‘বিরোধী হতে রাজি নয় স্বতন্ত্ররা’
বিবিসি বাংলা
‘বিরোধী হতে রাজি নয় স্বতন্ত্ররা’–দেশ রূপান্তর পত্রিকার প্রথম পাতার একটি খবরের শিরোনাম এটি। এতে বলা হয়, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের পর সবচেয়ে বেশি আসন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা পেলেও বিজয়ী স্বতন্ত্র প্রার্থীরা বিরোধী দলের আসনে বসতে রাজি নন।
প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, একাধিক প্রার্থী দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘সংসদে তারা আওয়ামী লীগের সঙ্গে থাকতে চান। তারা তো আওয়ামী লীগই। বিরোধী দলে কীভাবে বসবেন?’
তবে, আইন বিশেষজ্ঞদের মতে, স্বতন্ত্র প্রার্থীরা যদি সংসদে সরকারি দল আওয়ামী লীগে যোগ দিয়ে সরকারি দলের আসনেই বসতে চান, তাদের জন্য সেই সুযোগও আছে। তারা সরকারি দলে যোগ দিলেও তাদের সংসদ সদস্য পদ বাতিল হবে না।
তবে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের এমন ইচ্ছা পোষণের বিষয়টি নিয়ে আওয়ামী লীগের নেতাদের ভাষ্য, আইনে কী আছে, জটিলতা কোথায় আছে এগুলো যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে।
যদিও, এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মোহাম্মদ এ আরাফাত বলেন, “বিরোধী দলে জাতীয় পার্টি থাকবে।”
‘কারা হবে বিরোধী দল’– এটি সমকাল পত্রিকার প্রথম পাতার খবর। এতে বলা হয়েছে, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়ে গেলেও নিশ্চিত নয় যে কারা হবে আগামী সংসদের প্রধান বিরোধী দল।
এবারের নির্বাচনে দেশের অন্যতম প্রধান বড় রাজনৈতিক দল বিএনপি অংশগ্রহণ না করায় আগে থেকেই আওয়ামী লীগের বিজয় অনেকটা সুনিশ্চিত ছিল।
সেক্ষেত্রে, মানুষের প্রধান জিজ্ঞাসা ছিল, তাহলে কারা হতে যাচ্ছে বিরোধী দল?
কিন্তু ৭ই জানুয়ারির জাতীয় নির্বাচনে জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ে আসন সংখ্যার দিক থেকে স্বতন্ত্ররা এগিয়ে থাকায় এই প্রশ্নের উত্তর এখনো মিলছে না।
এদিকে, জাপা চেয়ারম্যান জি এম কাদেরকে বিরোধীদলীয় নেতা এবং সম্মানজনক সংখ্যক আসন নিয়ে ফের প্রধান বিরোধী দল বানানোর শর্ত পূরণের আশ্বাসে এই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছিল জাপা।
কিন্তু স্বতন্ত্রদের চেয়ে অনেক কম আসন পাওয়ায় জাপা বিরোধী দল হতে পারবে কিনা, তা স্পষ্ট নয়।
তবে, সংসদে বিরোধী দল কে হবে– প্রশ্নে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘সংসদ নেতা অর্থাৎ যিনি নতুন প্রধানমন্ত্রী হবেন, তিনিই এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবেন।’
‘BNP shelves plans for hartal, blockade for now’-এটি দ্য ডেইলি স্টার পত্রিকার পথম পাতার একটি প্রতিবেদন। এখানে বলা হয়েছে, নির্বাচনের ফলাফল সম্পূর্ণভাবে না মানলেও সামনের কিছুদিন কোন হরতাল বা অবরোধের মতো কর্মসূচিতে যাবে না বিএনপি।
নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে ফের নির্বাচনের দাবিতে জনসমর্থন আদায়ের জন্য গণসংযোগ এবং লিফলেট বিতরণের মতো শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির মাধ্যমে মানুষের কাছাকাছি যেতে যায় দলটি।
সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী, মঙ্গলবার এবং বুধবার বিভাগীয় ও জেলা পর্যায়ে লিফলেট বিতরণ করবে।
এছাড়া, পশ্চিমা দেশগুলো, যারা দীর্ঘদিন ধরে অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের আহ্বান জানিয়ে আসছে তাদের প্রতিক্রিয়া দেখে দলটি তাদের পরবর্তী কর্মপন্থা নির্ধারণ করবে।
এ বিষয়ে বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান বলেন, “গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে।”
একই শিরোনাম দৈনিক নয়া দিগন্ত পত্রিকারও, ‘বিএনপি এখন কী করবে’। এতে বলা হয়, এখন ‘পরিস্থিতি’ বুঝে সামনের দিকে এগোনোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। দলটির নেতারা মনে করছেন, তাদের আহ্বানে সাড়া দিয়ে জনগণ একতরফা ভোট বর্জন করেছে।
তাদের দাবি, নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে ৪০ শতাংশ ভোট পড়ার কথা বলা হলেও মূলত ৫-১০ ভাগ ভোট পড়েছে। নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি কম হওয়াকে প্রাথমিক সাফল্য হিসেবে দেখছেন তারা।
এদিকে, রোববার রাতে ভার্চুয়াল মাধ্যমে দলের স্থায়ী কমিটি এবং অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকদের সাথে পৃথক বৈঠকে নির্বাচন পরবর্তী কিছু সিদ্ধান্ত নির্ধারিত হয়েছে।
এর মাঝে অন্যতম হল, ভোট বর্জনকারীদের ধন্যবাদ জানিয়ে মঙ্গলবার এবং বুধবার সারা দেশে লিফলেট বিতরণ করা। তবে এই কর্মসূচির মেয়াদ আরও বাড়তে পারে।
এছাড়া, নতুন সরকারের শপথ এবং দ্বাদশ জাতীয় সংসদের প্রথম দিন হরতালের কর্মসূচি আসতে পারে।
‘১৫৫ এমপির কাছেও নেই অন্য প্রার্থীরা’, এটি যুগান্তর পত্রিকার প্রথম পাতার খবর। এতে বলা হয়েছে, ১৫৫টি আসনে বিপুল ভোটের ব্যবধানে সংসদ-সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা।
এসব আসনে তারা এত বেশি ভোট পেয়েছেন যে জয় পেতে তাদের কোনো বেগই পোহাতে হয়নি। অঙ্কের হিসাবে, প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা তাদের অর্ধেক বা তারও কম ভোট পেয়েছেন।
নিয়ম অনুযায়ী, প্রদত্ত ভোটের এক-অষ্টমাংশ না পেলে ওই প্রার্থীর জামানত বাজেয়াপ্ত হয়। এক্ষেত্রে, এইসব আসনের বেশিরভাগ ক্ষেত্রে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা জামানতের টাকাও রক্ষা করতে পারেননি।
‘ভোটের হার নিয়ে সন্দেহ, প্রশ্ন’- এটি দৈনিক প্রথম আলোর প্রথম পাতার খবর। এতে বলা হয়েছে, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোট পড়ার হার নিয়ে অনেকে সন্দেহ প্রকাশ করছেন।
নির্বাচন কমিশন (ইসি) সোমবার জানিয়েছে, এ নির্বাচনে মোট ৪১ দশমিক ৮ শতাংশ ভোট পড়েছে। ভোটের হার নিয়ে কারও সন্দেহ থাকলে তাদেরকে চ্যালেঞ্জ জানানোর আহ্বানও জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (ইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল।
এদিকে, রোববার, অর্থাৎ ভোটের দিন তিন দফায় ভোটের শতকরা হার ঘোষণা করেছিল ইসি।
সেই হিসাব অনুযায়ী, দুপুর ১২টা ১০ মিনিট পর্যন্ত গড়ে সাড়ে ১৮ শতাংশ ভোট পড়ে। এরপর বেলা তিনটা পর্যন্ত ২৬ দশমিক ৩৭ শতাংশ ভোট পড়ার কথা জানিয়েছিল ইসি।
