'বিদেশি পর্যবেক্ষকরা যে কোন কেন্দ্রে যেতে পারবেন না'
বিবিসি বাংলা
রবিবার দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। শনিবার বাংলাদেশের সমস্ত পত্র পত্রিকাজুড়ে এ নিয়ে খবরাখবরই প্রাধান্য পেয়েছে। এছাড়া শুক্রবারের ট্রেনে অগ্নিকান্ডের ঘটনাটি প্রথম পাতায় এসেছে প্রায় সব পত্রিকার।
বিদেশি পর্যবেক্ষকরা যে কোন কেন্দ্রে যেতে পারবেন না – যুগান্তরের এই খবরে বলা হচ্ছে নিরাপত্তা এবং দূরত্বের কারণে বিদেশি পর্যবেক্ষরা চাইলেই যে কোন ভোটকেন্দ্র পর্যবেক্ষণ করতে পারবেন না।
পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন জানান সড়ক পথে হোটেল সোনারগাঁও থেকে দুই ঘন্টার দূরত্বে থাকা কেন্দ্রে যেতে পারবেন নিবন্ধিত পর্যবেক্ষকরা। এ ছাড়া ঢাকার বাইরে বিমানে যোগাযোগ আছে এমন জেলাগুলোতে তারা যেতে পারবেন। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ১২৭ জন বিদেশি পর্যবেক্ষক এবং ৭৩ জন সাংবাদিক ইসির নিবন্ধন পেয়েছেন।
রাত পোহালেই ভোট – দৈনিক কালবেলার শিরোনাম। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সার্বিক প্রস্তুতি শেষ। এখন শুধু ভোটের জন্য অপেক্ষা।
আগামীকাল রোববার সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত এ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ করা হবে। এর ৪৮ ঘণ্টা আগে প্রচার কার্যক্রম শেষ করার নিয়ম মেনেই গতকাল সকাল ৮টায় সারা দেশে সব ধরনের প্রচারের আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি হয়েছে। এর পরও নানাভাবে অনানুষ্ঠানিক প্রচার এবং পোলিং এজেন্ট চূড়ান্তকরণে প্রার্থীরা ব্যস্ত রয়েছেন।
কেন্দ্রে ভোটার আনা চ্যালেঞ্জ উৎকন্ঠার মধ্যেই প্রস্তুত ইসি – সমকালের প্রধান শিরোনাম। এতে বলা হচ্ছে বিরোধপূর্ণ রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে আগামীকাল রোববার অনুষ্ঠিত হচ্ছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত একটানা ভোট গ্রহণ করা হবে। আগেভাগে এ নির্বাচনে ফলাফল আঁচ করা গেলেও উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা রয়েই যাচ্ছে।
বিএনপিসহ সরকারবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো এ নির্বাচন বর্জন করেছে। আজ শনিবার থেকে তারা দেশজুড়ে ৪৮ ঘণ্টার হরতাল পালন করবে। গতকাল শুক্রবার রাত থেকেই দেশের বিভিন্ন স্থানে ভোটকেন্দ্রে ককটেল বিস্ফোরণ ও অগ্নিসংযোগের খবর পাওয়া গেছে। ট্রেনেও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি বাড়াতে স্বতন্ত্র (ডামি) প্রার্থী দাঁড় করানোসহ নানা কৌশল নিয়েছে। এক-তৃতীয়াংশ আসনে আওয়ামী লীগের এসব প্রার্থীই ব্যাপক প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে তোলার আভাস দিয়েছেন। ফলে এসব আসনে ব্যাপক উত্তেজনা বিরাজ করছে।
ইংরেজি দৈনিক ডেইলি সানের শিরোনাম - Nation goes to polls tomorrow amid fear, festivity অর্থাৎ ভয় আর উৎসবের মাঝেই কাল ভোট।
ভোটের এক চতুর্থাংশ কেন্দ্র ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ – দৈনিক সংবাদের প্রধান শিরোনাম। এতে বলা হয়, আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের এক চতুর্থাংশ কেন্দ্র ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। ‘অতি ঝুঁকিপূর্ণ’ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে ৫৩টি আসন। অন্যান্য আসনেও কমবেশি ‘অতি ঝুঁকিপূর্ণ’ কেন্দ্র রয়েছে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে এসব ‘ঝুঁকিপূর্ণ ও অতি ঝুঁকিপূর্ণ’ কেন্দ্রগুলোতে ‘বাড়তি’ নিরাপত্তা নেয়া হচ্ছে। এই কেন্দ্রগুলোকে ঘিরে থাকছে বিশেষ নজরদারিও। নির্বাচন কমিশন (ইসি) ও পুলিশের সূত্রগুলো এসব তথ্য নিশ্চিত করেছে। তবে ইসি এসব ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রকে ‘অতি গুরুত্বপূর্ণ’ বলছে।
ভোট নিয়ে উদ্বেগ প্রকৃত গণতান্ত্রিক নির্বাচনের আহবান – এএনএফআরইএলের বিবৃতি নিয়ে এমন শিরোনাম করেছে দেশ রুপান্তর। তারা লিখেছে বাংলাদেশে ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠেয় দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন নিয়ে গভীর উদ্বেগ জানিয়েছে এশিয়ান নেটওয়ার্ক ফর ফ্রি ইলেকশন (এএনএফআরইএল)।
