সমঝোতা স্মারক আর চুক্তি কি এক? বিএনপি মহা-সচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে এমন প্রশ্নই করলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সফরে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের চুক্তি নয়, সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে। এইবার কিন্তু কোনো চুক্তি হয়নি। মির্জা ফখরুল, সমঝোতা স্মারক আর চুক্তি, এই দুইটা কি এক? পড়াশোনা করেন না? ডিপ্লোমেসির ভাষা জানেন না?’
আওয়ামী লীগের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আজ সোমবার ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের আলোচনা সভায় এ কথা বলেন ওবায়দুল কাদের। তেজগাঁওয়ে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে এই আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুলকে বিভ্রান্তি সৃষ্টি না করার আহ্বান জানান আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক। তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়ার আমলে তাঁর ভারত সফর শেষে ঢাকা বিমানবন্দরে সাংবাদিকেরা জিজ্ঞেস করলেন, গঙ্গা চুক্তির কী হলো? খালেদা জিয়া কী বললেন? “আরে আমি তো গঙ্গা চুক্তির কথা বলতে ভুলেই গেছি।” আপনারা সবকিছুই ভুলে যান।’
গঙ্গা চুক্তি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা করেছেন উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, বন্ধুত্ব থাকলে অবিশ্বাস থাকে না, সন্দেহ থাকে না। বন্ধুত্ব আছে বলেই তিস্তাসহ অভিন্ন নদীর পানি নিয়ে আলোচনার অনেক দূর অগ্রগতি হয়েছে। বন্ধুত্ব আছে বলেই সমুদ্রসীমায় আরেকটা বাংলাদেশ পাওয়া গেছে।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘ভারতের নতুন সরকার আমাদের প্রধানমন্ত্রীকে আশ্বস্ত করেছেন। যেসব সমস্যার বাস্তবায়ন হয়নি, সেগুলোর ইতিবাচক অগ্রগতি হয়েছে। সমাধানের জন্য ইতিবাচক চেষ্টা আছে।’
তিস্তার পানি চুক্তি নিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘তিস্তার পানি নিয়ে সবাই বলে, চুক্তি কেন হলো না? আমি আপনাদের জানাতে চাই, ভারত একটি ফেডারেল দেশ। সেখানে কেন্দ্রীয় সরকার ইচ্ছা করলে রাজ্য সরকারের অধীন পানি অন্য দেশকে দিতে পারে না। এটা ভারতের সংবিধানে লেখা আছে। এর আগে গঙ্গার পানি দিতে পশ্চিমবঙ্গের জ্যোতি বসু সরকারের সম্মতি ছিল বলেই সেই চুক্তি হয়েছে।’
পশ্চিমবঙ্গের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারের কথা উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, যখন শেখ হাসিনা সরকারের সঙ্গে আলোচনা হচ্ছিল, তখনই গর্জে উঠেছেন মমতা। কলকাতা থেকে বলেছেন, ‘কোনো দিনও বাংলাদেশকে এই পানি দেব না। এই হিস্যা আমরা দিতে পারি না।’
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, এখন ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারকে মমতাকে রাজি করাতে হবে। তা না হলে ভারতের সংবিধান অনুমোদন করে না, বাংলাদেশের সঙ্গে ভারত সরকার তাদের রাজ্যকে বাদ দিয়ে চুক্তি করবে।
ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান, মহানগরের সহসভাপতি কাদের খান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাবিব হাসান, দপ্তর সম্পাদক উইলিয়াম প্রলয় সমদ্দার প্রমুখ।