Main Logo
আপডেট : ১ মার্চ, ২০২৪ ১০:১৪

বেইলি রোডের ভয়াবহ আগুন

পোড়ে মারা গেল দুই শিশু

নিজস্ব প্রতিবেদক
পোড়ে মারা গেল দুই শিশু

বেইলি রোডের ভয়াবহ আগুন কেড়ে নিল সম্পুর্না ও সান রায় নামের দুই শিশুকেও। যে ৪৫ জন মারা গেছেন তাদের মধ্যে সান ও সম্পূর্ণা রয়েছে বলে স্বজনরা জানিয়েছেন। বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর বেইলি রোডে কাচ্চি ডাইন নামের রেস্তোরায় আগুনের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ৪৫ জন দগ্ধ ও দম বন্ধ হয়ে মারা গেছেন। ফায়ার সার্ভিস জীতিব উদ্ধার করে কয়েক জনকে। আহত হয়েছেন অন্তত ২২ জন। স্বজনদের খুজে বৃহস্পতিবার  মধ্যরাত থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে স্বজনহারাদের ভিড় বাড়তে থাকে। তাঁদের কান্নায় ভারী হয়ে উঠে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বাতাস। তাঁদের সান্ত্বনা দেওয়ার এতটুকু ভাষাও যেন জানা নেই কারও।

বৃহস্পতিবার রাত আড়াইটার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে চিৎকার করছিলেন পীযুষ পোদ্দার নামের একজন।  বেইলি রোডের একটি রেস্তোরাঁয় খেতে গিয়ে আগুনে পুড়ে মারা গেছেন তাঁর বোন পপি, ভাগনে সান রায় (১০) ও ভাগনি সম্পূর্ণা রায় (১২)।  তিনি জানান, সম্পূর্ণা ও সানকে নিয়ে তাদের মা পপি রায়  বৃহস্পিতবার (২৯ ফেব্রুয়ারি)  সন্ধ্যায়  বেইলি রোডের কাচ্চি ভাই রেস্তোরাঁয় খেতে যান। সম্পূর্ণা পড়ত সিদ্ধেশ্বরী গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজে ষষ্ঠ শ্রেণিতে। আর সান রায় পড়ত উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুল অ্যান্ড কলেজের চতুর্থ শ্রেণিতে। মা–বাবার সঙ্গে মালিবাগে থাকত তারা।   রেস্তোরাঁয় আগুন লাগার খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে তিনি সেখানে চলে যান। গিয়ে দেখেন দাউ দাউ করে রেস্তোরাঁ জ্বলছে। কিন্তু কোথাও পপি, সম্পূর্ণা ও সানের খোঁজ পাননি। এরপর মধ্যরাতে ছুটে এসেছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে। সম্পূর্ণা ও সানের মরদেহ খুঁজে পেয়েছেন। কিন্তু পপির কোনো খোঁজ পাচ্ছেন না।
বৃহস্পতিবার রাত একটার পর একে একে বেইলি রোড থেকে লাশের সারি আসতে থাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে। খবর পেয়ে হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে ছুটে আসেন নিহত ব্যক্তিদের স্বজনেরা।
একটি বেসরকারি ব্যাংকে চাকরি করতেন মেহেরা কবির (দোলা)। তাঁর বোন মায়েশা কবির পড়তেন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে। দুই বোন মিলে মতিঝিলে থাকতেন। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার দিকে মতিঝিল থেকে তাঁরা বেইলি রোডের কাচ্চি ভাই রেস্তোরাঁয় খেতে আসেন। আগুনে পুড়ে এই দুই বোনও মারা গেছেন। তাঁদের স্বজনদের আহাজারিতে ভারী হয়ে উঠেছে হাসপাতালের বাতাস।

আগুনে পুরো পরিবার শেষ : দুই সন্তান আয়ান (৮) ও আয়াতকে (৬) নিয়ে বেইলি রোড এলাকায় বসবাস করতেন নাজিয়া আক্তার (৩১)। তাঁর স্বামী মো. আশিক পেশায় ব্যবসায়ী। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ব্যবসার কাজে বনানীতে যান। নাজিয়া দুই সন্তানকে নিয়ে ভবনের তৃতীয় তলার একটি রেস্তোরাঁয় খেতে যান। আগুন লাগার সঙ্গে সঙ্গে তিনি স্বামীকে ফোন দিয়ে বলেন তাঁরা বিপদে আছেন।

নাজিয়ার আত্মীয় রিফাত হোসেন জানান, তিনি ঘটনার সময় ওই ভবনের সামনে বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিচ্ছিলেন। হঠাৎ ভবনটির নিচতলায় বিস্ফোরণের বিকট শব্দ শুনতে পান। মুহূর্তের মধ্যে আগুন ওপরের দিকে ছড়িয়ে পড়ে। পরে তৃতীয় সিঁড়ি থেকে আয়ানের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। আগুনে মারা গেছেন নাজিয়া এবং আয়াতও। ঢাকা মেডিকেলের মর্গে তাঁদের মরদেহ রাখা হয়েছে।

উপরে