Main Logo
আপডেট : ৫ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ০৬:৫২

তহবিল সংগ্রহে ডাকাতিতে নেমেছে জেএমবি

অনলাইন ডেস্ক
তহবিল সংগ্রহে ডাকাতিতে নেমেছে জেএমবি


তহবিল সংগ্রহে ডাকাতিতে নেমেছেন নিষিদ্ধঘোষিত জঙ্গি সংগঠন জামাআতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের (জেএমবি) সদস্যরা। র‌্যাব বলছে, তাঁরা গত শুক্রবার রাতে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে ময়মনসিংহের খাগডহর এলাকা থেকে জেএমবির ডাকাত দলের চার সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছেন, যাঁরা আর্থিক প্রতিষ্ঠান, বেসরকারি সংস্থা (এনজিও) ও সোনার দোকানকে ‘টার্গেট’ করেছিলেন। 

এ গ্রেপ্তারের ঘটনা জানাতে গতকাল শনিবার ময়মনসিংহে র‌্যাব-১৪–এর কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। র‍্যাব সদর দপ্তরের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক খন্দকার আল মঈন বলেন, আবার সংগঠিত হয়ে নাশকতার পরিকল্পনা করছে জেএমবি। এ জন্য তাদের অর্থের প্রয়োজন। অর্থ জোগাতে ডাকাতি করে তহবিল সংগ্রহের পরিকল্পনা করছিল তারা। গ্রেপ্তার জেএমবির সদস্যরা হলেন জুলহাস উদ্দিন ওরফে কাদেরী ওরফে মেহেদি, রোবায়েদ আলম ওরফে রুব, আলাল ওরফে ইসহাক ও আবু আইয়ুব ওরফে খালিদ। র‌্যাব বলছে, গ্রেপ্তারের সময় তাঁদের কাছ থেকে গুলিভর্তি একটি বিদেশি রিভলবার, একটি ম্যাগাজিন, তিনটি গুলি, তিনটি চাপাতিসহ দেশীয় অস্ত্র, আটটি বোমাসদৃশ বস্তু, দরজা ও তালা ভাঙার বিভিন্ন সরঞ্জাম এবং একটি ইঞ্জিনচালিত নৌকা জব্দ করা হয়।জঙ্গি সংগঠন জেএমবির প্রতিষ্ঠা জঙ্গিনেতা শায়খ আবদুর রহমানের হাত ধরে, ১৯৯৮ সালে। বেশ কিছু নাশকতার ঘটনা ঘটানোর পর তারা ২০০৫ সালের আগস্টে দেশজুড়ে ৩০০ জায়গায় একযোগে ৫০০টি বোমা বিস্ফোরণ ঘটায়। পরে র‌্যাবের অভিযানে শায়খ আবদুর রহমান ও ‘বাংলা ভাই’ নামে পরিচিত সিদ্দিকুর রহমানসহ জেএমবির শীর্ষ নেতারা গ্রেপ্তার হন। বিচারের পর তাঁদের ফাঁসি হয়।

বিজ্ঞাপন

শীর্ষস্থানীয় নেতাদের মৃত্যুর পর জেএমবি নিষ্ক্রিয় ছিল। ২০১৬ সালে এসে কয়েকটি প্রকাশ্য হত্যাকাণ্ড ঘটায় সংগঠনটি। এখন আবার জেএমবি সদস্যরা সক্রিয় হওয়ার চেষ্টা করছেন বলে জানিয়েছে র‌্যাব। অর্থ সংগ্রহে তাঁরা ডাকাতি করছেন।

‌র‌্যাবের সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, সাম্প্রতিক কালে ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইল, সিরাজগঞ্জ ও জামালপুরের জঙ্গি সদস্যদের গতিবিধির ওপর গোয়েন্দা নজরদারি করে জেএমবির এমন একটি ডাকাত দলের সন্ধান পাওয়া যায়। এ কাজের জন্য জেএমবি ১৫ জনের একটি সংঘবদ্ধ দল গঠন করেছে। পরিকল্পনা বাস্তবায়নে এসব সম্ভাব্য লক্ষ্য ঘুরেও দেখেছিল (রেকি করা) জঙ্গিরা।

র‌্যাবের কর্মকর্তা খন্দকার আল মঈন বলেন, ডাকাতির জন্য জঙ্গিরা জল ও স্থলপথকে সমন্বয় করে নৌকা, মোটরসাইকেল ও গাড়ি প্রস্তুত করেছিল। ডাকাতির সময় পাহারা এবং দরজা, তালা ভাঙাসহ অন্যান্য কাজে নিজেদের মধ্যে দায়িত্ব ভাগাভাগি করে নিয়েছিল। ডাকাতি শেষে টাকা ময়মনসিংহের অন্য আরেকটি দলের কাছে হস্তান্তরের পরিকল্পনাও ছিল তাদের।

র‌্যাব জানায়, চার জঙ্গির মধ্যে জুলহাস ওরফে কাদেরীর বাড়ি ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা উপজেলায়। তিনি বাংলা ভাইসহ জেএমবির উচ্চপর্যায়ের নেতাদের সংস্পর্শে ছিলেন। বাকিরা জেএমবিকে আবার সংগঠিত করার উদ্দেশ্যে দলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ কাজ করেন। আটক জঙ্গিদের বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি চলছে।

এই জঙ্গিরা এর আগে সাভার, আশুলিয়া ও দিনাজপুরে ডাকাতি করেছিল বলেও জানায় র‌্যাব। তারা বলেছে, আটকের পর জিজ্ঞাসাবাদে চার জেএমবি সদস্য ডাকাতির কথা স্বীকার করেছেন। গ্রেপ্তার চার আসামির মধ্যে জুলহাস ২০০৭ থেকে ২০০৯ পর্যন্ত একটি মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করেছেন। রোবায়েতও কক্সবাজারের টেকনাফে শিক্ষকতা করতেন। সেখানে শিক্ষকতার ছদ্মবেশে জঙ্গিবাদ ছড়াতেন। আইয়ুব সর্বশেষ উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় অটোরিকশাচালকদের জঙ্গিবাদে নেওয়ার চেষ্টা করছিলেন। ইসহাক ছিলেন জুলহাসের সহযোগী। ডাকাতির পরিকল্পনায় তাঁর দায়িত্ব ছিল নৌকা চালানো

উপরে