Main Logo
আপডেট : ১৪ নভেম্বর, ২০২৩ ২১:১৬

গাজায় গণহত্যা ঠেকাতে ব্যর্থতার অভিযোগে বাইডেনের বিরুদ্ধে মামলা

রয়টার্স ও বিবিসি

নিজস্ব প্রতিবেদক
গাজায় গণহত্যা ঠেকাতে ব্যর্থতার অভিযোগে বাইডেনের বিরুদ্ধে মামলা

ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলের হামলার শুরু থেকেই সমর্থন দিয়ে যাচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। হামলায় উপত্যকাটিতে ১১ হাজারের বেশি মানুষের দীর্ঘদিনের মিত্র ইসরায়েলকে থামাতে কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না ওয়াশিংটন। এমন পরিস্থিতিতে গাজায় গণহত্যা ঠেকাতে ব্যর্থতার অভিযোগ তুলে বাইডেনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা দ্য সেন্টার ফর কনস্টিটিউশনাল রাইটস (সিসিআর)।

 ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের একটি আদালতে করা ওই মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, গাজায় ইসরায়েলের গণহত্যা ঠেকাতে আন্তর্জাতিক ও মার্কিন আইন অনুযায়ী নিজের দায়িত্ব পালন করতে ব্যর্থ হয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। মামলায় আদালতের কাছে আর্জি জানানো হয়েছে, ইসরায়েলকে সমরাস্ত্র, অর্থ ও কূটনৈতিক সহায়তা দেওয়া থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে যেন বিরত রাখা হয়। আর বাইডেন ছাড়াও মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন যেন গাজায় ইসরায়েলের হত্যাকাণ্ড ঠেকাতে ব্যবস্থা নেন।

ফিলিস্তিনিদের পক্ষে কাজ করা বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা ও ব্যক্তির পক্ষে করা সিসিআরের ওই মামলায় বলা হয়েছে, নির্বিচার হত্যাকাণ্ড, বেসামরিক স্থাপনায় হামলা এবং জোরপূর্বক মানুষকে ভিটামাটি ছেড়ে যেতে বাধ্য করার মধ্য দিয়ে গণহত্যা চালিয়েছে ইসরায়েল। ১৯৪৮ সালের গণহত্যাবিরোধী আন্তর্জাতিক কনভেনশন অনুযায়ী, হত্যাকাণ্ড থামাতে যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্য দেশগুলোকে তাঁদের ক্ষমতা ও প্রভাব কাজে লাগাতে হবে।

যুক্তরাষ্ট্রের গুয়ানতানামো বে কারাগারে বন্দীদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় একটি মামলা করেছিল সিসিআর। ২০০৪ সালে মার্কিন সুপ্রিম কোর্টে গুরুত্বপূর্ণ ওই মামলায় জয় পায় সংস্থাটি। সিসিআর বলছে, ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের হামলা, গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলারকে আইনগত ন্যায্যতা দেয় না। ইসরায়েল বলছে, হামাসের ওই হামলায় সেদিন ১ হাজার ২০০ জনের মৃত্যু হয়। একই সঙ্গে ২০০ জনের বেশি মানুষকে জিম্মি করেন হামাস সদস্যরা।  

এদিকে হামাস নিয়ন্ত্রিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আজ মঙ্গলবার দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসে ইসরায়েলের হামলায় অন্তত ১৩ জন নিহত হয়েছেন। উত্তর গাজার হাসপাতালগুলোর অবস্থা ভয়ানক। সেখানকার সব হাসপাতালের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে বলে গতকাল সোমবারই জানানো হয়েছিল। 

এখনো এ অঞ্চলে অবস্থিত গাজার সবচেয়ে বড় হাসপাতালটি ট্যাংক দিয়ে ঘিরে রেখেছে ইসরায়েলি বাহিনী। বিদ্যুৎ ও জ্বালানির অভাবে সেখানে শিশুসহ একের পর এক রোগী মারা যাচ্ছেন। সোমবার থেকে হাসপাতালটিতে ৩২ জন রোগীর মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আশরাফ আল-কিদরা। 

হাসপাতালটিতে এখনো ৬৫০ জন রোগী ও কয়েক হাজার শরণার্থী রয়েছেন।
আল-শিফা হাসপাতালের অবস্থা কতটা শোচনীয়, তার একটি নমুনা দিয়েছেন হাসপাতালটির প্রধান মোহাম্মদ আবু সালমিয়াহ। আজ তিনি বলেন, ইসরায়েলের হামলার ভয়াবহতায় মারা যাওয়া ১৭৯ জনকে হাসপাতালটির চত্বরে গণকবর দিতে বাধ্য হয়েছেন তাঁরা। হাসপাতালে জ্বালানি শেষ হওয়ার পর থেকে মারা যাওয়া ৭ শিশু ও ২৯ রোগীকে সেখানে কবর দেওয়া হয়েছে।

আল-শিফা হাসপাতালে ইসরায়েলের নৃশংসতার মধ্যে প্রথমবারের মতো এ নিয়ে মুখ খুলেছেন বাইডেন। ইসরায়েলকে গাজার হাসপাতালগুলো রক্ষার আহ্বান জানিয়ে গতকাল সাংবাদিকদের তিনি বলেছেন, ‘আশা করছি হাসপাতালগুলো ঘিরে তুলনামূলক কম অভিযান চালানো হবে। আমরা ইসরায়েলের সঙ্গে এ নিয়ে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি।’ এদিকে গতকালই হোয়াইট হাউসে বাইডেনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো উইদোদো। এ সময় উইদোদো বলেছেন, গজায় নৃশংসতা বন্ধে যুক্তরাষ্ট্রকে আরও তৎপর হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছে ইন্দোনেশিয়া।

উপরে