আপডেট : ৩ ডিসেম্বর, ২০২৩ ১৬:৪২
তিনি অবলীলায় পরিচয় দিতেন সেনা অফিসারের
নিজস্ব প্রতিবেদক
তার নাম হাবিবুল্লাহ। তেমন কিছু করেন না। কিন্তু অবলীলায় সেনা অফিসার হিসেবে পরিচয় দিতেন। এ ছাড়া নৌ বাহিনীর কর্মকর্তা বলেও পরিচয় দিতেন তিনি। আর এ পরিচয় দিয়ে প্রতারণা করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। অবশেষে প্রতারক চক্রের মূলহোতাকে গ্রেফতার করেছে পিবিআই নেত্রকোণা জেলা। গতকাল ২ ডিসেম্বর রাত ২ টার দিকে সিলেট বাস স্ট্যান্ড থেকে প্রতারক চক্রের মূলহোতা হাবিবুল্লাহকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তার কাছ থেকে সেনাবাহিনীর লেফটেন্যান্ট ও বিমানবাহিনীর সার্জেন্ট পদের ২টি ভুয়া আইডি কার্ড জব্দ করা হয়েছে।
হাবিবুল্লাহ বাগেরহাট জেলায় থাকাবস্থায় বিমানবাহিনীর অফিসার পরিচয় দিয়ে নৌ-বাহিনীর অফিস সহায়ক কাম কম্পিউটার অপারেটর পদে নিয়োগ দেওয়ার কথা বলে নেত্রকোণার আটপাড়া থানার ৫ জন ভুক্তভোগীর কাছ থেকে চলতি বছরের জানুয়ারী মাসে প্রায় ৩০ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়। পরবর্তীতে হাবিবুল্লাহ তার প্রথম স্ত্রীর বড় ভাই মহিবুল্লাহ ও তার ছোট ভাই মহিউদ্দীন, সাং-তফালবাড়ী, থানা-সরনখোলা, জেলা-বাগেরহাট তার মাধ্যমে চৌধুরী আবাসিক হোটেল, সোনাডাঙ্গা বাইপাস খুলনায় ভুক্তভোগী ১। আরিফ খান, পিতা-মোখলেছ উদ্দীন, ২। হাবিবুর রহমান, পিতা-আরাধন, ৩। মোঃ ফরহাদ মিয়া, পিতা-আব্দুল মুন্নাফ, ৪। সৌরভ, পিতা-সংগ্রাম, ৫। রাকিব, পিতা-শাহীন, আটপাড়া নেত্রকোণাদের নৌ-বাহিনীর অফিস সহায়ক কাম-কম্পিউটার অপারেটর পদে ভূয়া লিখিত পরীক্ষা নেয় এবং পরীক্ষা শেষে উক্ত হোটেলেই তাদেরকে ভূয়া নিয়োগপত্র প্রদান করে। প্রতারণার বিষয়টি বুঝতে পেরে গত ২৭ জুলাই ২০২৩ খ্রিঃ তারিখে ভুক্তভোগী হাবিবুর রহমানের পিতা আরাধন পিবিআই, নেত্রকোণা জেলায় ঘটনার বিষয়ে লিখিত অভিযোগ করেন। তার অভিযোগের প্রেক্ষিতে পিবিআই নেত্রকোণা জেলা ঘটনার সত্যতা যাচাইয়ে প্রাথমিক অনুসন্ধান শুরু করে।
পিবিআই প্রাধান অতিরিক্ত আইজিপি জনাব বনজ কুমার মজুমদারের দিক নির্দেশনায় নেত্রকোনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ শাহীনুর কবিরের সার্বিক সহযোগিতায় এসআই ফারুক হোসেন ঘটনার সত্যতা যাচাইয়ে প্রাথমিক অনুসন্ধান করেন। প্রাথমিক অনুসন্ধানে ঘটনার সত্যতা ওঠে আসে এবং এর প্রেক্ষিতে প্রতারণা ঘটনায় আটপাড়া থানার মামলা নং-১৯, তারিখ-২৭/০৭/২০২৩ খ্রিঃ রুজু হয়। পরবর্তীতে উক্ত থানায় আরও ০২ টি প্রতারণা মামলা রুজু হয় (আটপাড়া থানার মামলা নং-১৩ এবং ১৪, তারিখ-৩১/০৮/২০২৩ খ্রিঃ) রুজু হয়। মামলা রুজু হওয়ার পর থেকে ঘটনার সাথে জড়িত আসামী আত্নগোপন করেন। পিবিআই নেত্রকোণা জেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এসআই ফারুক হোসেন এর নেতৃত্বে পিবিআই নেত্রকোণা জেলার একটি চৌকস টীম খুলনায় ও সিলেটে অভিযান চালিয়ে গত ০২-১২-২০২৩ তারিখ দিবাগত রাত অনুমান ০২:০০ টায় সিলেট বাস স্ট্যান্ড থেকে প্রতারক চক্রের মূলহোতা হাবিবুল্লাহকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তার হেফাজতে থাকা সেনাবাহিনীর লেফটেন্যান্ট ও বিমানবাহিনীর সার্জেন্ট পদের ২টা ভুয়া আইডি কার্ড বিধি মোতাবেক জব্দ করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামী হাবিবুল্লাহ প্রতারণামূলকভাবে ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে ৩০ লক্ষাধিক টাকা গ্রহনের বিষয়টি স্বীকার করে।
এ বিষয়ে পিবিআই নেত্রকোণা জেলার ইউনিট ইনচার্জ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ শাহীনুর কবির বলেন “আসামী হাবিবুল্লাহ দীর্ঘদিন যাবৎ পলাতক ছিল। সে তার ২য় স্ত্রী রাবেয়া বসরীকে নিয়ে খুলনার বিভিন্ন জায়গায় আত্মগোপনে ছিল। গত ০২ ডিসেম্বর রাতে সে সিলেটে আসলে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে আমরা তাকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হই। তাকে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।”