হাত খুলে খেলার খুব একটা সুযোগ দেননি উগান্ডার বোলাররা। জনসন চার্লস (৪৪), রোভম্যান পাওয়েল (২৩) ও শেরফান রাদারফোর্ড (২২) কাউকেই খোলসের বাইরে বের হতে দেয়নি ব্রায়ান মাসাবার দল। নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে ক্যারিবীয় ঝড় আটকে দেয় তারা।
শেষদিকে আন্দ্রে রাসেলের দিকে তাকিয়ে ছিল দল। শুরুতে ধীরেগতিতে রান করলেও পরে রানের চাকায় গতি আনেন এই ক্যারিবীয় তারকা। তার ১৭ বলে ৩০ রানের ইনিংসে ভর করে বড় সংগ্রহ পায় দুইবারের চ্যাম্পিয়নরা। রাসেলের ইনিংসে কোনো ছক্কা না থাকলেও ছিল ৬টি চারের মার।
উগান্ডার পক্ষে সর্বোচ্চ ২ উইকেট নিয়েছেন অধিনায়ক ব্রায়ান মাসাবা। ১টি করে উইকেট ঝুলিতে পুরেছেন আলপেশ রামজানি, কসমস কেউয়াটা ও দীনেশ নাকরানি।