বিএনপি ভোটে এলে ‘নাশকতা’ হতো না: ইসি আলমগীর
নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর বলেছেন, বিএনপি ভোটে এলে নির্বাচনে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা হতো। তারা ভোট বর্জনে শান্তিপূর্ণ আহ্বান জানাচ্ছে। তবুও অগ্নিসংযোগ, রেল লাইন কেটে ফেলার মতো ঘটনা ঘটছে। তারা নির্বাচনে এলে এসব হতো না।
রোববার (২৪ ডিসেম্বর) নির্বাচন ভবনের নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
নির্বাচন কমিশনার আলমগীর বলেন, সবাই এলে আরও ব্যালেন্সড নির্বাচন হতো। বিভিন্ন দলের অংশগ্রহণে নির্বাচনে ভারসাম্য থাকে। একটা দলীয় নির্বাচন হচ্ছে এটা বলা যাবে না। এটা ঠিক বিএনপির মতো বড় দল অংশ নিচ্ছে না। তারা এলে আরও অনেক ভালো, ব্যালেন্সড হতো। তারা শুধু আসেই নাই, তারা বাধাও দিয়ে যাচ্ছেন। তারা আবার শান্তিপূর্ণ আহ্বানও করছে নির্বাচন বর্জনের। এটা যে কেউ করতে পারে।
তিনি বলেন, নির্বাচনে বাধা দেওয়ার জন্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী সেদিকে ব্যস্ত আছে। বিএনপি এলে তো সেটা হতো না। বিভিন্ন জায়গায় বাসে আগুন দিচ্ছে, রেল লাইন কেটে দিচ্ছে, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলো ওইসব দিকে সময় দিচ্ছে। বিএনপি এলে এ সময়টাতো তাদের দিতে হতো না। তারা ভোটের ব্যবস্থাপনায় সময় দিতে পারতো।
সাবেক এই ইসি সচিব বলেন, তিনটা বড় দল ধরলে দুটো বড় দল নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। এখন সবাই ভোট দিতে এলে নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হবে।
ফেয়ার নির্বাচন কাকে দেখাচ্ছেন বিদেশকে এমন প্রশ্নের জবাবে নির্বাচন কমিশনার আলমগীর বলেন, কোনো আসনেই কিন্তু প্রার্থী কম নেই। প্রত্যেক প্রার্থীই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। কাজেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা নেই সেটা তো বলা যাবে না। সুষ্ঠু নির্বাচনের দায়িত্ব বোধ থেকেই আমরা করছি। কাউকে দেখানোর জন্য নয়। জনগণ যাকে ভোট দেবেন তিনিই সংসদে যাবেন।
অন্য এক প্রশ্নের জবাবে নির্বাচন কমিশনার আলমগীর বলেন, আমাদের অনেকগুলো পরিকল্পনা আছে। এই মুহূর্তে বলছি না। সব পরিকল্পনা তো আর ফাঁস করা যায় না। আগে বলার সুযোগ নেই। আমরা অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা নেবো।
দুইশ’র ওপরে শোকজ দিয়েছেন কোনো দৃশ্যমান ব্যবস্থা নেই, কেন এই নিরবতা? কোনো কোনো প্রার্থীকে একাধিকবার শোকজ দিয়েছেন ব্যবস্থা নেই, গতকাল একজন কমিশনার বললেন প্রার্থিতা বাতিলের মতো ব্যবস্থা আসতে পারে, ব্যবস্থা নিচ্ছেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে নির্বাচন কমিশনার আলমগীর বলেন, শোকজ রিটার্নিং অফিসার, সহকারী রিটার্নিং অফিসার, নির্বাচনি তদন্ত কমিটি তারা করেন। এটা নির্ভর করে তাদের ওখানে পরিস্থিতির ওপর। আমরা কিন্তু করি না। এটা মাঠে করা হয়। নির্বাচনি তদন্ত কমিটি আমাদের জানায়। কোনো কোনো ক্ষেত্রে আর্থিক জরিমানা করা হয়েছে, কোনো কোনো ক্ষেত্রে মামলা দিয়ে জেলেও পাঠানো হয়েছে। আমাদের নিয়ম অনুযায়ী যেটা আছে সেইটা করছে। আমাদের ওখান থেকে একজন প্রার্থীকে (আমির হোসেন আমু) তলব করা হয়েছিল। তিনি হাজির হয়ে ব্যাখ্যা দিয়েছেন। তিনি যে বক্তব্য দিয়েছেন, তা যে সব ভিডিও এসেছে তার সঙ্গে মিল নেই। তিনি ভবিষ্যতে এ বিষয়ে সতর্ক থাকার কথা জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, প্রার্থিতা বাতিলের সিদ্ধান্ত হয়নি। সিদ্ধান্ত হলে আমরা বাতিল করতে পারি। কোনো কোনো ক্ষেত্রে প্রার্থিতা বাতিল হয় তা আইনে বলা আছে। এটা বলতে গেলে অনেক সময় লাগবে।
কুমিল্লা-৬ আসনের প্রার্থী আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহারকে তিনটা শোকজ করেছেন, সর্বশেষ তদন্ত রিপোর্ট চেয়েছেন, তার অগ্রগতি কী এমন প্রশ্নের জবাবে এ নির্বাচন কমিশনার বলেন, রিপোর্ট পাঠাতে ২৪ ঘণ্টা সময় দেওয়া হয়েছিল। সেটা এখনও হয়নি। প্রতিবেদনেই উঠে আসবে মাঠে কী রকম শোকজ করা হয়েছিল। বিচার বিশ্লেষণ করবো তারপর সিদ্ধান্ত নেবো। কার প্রার্থিতা বাতিল করবো তা তো অগ্রিম বলা যাবে না।
নির্বাচন কমিশনার মো. আনিছুর রহমান শনিবার (২৩ ডিসেম্বর) বলেছেন, প্রার্থিতা বাতিল হবে-বিষয়টি সামনে আনলে মো. আলমগীর বলেন, তিনিই বলতে পারবেন। কারণ আমরা তো রিপোর্ট এখনও পাইনি। রিপোর্ট আসার পর বলতে পারবো। এরপর তাকেও (অভিযুক্তকে) শুনতে হবে। তার বক্তব্যও যাচাই-বাছাই করা হবে। প্রকাশ্যে হামলা যেখানে হচ্ছে সেখানে তো মামলা হচ্ছে। আগামী ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।