এএনএফআরইএল বলেছে, তারা জোরালোভাবে বিশ্বাস করে, এই নির্বাচনে স্বচ্ছতা ও নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দ্বিতার ঘাটতি রয়েছে। এতে নির্বাচনী প্রক্রিয়ার বৈধতার জন্য অত্যাবশ্যক গণতন্ত্রের মূলনীতিসমূহ ও আন্তর্জাতিক নির্বাচনী মানদণ্ড অনুসৃত হচ্ছে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এএনএফআরইএলের মতে, নির্বাচনী প্রক্রিয়া অংশগ্রহণমূলক না হাওয়া এবং জবাবদিহির অভাবে এতে স্বচ্ছতা ও প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে ঘাটতি তৈরি হয়েছে।
এর ফলে বিরোধীদের দমন, রাজনৈতিক স্বাধীনতার সংকোচন, নিরপেক্ষ তথ্যে নাগরিকদের প্রবেশাধিকার সীমিত হওয়া এবং রাজনৈতিক সহিংসতা চলমান থাকার মতো চ্যালেঞ্জ দেখা দিয়েছে।
BNP-Jamaat plans enhanced street presence on 6-7 January – দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের খবরে বলা হয় আজ ও আগামীকাল নির্বাচনের দিন বিএনপি এবং জামায়েতে ইসলামী বড় সংখ্যক নেতা কর্মীদের রাস্তায় রাস্তায় আন্দোলনে আনতে চায়।
৭ই জানুয়ারির নির্বাচন বয়কট করে ৪৮ ঘন্টার হরতাল ডেকেছে বিএনপি। বিএনপি-জামায়াত সূত্রে জানা যায় তারা ভোটে বাধা দিতে চায় না বরং ভোটারদের বুঝিয়ে ভোটদিতে আসা থেকে বিরত রাখতে চায়, যাতে তাদের কেন্দ্রে কম ভোটার উপস্থিতির লক্ষ্য পূরণ হয়।
ছবির উৎস,BBC BANGLA
কঠোর নিরাপত্তা তবু সংশয় উত্তাপ – দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে যুগান্তরের শিরোনাম।
এতে বলা হয় নির্বাচনের মাঠে নেমেছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রায় আট লাখ সদস্য। পাশাপাশি রয়েছেন দুই হাজার নির্বাহী ও ৬৫৩ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট। ভোটগ্রহণ ঘিরে এমন নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলা হলেও মাঠ পর্যায়ে উত্তাপ ও সংশয় দুই-ই বিরাজ করছে। এর মধ্যেই দেশের বিভিন্ন স্থানে ভোটকেন্দ্রে হামলা ও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। অনেক স্থানে প্রতিপক্ষ প্রার্থী ও তাদের সমর্থকদের ভয় দেখানো, ক্যাম্প ভাঙচুরসহ নানা অভিযোগ রয়েছে।
নির্বাচনের বাইরে ট্রেনে অগ্নিকান্ডের ঘটনা গুরুত্ব পেয়েছে সবকয়টি জাতীয় পত্রিকায়।
সমকাল শিরোনাম করেছে ভোটের আগে নাশকতা ট্রেনে আগুন, নিহত ৪। বলা হয় জাতীয় সংসদ নির্বাচনের এক দিন আগে এবার রাজধানীর গোপীবাগ এলাকায় বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। শুক্রবার রাতের এ ঘটনায় কয়েকজন দগ্ধ হয়েছেন। তাদের মধ্যে চারজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এ সময় ফায়ার সার্ভিসের সাতটি ইউনিট গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে এর আগেই ট্রেনের চারটি কামরা পুড়ে গেছে।
ডেইলি স্টার লিখেছে 4 killed as moving train ‘set on fire’, খবরে বিস্তারিত বলা হচ্ছে গতরাতে গোপীবাগে বেনাপোল এক্সপ্রেসে অগ্নিকান্ডের ঘটনায় কমপক্ষে ৪ জন পুড়ে মারা গিয়েছে এবং বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে। গতরাত পর্যন্ত আগুন লাগার কারণ জানা যায় নি তবে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী জানায় এটা নাশকতা হতে পারে।
‘বাচ্চাসহ বউ পুড়ে গেছে বের হয়ে আর কী করব’ – কালের কন্ঠের এই শিরোনাম ধাক্কা দেবার মতো। বলা হয় জ্বলন্ত ট্রেনের জানালা দিয়ে বের হওয়ার চেষ্টা করছিলেন তিনি। পারলেন না। আটকে গেলেন জানালায়। বাইরে থেকে কিছু লোক মরিয়া হয়ে তাঁকে বের করার চেষ্টা চালান। সবই ব্যর্থ। জ্বলন্ত ট্রেনের আগুন গ্রাস করে তাঁকে।
জ্বলন্ত ট্রেন বেনাপোল এক্সপ্রেসের ওই যাত্রীকে উদ্ধার করতে এগিয়ে আসা মাসুদ রানা বলেন, ওই লোক বলছিলেন, ‘আমার বাচ্চাসহ বউ পুড়ে গেছে ভেতরে। আমারও ৯০ শতাংশ প্রায় পুড়ে গেছে। বের হয়ে আর কী করব।’ কথা শেষ করতে না করতেই তাঁর ঘাড়ের ওপর ট্রেনের জানালা ভেঙে পড়ে। তিনি আটকে যান। মৃত্যুর আগে এসব কথা বলে যান বেনাপোল এক্সপ্রেসে ট্রেনে আগুনে পুড়ে মারা যাওয়া চারজনের একজন।