লেবাননে হিজবুল্লাহ-ইসরায়েলের যুদ্ধবিরতি
লেবাননে সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর সঙ্গে ইসরায়েলের যুদ্ধবিরতি শুরু হয়েছে। বুধবার স্থানীয় সময় ভোর ৪টা থেকে এ যুদ্ধবিরতি শুরু হয়। মঙ্গলবার রাতে ইসরায়েলের মন্ত্রিসভায় এ সংক্রান্ত প্রস্তাবটি পাস হয়।
ইরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর কার্যালয় জানায়, তাদের নিরাপত্তা মন্ত্রিসভা হিজবুল্লাহর সঙ্গে যুদ্ধবিরতি চুক্তির পরিকল্পনায় অনুমোদন দিয়েছে।
এর আগে, ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ঘোষণা দেন, তিনি লেবাননে হিজবুল্লাহর সঙ্গে একটি যুদ্ধবিরতির বিষয়ে সম্মত হয়েছেন।
নেতানিয়াহুর দপ্তর বলছে, যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রস্তাবটি মন্ত্রিসভায় ১০-১ ভোটে পাস হয়।
এর আগে, প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু যুদ্ধবিরতি নিয়ে তার অবস্থান ব্যাখ্যা করেন। তিনি বলেন, ইসরায়েল হিজবুল্লাহর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি করেছে এবং এখন গাজায় হামাস যোদ্ধাদের বিরুদ্ধে এবং ইরানের বিরুদ্ধে মনোনিবেশ করতে পারবে।
নেতানিয়াহু হুঁশিয়ারি দেন, সম্ভাব্য চুক্তি লঙ্ঘন করলে হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে কঠোর আঘাত হানা হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহর মধ্যকার এ যুদ্ধবিরতির পরিকল্পনাকে ‘সুখবর’ হিসেবে দেখছেন।
বাইডেন আরও বলেন, ইসরায়েল দক্ষিণ লেবাননে হিজবুল্লাহর অবকাঠামো ধ্বংস করে দিয়েছে। তিনি যোগ করেন, চুক্তিটি ‘স্থিতিশীল সংঘাতবিরতি’ নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে করা হয়েছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, পরবর্তী ৬০ দিনের মধ্যে লেবানন সেনাবাহিনী ‘নিজেদের ভূখণ্ডের নিয়ন্ত্রণ নেবে। ’ বাইডেন আরও যোগ করেন, চুক্তি ভঙ্গ হলে ইসরায়েলের ‘আত্মরক্ষার অধিকার’ বজায় থাকবে।
হিজবুল্লাহ-ইসরায়েলের মধ্যকার যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনেকটা দুর্বল এবং তা রক্ষা করা কঠিন হবে বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
ইসরায়েলের সাবেক রাষ্ট্রদূত এবং কনসাল জেনারেল অ্যালন পিঙ্কাস বলেছেন, নেতানিয়াহুর যুদ্ধবিরতির ঘোষণা ‘খুবই ভঙ্গুর’ মনে হচ্ছে, কারণ এটি ‘দীর্ঘ সময় ধরে রক্ষা করা এবং বজায় রাখা খুবই কঠিন’ বলে মনে হচ্ছে।
তিনি আল জাজিরাকে বলেন, চুক্তিতে থাকা শর্তগুলো ‘অপ্রয়োগযোগ্য’।
ধারণা করা হচ্ছে, সেনাবাহিনী লেবাননে অস্ত্র উৎপাদন, বিক্রয় এবং স্থানান্তর পর্যবেক্ষণ করবে – এবং এটি একটি অসম্ভব বিষয়, বলেন পিঙ্কাস। তিনি বলেন, আমরা সবাই জানি, লেবানন সেনাবাহিনী সবসময় হিজবুল্লাহর সঙ্গে সংঘাত এড়িয়ে চলেছে।
গত বছরের অক্টোবরে গাজায় যুদ্ধ শুরু করে ইসরায়েল। তখন থেকেই লেবাননের সঙ্গে সংঘাত শুরু হতে থাকে ইসরায়েলের। গত কয়েক মাসে সেই সংঘাত চরমে ওঠে।
ইসরায়েল লেবাননে নজিরবিহীন হামলা চালাতে শুরু করে। গাজা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ইসরায়েলি হামলায় লেবাননে এ পর্যন্ত তিন হাজার ৮২৩ জনের প্রাণ গেছে। আহত হয়েছেন অন্তত ১৫ হাজার ৮৫৯ জন। দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এমন তথ্য জানায়।