Main Logo
আপডেট : ২১ নভেম্বর, ২০২৩ ১৩:৪৯

হরতাল-অবরোধ-সমাবেশ

২৪ দিনে গড়ে ৭ যানবাহনে অগ্নিসংযোগ, গাজীপুর-বগুড়ায় বেশি

নিজস্ব প্রতিবেদক

২৪ দিনে গড়ে ৭ যানবাহনে অগ্নিসংযোগ, গাজীপুর-বগুড়ায় বেশি

গত ২৮ অক্টোবর থেকে ২০ নভেম্বর পর্যন্ত ২৪ দিনে বিএনপি-জামায়াতসহ সমমনা দলগুলোর হরতাল-অবরোধ ও সমাবেশকে কেন্দ্র করে সারাদেশে ১৯৭টি যানবাহন ও স্থাপনায় অগ্নিসংযোগের সংবাদ পেয়েছে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স। এই সময়ে গড়ে প্রতিদিন প্রায় সাতটি যানবাহনে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে গড়ে প্রতিদিন প্রায় পাঁচটি করে বাসে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। মঙ্গলবার (২১ নভেম্বর) ফায়ার সার্ভিস মিডিয়া সেলের কর্মকর্তা তালহা বিন জসিম এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, ২৮ অক্টোবর থেকে ২০ নভেম্বর পর্যন্ত দিনে গড়ে সাতটি যানবাহনে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে দিনে গড়ে প্রায় পাঁচটি করে বাসে আগুনের ঘটনা ঘটেছে। ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে আগুনের ঘটনা বেশি। উত্তর সিটির মধ্যে মিরপুর এলাকায় সবচেয়ে বেশি। এই সময়ে মোট ৩৪ জেলায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। বাকি ৩০টি জেলায় আগুনের ঘটনা ঘটেনি।

তিনি আরও বলেন, দেশের ৬০টি উপজেলায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। বাকি ৪৩৫টি উপজেলায় কোনো অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেনি। জেলা হিসেবে গাজীপুরে, উপজেলা হিসেবে বগুড়া সদরে আগুনের ঘটনা সবচেয়ে বেশি।

এসব আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের ৩৪১টি ইউনিট ও এক হাজার ৮৮৮ জন জনবল কাজ করেছেন বলেও জানান তালহা বিন জসিম।

তিনি জানান, ২৮ অক্টোবর ২৯টি, ২৯ অক্টোবর ১৯টি, ৩১ অক্টোবর ১২টি, ১ নভেম্বর ১৪টি, ২ নভেম্বর ৭টি, ৩ নভেম্বর ০টি, ৪ নভেম্বর ৬টি, ৫ নভেম্বর ১৩টি, ৬ নভেম্বর ১৩টি, ৭ নভেম্বর ২টি, ৮ নভেম্বর ৯টি, ৯ নভেম্বর ৭টি, ১০ নভেম্বর ২টি, ১১ নভেম্বর ৭টি, ১২ নভেম্বর ৭টি, ১৩ নভেম্বর ৮টি, ১৪ নভেম্বর ৪টি, ১৫ নভেম্বর ৬টি, ১৬ নভেম্বর ৭টি, ১৭ নভেম্বর ০টি, ১৮ নভেম্বর ৬টি, ১৯ নভেম্বর ১৩টি, ২০ নভেম্বর ৬টি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।

২৮ অক্টোবর থেকে ২০ নভেম্বর পর্যন্ত উচ্ছৃঙ্খল জনতার আগুনে ১৮৫টি যানবাহন ও ১৫টি স্থাপনা পুড়ে যায়। যানবাহনের মধ্যে বাস ১১৮টি, ট্রাক ২৬টি, কাভার্ড ভ্যান ১৩টি, মোটরসাইকেল ৮টি, প্রাইভেটকার ২টি, মাইক্রোবাস ৩টি, পিকআপ ৩টি, সিএনজি ৩টি, ট্রেন ২টি, নছিমন ১টি, লেগুনা ৩টি, ফায়ার সার্ভিসের পানিবাহী গাড়ি ১টি, পুলিশের গাড়ি ১টি, অ্যাম্বুলেন্স ১টি, বিএনপি অফিস ৫টি, আওয়ামী লীগ অফিস ১টি, পুলিশ বক্স ১টি, কাউন্সিলর অফিস ১টি, বিদ্যুৎ অফিস ২টি, বাস কাউন্টার ১টি, শোরুম ২টি আরও ২টি স্থাপনা পুড়ে যায়।

ফায়ার সার্ভিসের পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ২৮ অক্টোবর থেকে ২০ নভেম্বর পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে ঢাকা সিটি করপোরেশন এলাকায়। এছাড়া দেশের ৩৪টি জেলায় আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটে। বাকি ৩০ জেলায় কোনো অগ্নিসংযোগের সংবাদ পায়নি ফায়ার সার্ভিস।

পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ঢাকা সিটিতে ৯৫টি, ঢাকা বিভাগে ৩৭টি, চট্টগ্রাম বিভাগে ২২টি, রাজশাহী বিভাগে ২৪টি, বরিশাল বিভাগে ৭টি, রংপুর বিভাগে ৭টি, খুলনা বিভাগে ২টি, ময়মনসিংহ বিভাগে ২টি, সিলেট বিভাগে ১টি অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে।

ফায়ার সার্ভিসের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, ঢাকা সিটি করপোরেশনে অগ্নিসংযোগের ঘটনা বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকায় আগুনের ঘটনা সবচেয়ে বেশি ঘটেছে। ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে ৬০টি, ঢাকা উত্তর সিটিতে ৩৫টি আগুনের ঘটনা ঘটে।

এলাকাভিত্তিক পর্যালোচনায় দেখা গেছে, মিরপুরে এলাকায় আগুনের ঘটনা সবচেয়ে বেশি। মিরপুর এলাকায় ১৭টি, গুলিস্তানে ৯টি, নয়াপল্টন-কাকরাইল এলাকায় ৭টি, খিলগাঁও-মুগদা এলাকায় ৭টি, পোস্তাগোলা-যাত্রাবাড়ী এলাকায় ৭টি, মতিঝিল-আরামবাগ এলাকায় ৫টি, মোহাম্মদ ৪টি, বারিধারা ৪টি করে আগুনের ঘটনা ঘটে।

এদিকে জেলা ভিত্তিক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, গাজীপুর জেলায় সবচেয়ে বেশি অগ্নিসংযোগ করেছে দুর্বৃত্তরা। গাজীপুরে ১৬টি, চট্টগ্রামে ১৪টি, বগুড়া ১৩টি, নারায়ণগঞ্জ ৬টি, মানিকগঞ্জ ৪টি, ফরিদপুর ৪টি, লালমনিরহাট ৪টি, নাটোর ৪টি করে আগুনের সংবাদ পায় ফায়ার সার্ভিস।

উপজেলাভিত্তিক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, বগুড়া সদর উপজেলায় অগ্নিসংযোগের ঘটনা সবচেয়ে বেশি। বগুড়া সদরে ৮টি, গাজীপুর সদরে ৬টি, নারায়ণগঞ্জ সদরে ৪টি, ফেনী সদরে ৩টি, কালিয়াকৈর উপজেলায় ৪টি করে আগুনের ঘটনা ঘটে।

অগ্নিনির্বাপণ কার্যক্রমে সারাদেশে ফায়ার সার্ভিসের দুই কর্মী ও তিনজন সাধারণ মানুষকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। তবে এসব অগ্নিকাণ্ডে নিহতের কোনো ঘটনা ঘটেনি।

 

উপরে