Main Logo
আপডেট : ১৯ জুন, ২০২৪ ১৩:৩১

সপ্তম শ্রেণীর ছাত্রীকে গণধর্ষণের দায়ে প্রধান হোতা গ্রেপ্তার

নিজস্ব প্রতিবেদক
সপ্তম শ্রেণীর ছাত্রীকে গণধর্ষণের দায়ে প্রধান হোতা গ্রেপ্তার

"ফরিদপুরের মধুখালীতে ব্ল্যাকমেইলিং করে কিশোরীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ" শীর্ষক চাঞ্চল্যকর ঘটনার অন্যতম প্রধান আসামী সোহান ওরফে  টেরা সোহানকে মাগুরা জেলার শ্রীপুর থানা এলাকা হতে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১০।

এজাহার সূত্রে জানা যায়, ফরিদপুর জেলার মধুখালী এলাকায় বসবাসকারী ৭ম শ্রেণীতে পড়ুয়া স্কুল ছাত্রী ভিকটিম (১৩) গত ২৮ মে  সকাল আনুমানিক ০৯:০০ ঘটিকায় স্কুলে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বাসা থেকে বের হয়। পরবর্তীতে স্কুল ছুটি হওয়ার পরও ভিকটিম বাড়ীতে না ফিরলে তার পিতাসহ পরিবারের লোকজন নিকটাত্মীয় স্বজনদের বাসায় এবং বিভিন্ন জায়গায় খুঁজাখোঁজি করতে থাকেন। খুঁজাখোঁজি করে কোথায় ভিকটিমের কোন সন্ধান না পেয়ে ভিকটিমের পিতা মধুখালী থানায় একটি নিখোঁজ ডায়রি করেন, যার ডায়রী নম্বর-১৩৫৯, তারিখ-২৯/০৫/২০২৪ খ্রিঃ। অতঃপর ভিকটিমের পিতা কর্তৃক খুঁজাখোঁজি এক পর্যায় গত ২ জুন মধুখালী থানাধীন একটি বাজারে ভিকটিম’কে খুজে পাওয়া যায়। অতঃপর ভিকটিমের পরিবারের লোকজন ভিকটিম’কে নিখোঁজের কারণ জিজ্ঞাসা করলে ভিকটিম জানায় গত ০১/০৬/২০২৪ খ্রিঃ তারিখ রাত আনুমানিক ০১:৩০ ঘটিকায় আসামী তুহিন অজ্ঞাত আরো ০২ জন ব্যক্তির সহযোগীতায় ভিকটিমে বিভিন্ন প্রকার প্রলোভন দেখিয়ে তাকে তুহিনের বাড়ীতে নিয়ে যায়। ভিকটিম সেখানে গিয়ে দেখতে পায় উক্ত বাড়ীর একটি কক্ষের ভিতরে সোহান ও অন্তর অবস্থান করছে। অতঃপর ভিকটিমকে উক্ত কক্ষের ভিতরে নিয়ে আসামী তুহিন, সোহান ও অন্তর মিলে জোরপূর্বক ভিকটিমের ইচ্ছার বিরুদ্ধে পালাক্রমে তাকে ধর্ষণ করে। উক্ত ঘটনায় ভিকটিম শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়লে ভিকটিমের পরিবারের লোকজন ভিকটিমকে মধুখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গিয়ে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা প্রদান করেন। 
এ ঘটনায় ভিকটিমের পিতা বাদী হয়ে ফরিদপুর জেলার মধুখালী থানায় ৭ম শ্রেণীতে পড়ুয়া স্কুল ছাত্রী ভিকটিম (১৩)’কে অপরণ করতঃ গণধর্ষণের ঘটকায় সরাসরি জড়িত ধর্ষক সোহান, তুহিন ও অন্তরসহ অজ্ঞাতনামা আরো ২ জনের বিরুদ্ধে একটি গণধর্ষণ মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নম্বর-১২, তারিখ-০৯/০৬/২০২৪ খ্রিঃ, ধারা-নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ এর ৯(৩)/৩০। উক্ত মামলার বিষয়টি জানতে পেরে সকল আসামীরা আত্মগোপনে চলে যায়। এই গণধর্ষণের ঘটনা ফরিদপুর সহ পুরা দেশে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে। 
ভিক্টিম কিশোরী জানায়, প্রায় দেড় মাস আগে সে মধুখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য গেলে এক পর্যায়ে অন্তর জামান অন্তু এবং তুহিন বিশ্বাস নামে দুই ওষুধ কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধির সঙ্গে পরিচয় হয়। তারা দুজন ওই কিশোরীকে সাহায্যের নামে সখ্যতা গড়ে তোলে। এরপর ওই কিশোরীকে ঘুরতে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে আপত্তিকর ছবি তুলে রাখে। ধর্ষণের ওই ছবি ছড়িয়ে দেওয়ার নাম করে দীর্ঘদিন অন্তু এবং তুহিন কিশোরীকে জিম্মি করে উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে পালাক্রমে ধর্ষণ করতে থাকে। এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, অন্তু এবং তুহিন ওষুধ কোম্পানিতে চাকরি করলেও তারা মাদকসেবী। সে সূত্রে মাদক কেনাবেচার সময় মাদককারবারি গ্রেফতারকৃত সোহান শাহের কাছ থেকে ফ্রি মাদক পেতে ভুক্তভোগী কিশোরীর আপত্তিকর অবস্থার ছবি সোহানকে দেয় অন্তু এবং তুহিন। এরপর মাদক ব্যবসায়ী সোহান কিশোরীকে ওই ছবি ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে জিম্মি করে বিভিন্ন সময় ধর্ষণ করে আসছিল। 
গণধর্ষণের ঘটনাটি জানতে পেরে র‌্যাব-১০, সিপিসি-৩ ফরিদপুর ক্যাম্পের একটি আভিযানিক দল চাঞ্চল্যকর ৭ম শ্রেণীতে পড়ুয়া স্কুল ছাত্রী ১৩ বছরের কিশোরীকে গণধর্ষণের ঘটনায় জড়িত সকল আসামিদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে।
ধারাবাহিকতায় অদ্য ১৯ জুন ২০২৪ খ্রিঃ তারিখ সকাল আনুমানিক ০৬:৩০ ঘটিকায় র‌্যাব-১০, সিপিসি-৩ ফরিদপুর ক্যাম্পের উক্ত আভিযানিক দল র‌্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখার সহযোগীতা ও তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় মাগুরা জেলার শ্রীপুর থানাধীন নাকোল এলাকায় একটি অভিযান পরিচালনা করে। উক্ত অভিযানে চাঞ্চল্যকর ফরিদপুর জেলার মধুখালীতে ৭ম শ্রেণীতে পড়ুয়া স্কুল ছাত্রী ১৩ বছরের কিশোরীকে গণধর্ষণ মামলার এজাহারনামীয় পলাতক অন্যতম প্রধান আসামী সোহান @ টেরা সোহান (২৫), পিতা-শাহ আলম, সাং-গোন্দারদিয়া, থানা-মধুখালী, জেলা-ফরিদপুর’কে গ্রেফতার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে, গ্রেফতারকৃত আসামী উক্ত ঘটনায় তার সরাসরি সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছে। 

উপরে