তখন বলা হয়েছে, সব জায়গার হিসাব পাওয়া যায় নি। ভোটের হারে কিছু হেরফের হতে পারে।
সবশেষে, বিকেল চারটায় ভোট শেষ হওয়ার ঘণ্টা দেড়েক পর সংবাদ সম্মেলনে সিইসি শুরুতে বলেন, ভোট পড়েছে ২৮ শতাংশ। পরে তাকে পাশ থেকে একজন সংশোধন করে বলেন, সংখ্যাটি ৪০ শতাংশ হবে। সিইসি তখন ভোটের হার ৪০ শতাংশ হতে পারে বলে জানান এবং বলেন, নিশ্চিত হিসাব নয়।
এই হার অনুযায়ী, ভোট গ্রহণের শেষ এক ঘণ্টাতেই ভোট পড়েছে ১৪ শতাংশের বেশি। শেষ সময়ে ভোটের হার বেড়ে যাওয়ার বিষয়টি নিয়ে নির্বাচনে অংশ নেওয়া প্রার্থীদেরই অনেকে বিস্ময় প্রকাশ করেন।
‘ভারত, চীন, রাশিয়াসহ বিভিন্ন দেশের অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা’, এই খবরটিতে বলা হয়েছে, নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ জয় পাওয়ায় দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানিয়েছে ভারত, চীন, রাশিয়া, পাকিস্তানসহ বিভিন্ন দেশ।
একই সঙ্গে, বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক আরও জোরদার করার বার্তাও দিয়েছে এইসব দেশ।
‘Yunus should apologise: PM’, অর্থাৎ ‘ইউনূসের ক্ষমা চাওয়া উচিৎ: প্রধানমন্ত্রী’। এই খবরটি ৯ই জানুয়ারি নিউজ এইজ পত্রিকার প্রথম পাতায় এসেছে।
সোমবার গণভবনে নির্বাচন পরবর্তী এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, শ্রম আইন লঙ্ঘনের দায়ে ছয় মাসের কারাদণ্ডপ্রাপ্ত নোবেলজয়ী অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে ক্ষমা করা তার ব্যাপার নয়।
ড. ইউনূসকে ক্ষমা করার বিষয়টি বিবেচনা করবেন কিনা, একজন ভারতীয় সাংবাদিকের করা এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, শ্রম আদালতের রায়ে তার এখানে কিছু করার নেই।
প্রতিবেদনটিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্ধৃত করে বলা হয়েছে, ‘ইউনূস শ্রম আইন লঙ্ঘন করেছেন এবং তিনি তার নিজের কর্মচারীদের বঞ্চিত করেছেন। তাই তারা শ্রম আদালতে মামলা করেছে। এর সাথে আমার কিছু করার নেই। তার উচিৎ, তার কর্মচারীদের কাছে ক্ষমা চাওয়া।’
‘ভর্তুকির বন্ডে সুদ ব্যয় সমন্বয় হবে বিদ্যুতের দাম বাড়িয়ে’- খবরটি বণিক বার্তা পত্রিকার প্রথম পাতার। এতে বলা হয়েছে, সরকার নগদ অর্থের অভাবে ভর্তুকির অর্থ পরিশোধ করতে না পারায় বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর বিপুল অংকের বিল বকেয়া হয়ে পড়েছে।
সম্প্রতি ভর্তুকির অর্থের বিপরীতে বিশেষ ট্রেজারি বন্ড ইস্যুর মাধ্যমে আপাতত সরকারের দায় পরিশোধ কিছু সময়ের জন্য পেছানো হয়েছে।
তবে এক্ষেত্রে বন্ডের সুদ বাবদ সরকারকে অর্থ পরিশোধ করতে হবে। পাশাপাশি, পুঞ্জীভূত ভর্তুকির অর্থও পরিশোধ করতে হবে।
সব মিলিয়ে, এ মুহূর্তে বিদ্যুতের দাম বাড়ানো ছাড়া আর কোনও উপায় দেখছে না সরকার। তাই, চলতি শীত মৌসুমেই আরেক দফা বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত আসতে পারে বলে এতে উল্লেখ করা হয়।
বিদ্যুৎ বিভাগের বরাত দিয়ে বলা হয়, এবার ৩০ শতাংশের মতো দাম বাড়ানো হতে পারে। তবে এটি একেবারে না বাড়িয়ে কয়েক ধাপে বাড়ানো হবে; যাতে গ্রাহকের ওপর চাপ কম পড়ে।