logo
আপডেট : ১ জুলাই, ২০২৪ ১২:০৪
ভূমি উন্নয়ন কর আদায়ের নতুন সময় সীমা নির্ধারণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

ভূমি উন্নয়ন কর আদায়ের নতুন সময় সীমা নির্ধারণ

এখন থেকে ভূমি উন্নয়ন কর আদায়ের সময়কাল '১ বৈশাখ থেকে ৩০ চৈত্র'-এর পরিবর্তে '১ জুলাই থেকে ৩০ জুন' পর্যন্ত করা হয়েছে। নতুন এই সময়সীমা আজ (‌১ জুলাই-২০২৪) থেকে কার্যকর ।

ভূমিমন্ত্রণাল সুত্র জানায়,  ভূমি উন্নয়ন কর আদায়ের সময়কাল '১ জুলাই থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত' নির্ধারণ করা হয়েছে, আজ থেকে কার্যকর। এই পরিবর্তনের মাধ্যমে ভূমি উন্নয়ন কর আদায় ব্যবস্থাপনাকে জাতীয় অর্থ বছরের সাথে সমন্বিত করা হয়েছে। পূর্বে ভূমি উন্নয়ন কর আদায়ের সময়কাল ছিল বাংলা সনের ১লা বৈশাখ থেকে ৩০শে চৈত্র পর্যন্ত। জাতীয় অর্থ বছরের সাথে সমন্বয়ের ফলে ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান পর্যায়ে ভূমি মালিকের ভূমি উন্নয়ন কর প্রদান সম্পর্কিত হিসাব ব্যবস্থাপনা অধিকতর সহজ ও গতিশীল হবে। এছাড়া জাতীয় অর্থনীতিতে ভূমি উন্নয়ন করের প্রভাব নির্ণয় অধিকতর সুবিধাজনক হবে।
উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০২১ সালে অনলাইনে ভূমি উন্নয়ন কর ব্যবস্থা উদ্বোধন করেন। পহেলা বৈশাখ ১৪৩০ (১৪ এপ্রিল ২০২৩) থেকে সারা দেশব্যাপী ভূমি উন্নয়ন কর শতভাগ অনলাইনে আদায় করা হচ্ছে। ভূমি (উন্নয়ন) কর ব্যবস্থার জন্য আন্তর্জাতিক উইসিস পুরস্কার ২০২২ অর্জন করে ভূমি মন্ত্রণালয়। ভূমি উন্নয়ন কর ডিজিটালাইজেশনের ফলে ভূমি খাতে রাজস্ব আদায়ের হার আগের চেয়ে তিন গুণ বা ২০০ শতাংশেরও বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। ভূমিমন্ত্রীর নির্দেশে, ভূমি সচিব মোঃ খলিলুর রহমানের তত্ত্বাবধানে ভূমি উন্নয়ন কর ব্যবস্থা স্মার্ট করার কাজ বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
মুঘল বাংলায় ১৫৮৪ খ্রিস্টাব্দ থেকে প্রথম বাংলা সন গণনা করা হয়। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে খাজনা আদায়ে এই গণনা কার্যকর শুরু হয়েছিল ১৫৫৬ সাল থেকে (পূর্বের তারিখে দেখিয়ে)। কালক্রমে ব্রিটিশ ও পাকিস্তান আমল হয়ে স্বাধীন বাংলাদেশেও বাংলা সনের হিসাবেই জমির খাজনা তথা ভূমি কর নেয়া হত। ১৫৮৪ প্রায়োগিক সাল ধরলে সময়ের প্রয়োজনে প্রায় ৪৪০ বছর পর ভূমি কর আদায়ের সময় পরিবর্তন হচ্ছে।
আরও উল্লেখ্য, ভূমি উন্নয়ন কর হালসনের হিসাব অনুযায়ী পরিশোধ করতে হয়। অর্থাৎ, প্রতি বছরের ভূমি উন্নয়ন কর উক্ত বছরের ৩০ জুনের মধ্যে জরিমানা ব্যতীত আদায় করা যাবে। কৃষিকাজের ওপর নির্ভরশীল ব্যক্তি বা পরিবারভিত্তিক কৃষি জমির মোট পরিমাণ ৮ দশমিক ২৫ একর বা ২৫ বিঘা পর্যন্ত হলে ভূমি উন্নয়ন কর দিতে হবে না। তবে এই জমির পরিমাণ ২৫ বিঘার বেশি হলে সম্পূর্ণ কৃষি ভূমির ওপর ভূমি উন্নয়ন কর দিতে হবে। 
অন্যদিকে, অকৃষি ভূমিকে ব্যবহার ভিত্তিক বাণিজ্যিক, শিল্প এবং আবাসিক ও অন্যান্য শ্রেণিতে বিভাজন করে সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, অকৃষি ভূমির ভূমি উন্নয়ন কর হার নির্ধারণ ও পুনঃনির্ধারণ করে ভূমি উন্নয়ন কর আদায় করে থাকে। এছাড়া, সরকার সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, যেকোনো ব্যক্তি বা যেকোনো শ্রেণির ব্যক্তিবর্গ অথবা কোনো সংস্থাকে উক্ত প্রজ্ঞাপনে উল্লিখিত শ্রেণি ও পরিমাপের কৃষি বা অকৃষি ভূমির ভূমি উন্নয়ন কর মওকুফ করতে পারবে।
এদিকে আজ রোববার ভূমি মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সরকারের কর্মসম্পাদন ব্যবস্থাপনা পদ্ধতির আওতায় ভূমি মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে এর আওতাভুক্ত দপ্তর ও সংস্থার ২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরের বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি (এপিএ) স্বাক্ষর অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে ভূমি আপিল বোর্ডের চেয়ারম্যান মুহম্মদ ইব্রাহিম, ভূমি সংস্কার বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. আব্দুস সবুর মন্ডল বিপিএএ, ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আনিস মাহমুদ, ভূমি প্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের পরিচালক মো. আরিফ ও হিসাব নিয়ন্ত্রক (রাজস্ব) দপ্তরের হিসাব নিয়ন্ত্রক (রাজস্ব) নাহিদা আলম নিজ নিজ দপ্তর ও সংস্থার পক্ষে ভূমি মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে এপিএ চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। ভূমি মন্ত্রণালয়ের সচিবের দায়িত্ব পালনরত অতিরিক্ত সচিব জিয়াউদ্দীন আহমেদ এনডিসি ভূমি মন্ত্রণালয়ের পক্ষে এপিএ স্বাক্ষর করেন।