অর্থপাচার: এনু-রূপনের ৭ বছরের কারাদণ্ড
বংশাল থানার মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের মামলায় ঢাকা ওয়ান্ডারার্স ক্লাবের পরিচালক ও গেণ্ডারিয়া থানা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি এনামুল হক এনু এবং তার ভাই থানা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রুপন ভূঁইয়াকে ৭ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার (২৮ নভেম্বর) ঢাকার বিশেষ জজ-৮ এর বিচারক মো. বদরুল আলম ভূঞা এ রায় দেন।
অপরাধ প্রমাণিত না হওয়ায় দণ্ডপ্রাপ্ত অন্য আসামি শহীদুল হক, মো. রশিদুল হক ভুঁইয়া, মো. মেরাজুল হক শিপলু, জয় গোপাল সরকার, পাভেল রহমান ও ভুলু চন্দ্র দেবকে খালাস দেন আদালত।
সংশ্লিষ্ট আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) আমির হোসেন এ তথ্য জানান। আসামিদের মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২ (সংশোধনী ২০১৫) এর ৪(২) ধারায় এ সাজা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া তাদের ৫২ কোটি টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও জব্দকৃত টাকা রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্তের আদেশ দেন আদালত।
২০২০ সালের ৩১ আগস্ট সিআইডির অর্গানাইজড ক্রাইম স্কোয়াডের পরিদর্শক মো. মেহেদী মাকসুদ বংশাল থানায় মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় ১১ জনকে আসামি করা হয়। তদন্ত শেষে তিনজনকে অব্যাহতি দিয়ে আটজনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করে সিআইডি। মামলার বিচারকালে ১০ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন আদালত।
২০২০ সালের ১৩ জানুয়ারি ভোরে ক্যাসিনোকাণ্ডে জড়িত থাকায় এনু-রুপনকে ঢাকার কেরানীগঞ্জ থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এ সময় তাদের কাছ থেকে ২২টি জমির দলিল, পাঁচটি গাড়ির কাগজপত্র ও ৯১টি ব্যাংক হিসাবে ১৯ কোটি টাকা থাকার প্রমাণ পাওয়া যায়। এছাড়াও তাদের কাছ থেকে নগদ ৪০ লাখ টাকা ও ১২টি মোবাইল জব্দ করা হয়।
গেণ্ডারিয়া এলাকার ত্রাস এ দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জন ও অর্থ পাচারসহ ১২টি মামলা দায়ের করা হয়। বহিষ্কার করা হয় আওয়ামী লীগ থেকেও।
২০২০ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি দিবাগত রাত থেকে পরদিন সকাল পর্যন্ত রাজধানীর পুরান ঢাকায় ওয়ারীর লালমোহন সাহা স্ট্রিট এলাকায় ক্যাসিনো–কাণ্ডে জড়িত দুই ভাই এনামুল হক ও রূপন ভূঁইয়ার বাসায় র্যাবের একটি দল অভিযান চালায়। পরে র্যাব-৩ এর অধিনায়ক (সিও) লেফটেন্যান্ট কর্নেল রকিবুল হাসান সংবাদ সম্মেলনে জানান, অভিযানে দুই ভাইয়ের বাসায় ৫টি সিন্দুক থেকে নগদ ২৬ কোটি ৫৫ লাখ ৬০০ টাকা উদ্ধার করা হয়। এর বাইরে ১ কেজি স্বর্ণালঙ্কার ও ৫ কোটি ১৫ লাখ টাকার এফডিআর পাওয়া যায়।
তিনি আরও বলেন, এছাড়া ৯ হাজার ৩০০ ইউএস ডলার, ১৭৪ মালয়েশিয়ান রিঙ্গিত, ১০৯৫ চাইনিজ রেনমিনবি, ৫৩৫০ ভারতীয় রূপি, ১৫৬০ থাই বাথ ও ১০০ দিরহাম আরব আমিরাতের মুদ্রা উদ্ধার করা হয়।
এর আগে ২০২২ সালের ২৫ এপ্রিল ওয়ারী থানার অর্থ পাচারের প্রথম মামলায় এনু-রুপনসহ ১১ জনকে সাত বছর করে কারাদণ্ড দেন আদালত। এটি তাদের বিরুদ্ধে একই অপরাধে দ্বিতীয় রায়।