আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে নেতৃত্ব দেওয়া দল। তাই দল হিসেবে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা সমীচীন হবে না বলে মনে করেন অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল।
তিনি বলেন, সত্যিকার অর্থে যদি কোনো রাজনৈতিক দল জঙ্গিবাদী কিংবা রাষ্ট্রবিরোধী তৎপরতায় জড়িত থাকে, তাহলে প্রচণ্ড সততার সঙ্গে তদন্ত করে এমন কিছু করা যেতে পারে।
বুধবার (২৮ আগস্ট) দুপুরে সচিবালয়ে আইন মন্ত্রণালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা হবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে আইন উপদেষ্টা বলেন, যখন আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবি উঠেছে, তখন আপনি দেখেছেন, আমাদের অ্যাটর্নি জেনারেলের অফিস থেকে প্রতিবাদ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, কোনো রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ করার পক্ষে আমি নই, যদি না কোনো জঙ্গিবাদী কিংবা রাষ্ট্রবিরোধী তৎপরতায় তারা লিপ্ত থাকে। সত্যিকার অর্থে যদি কোনো রাজনৈতিক দল জঙ্গিবাদী কিংবা রাষ্ট্রবিরোধী তৎপরতায় জড়িত থাকে, তাহলে প্রচণ্ড সততার সঙ্গে তদন্ত করে এমন কিছু করা যেতে পারে।
উপদেষ্টা বলেন, আমাদের সংবিধান অনুসারে সংগঠন করার স্বাধীনতা আছে। আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে নেতৃত্ব দেওয়া দল, বিভিন্ন গণতান্ত্রিক সংগ্রামে তাদের অবদান ছিল। কিন্তু গেল ১৫ বছরে তারা যা করেছে, সেটা তাদের ঐতিহ্যের সঙ্গে যায় না, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সঙ্গে যায় না।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে এক বর্বরতম ফ্যাসিবাদ কায়েম করেছিল আওয়ামী লীগ। এ কর্মকাণ্ডের জন্য ব্যক্তিগত দায় থাকতে পারে, নেতাদের সামষ্টিক দায় থাকতে পারে, কিন্তু দল হিসেবে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা সমীচীন হবে বলে আমি মনে করি না।
আওয়ামী লীগকে অনেকেই সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে আখ্যায়িত করছেন। একটি দলকে কখন সন্ত্রাসী সংগঠন বলা উচিত- এমন প্রশ্নের জবাবে ড.আসিফ নজরুল বলেন, যারা বাংলাদেশের অস্তিত্ব ও সার্বভৌমত্বে বিশ্বাস করে না, বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক রাজনীতি নস্যাৎ করতে চায়, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বৈষম্যহীন ও শোষণহীন সমাজকে ধ্বংস করার জন্য যারা পরিকল্পিতভাবে সশস্ত্র সংগ্রাম করে, তাদের সন্ত্রাসী সংগঠন বলা উচিত। তবে মতামত প্রকাশ যতটা অবারিত রাখা যায়, ততটাই ভালো।