Main Logo
আপডেট : ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৩ ১৯:৩০

আন্তর্জাতিক সমর্থন না থাকলেও গাজায় যুদ্ধ চালিয়ে যাবে ইসরায়েল

নিজস্ব প্রতিবেদক
আন্তর্জাতিক সমর্থন না থাকলেও গাজায় যুদ্ধ চালিয়ে যাবে ইসরায়েল
বেনিময়ামিন নেতানিয়াহু

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, তারা গাজায় যুদ্ধ চালিয়ে যাবেন এবং ‘কোন কিছুই তাদের থামাতে পারবেনা’। ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে একটি সামরিক ঘাটিতে সৈন্যদের উদ্দেশে কথা বলার সময় মি. নেতানিয়াহু বলেন, বিজয় অর্জন এবং হামাসকে নির্মূল না করা পর্যন্ত ইসরায়েল যুদ্ধ চালিয়ে যাবে।“কোন কিছুই আমাদের থামাতে পারবে না। আমরা শেষ পর্যন্ত যাব, বিজয় পর্যন্ত। এর চেয়ে কম হবেনা,” বলেন মি. নেতানিয়াহু।

ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, আন্তর্জাতিক সমর্থন থাকুক কিংবা না থাকুক তারা গাজায় যুদ্ধ চালিয়ে যাবেন। এই মুহূর্তে গাজায় যুদ্ধ বিরতি হলে সেটি হামাসের হাতে একটি ‘উপহার তুলে’ দেবার মতো হবে এবং তারা আবারো সংগঠিত হবার সুযোগ পাবে। ইসরায়েলের সেনাবাহিনীর হামলায় গাজায় বিপুল সংখ্যক বেসামরিক নাগরিক নিহত এবং চরম মানবিক সংকট তৈরি হবার কারণে ইসরায়েল ব্যাপক চাপের মুখে রয়েছে। গাজায় যুদ্ধ বিরতির আহবান জানিয়ে মঙ্গলবার জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে প্রস্তাব পাশ হয়েছে।একই সাথে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনও বলেছেন যে গাজায় নির্বিচারে বোমা হামালার কারণে ইসরায়েল আন্তর্জাতিক সমর্থন হারাচ্ছে।গাজায় চলমান ইসরায়েলের হামলা নিয়ে জাতিসংঘের সাথে দেশটির সম্পর্ক সর্বকালের সবচেয়ে তলানিতে এসে ঠেকেছে।

অন্যদিকে হামাস প্রধান ইসমাইল হানিয়ে একটি টেলিভিশন ভাষণে বলেছেন, ইসরায়েলের আগ্রাসন বন্ধের জন্য তিনি যে কোন উদ্যোগে রাজি আছেন। কবে হামাসকে বাদ দিয়ে কোন আয়োজন করা যাবেনা বলে তিনি উল্লেখ করেন। তবে ইসরায়েল হামাসকে নির্মূল করতে চায়। এদিকে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, গাজার উত্তরাঞ্চলে সংঘর্ষের সময় তাদের ১০ সেনা নিহত হয়েছে। গাজায় স্থল অভিযান শুরুর পর থেকে ইসরায়েলি বাহিনীর জন্য এটি ছিল সবয়ে ভয়ঙ্কর দিন। নিহত ইসরায়েলি সেনাদের মধ্যে একজন লেফট্যানেন্ট কর্নেল রয়েছেন, যার শেষকৃত্য বৃহস্পতিবার জেরুসালেমে অনুষ্ঠিত হয়েছে। হামাসের হাতে যুক্তরাষ্ট্রের যেসব নাগরিক জিম্মি হিসেবে আটক রয়েছেন তাদের পরিবারের সাথে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বৈঠক করেছেন। জিম্মিদের পরিবারের সাথে প্রেসিডেন্ট বাইডেনের এটাই সরাসরি বৈঠক। হোয়াইট হাউজে অনুষ্ঠিত বৈঠকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনও উপস্থিত ছিলেন।পশ্চিম তীরে বসতি স্থাপনকারী যেসব চরমপন্থি ইহুদি ফিলিস্তিনিদের উপর আক্রমণ করেছে তাদের উপর নিষেধাজ্ঞা দেবার আহবান জানিয়েছে ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডের লেইন।

ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট বলেন, বসতি স্থাপনকারীদের চরমপন্থিদের দ্বারা সহিংসতায় পশ্চিম তীরের ফিলিস্তিনিদের জীবনে চরম সংকট তৈরি হয়েছে।
এ সংঘাতের কারণে দীর্ঘমেয়াদী শান্তি স্থাপনের সম্ভাবনা ফিকে হয়ে আসছে এবং এর মাধ্যমে আঞ্চলিক অস্থিতিশীলতা তৈরি হতে পারে বলে সতর্ক করে দেন ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট।

জাতিসংঘ এবং অনেক দেশ মনে করে যে পশ্চিম তীরে ইহুদি বসতি স্থাপন করা আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন। কিন্তু পশ্চিমতীরে তীরে বসবাসরত ইসরায়েলিরা সেটির চরম বিরোধিতা করে। পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি বসতি শক্তিশালী ও সম্প্রসারণ করা নেতানিয়াহু সরকারের প্রধান এজেন্ডা। কিন্তু এ বিষয়টি ইসরায়েলি এবং ফিলিস্তিনিদের মধ্যে সবচেয়ে বড় বিরোধের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। বুধবার গাজার উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলে ব্যাপক সংঘর্ষ অব্যাহত ছিল। একই সাথে প্রবল বৃষ্টির কারণে তাবুতে বসবাসরত বাস্তুচ্যুত লাখ লাখ মানুষ চরম দুর্দশায় পড়েছে।জাতিসংঘের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা সতর্ক করে বলেছেন, ফিলিস্তিনি এলাকায় স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়েছে এবং জনবহুল আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে সংক্রামক রোগ ছড়িয়ে গেছে।

সূত্র : বিবিসি বাংলা

উপরে