নকল হাতেই তৈরি করে ৪০০ বোমা, গ্রেফতার যুবদল নেতা ‘বোমা বিশেষজ্ঞ’ মুকিত
নিজের ডান হাতটি না থাকলেও সেখানে প্লাস্টিকের নকল হাত লাগিয়ে তৈরি করেছে প্রায় ৪০০ বোমা। সেই বোমায় ২৮ অক্টোবর ঢাকা শহরে সমাবেশের নামে পুলিশ হত্যাসহ তান্ডব চালায় বিএনপি। সেই ‘বোমা বিশেষজ্ঞ’ মুকিত ওরফে বোমা মাওলানাকে গ্রেফতার করেছে ডিএমপির-গোয়েন্দা পুলিশ।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ, বিপিএম (বার), পিপিএম (বার)।
অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার বলেন, গ্রেফতারকৃত মুকিত আলিয়া মাদ্রাসা ছাত্রদলের সহ-সভাপতি ও সভাপতি ছিল। পরবর্তী সময়ে সে ছাত্রদল মহানগর দক্ষিণের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়। ২০১৩-১৪ সালে বোমা বানাতে গিয়ে তার ডান হাতের কব্জি উড়ে যায়। দলীয় আনুগত্য ও উগ্র-সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের কারণে ২০২৩ সালের জুলাই মাসে তাকে মহানগর দক্ষিণ যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মনোনীত করেন তারেক জিয়া।
তিনি আরো বলেন, গত ২৭ অক্টোবর রাতে মতিঝিল ব্যাংক কলোনিতে যুবদল নেতা সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর পাঠানো ১০ কেজি গান পাউডার রবিউল ইসলাম নয়নের নিকট থেকে মুকিত গ্রহণ করে । এই গান পাউডার দিয়ে কয়েক দফায় প্রায় চারশ হাত বোমা তৈরি করে সে। সেই বোমা বিভিন্ন থানা যুবদলের আহবায়ক ও সদস্য সচিবদেরকে সরবরাহ করে। তার সরবরাহকৃত ২০টি হাত বোমা থেকে ১টি হাত বোমা সোহেল খান ও অভি আজাদ চৌধুরীর নির্দেশে ঢাকা মহানগর জজ কোর্ট আদালতের প্রাঙ্গনে বিস্ফোরণ ঘটায় ওয়ারীর আব্দুল হামিদ ভূঁইয়া ও তার স্ত্রী হাফসা আক্তার।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার বলেন, গত ২৮ শে অক্টোবর এবং পরবর্তী হরতাল, অবরোধে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ এবং বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আতঙ্ক ছড়ানোর কাজে মহানগর যুবদল দক্ষিণে ৮টি টিম গঠন করে। কেন্দ্রীয় যুবদল ও মহানগর যুবদলের সাথে সমন্বয় করে বিভিন্ন জায়গা থেকে গান পাউডার সংগ্রহ করে তা দিয়ে বোমা বানিয়ে বিস্ফোরণ ঘটানো, ওয়ার্ড এবং থানা পর্যায়ের যুবদলের কর্মীদেরকে দিয়ে যানবাহনে আগুন দেয়ার কমপক্ষে ৬টি ঘটনার সমন্বয় করেছে মুকিত। সে নেতাকর্মীদের পরিবারকে আর্থিকভাবে সহযোগিতা করা ছাড়াও জেলখানায় ওয়েলফেয়ার দেখার কিছু অংশের সমন্বয় সে বিশ্বস্ততার সাথে করে থাকে। এছাড়া প্রতিটি যানবাহনে আগুন দেয়ার জন্য ১০ হাজার টাকা, বিস্ফোরণ ঘটানো ও মশাল মিছিলের জন্য ৫ হাজার টাকা করে দেয়া হয় মহানগর যুবদলের পক্ষ থেকে। গত ১৬ই ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবসে বিএনপি’র কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সে প্রায় ৬/৭ হাজার লোকের মিছিলে নেতৃত্ব দেয়।
গ্রেফতারকৃত মুকিতের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে সহিংসতার সাথে জড়িত মধ্য সারির বেশকিছু নেতাকর্মীর নাম পরিচয় পাওয়া গিয়েছে, যাদেরকে খুব শীঘ্রই আইনের আওতায় আনা হবে মর্মে যোগ করেন পুলিশের এই গোয়েন্দা কর্মকর্তা।