মতিউরের পর এবার এনবিআরের প্রথম সচিবের ফ্ল্যাট–প্লট জব্দ, সঞ্চয়পত্র অবরুদ্ধের আদেশ
ছাগল কাণ্ডে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কর্মকর্তা মতিউর রহমানের বিশাল সম্পদের আলোচনা শেষ হতে না হতেই এবার একই প্রতিষ্ঠানের আরেক কর্মকর্তার স্থাবর অস্থাবর সম্পদ জব্দের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। তার নাম কাজী আবু মাহমুদ ফয়সাল। তিনি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) প্রথম সচিব।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেন আজ বৃহস্পতিবার এই আদেশ দেন।
জব্দের আদেশ হওয়া সম্পদের মধ্যে আছে কাজী আবু মাহমুদ ফয়সালের ঢাকার একটি ফ্ল্যাট ও ১০ কাঠার দুটি প্লট। এ ছাড়া তাঁর ও তাঁর স্ত্রীসহ স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের ২ কোটি ৫৫ লাখ টাকা মূল্যের সঞ্চয়পত্র অবরুদ্ধ করেছেন আদালত।
দুদকের সরকারি কৌঁসুলি মোশারফ হোসেন কাজল গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, এনবিআরের প্রথম সচিব কাজী আবু মাহমুদ ফয়সাল ঘুষ ও দুর্নীতির মাধ্যমে বিপুল সম্পদের মালিক বনে গেছেন। এ বিষয়ে দুদক অনুসন্ধান করছে। প্রাথমিকভাবে দুদকের অনুসন্ধান দল ঢাকায় তাঁর ফ্ল্যাট, দুটি প্লট, সঞ্চয়পত্রসহ ১৬ কোটি টাকা মূল্যের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের খোঁজ পেয়েছে। এসব সম্পদ ক্রোক ও অবরুদ্ধ করার জন্য আজ দুদকের পক্ষ থেকে আবেদন করা হয়। আদালত সেই আবেদন মঞ্জুর করেছেন।
দুদক লিখিতভাবে আদালতকে জানিয়েছে, আবু মাহমুদ ফয়সাল সরকারি ক্ষমতার অপব্যবহার করে ঘুষ লেনদেন করেছেন। দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত আয়ের উৎস গোপনের জন্য নিজের নামসহ তাঁর আত্মীয়স্বজনের নামে ৭০০টির বেশি হিসাব খোলেন। উদ্দেশ্য হচ্ছে অপরাধলব্ধ আয়ের উৎস গোপন করা।
দুদকের পক্ষ থেকে আবু মাহমুদ ফয়সালের সম্পদের বিস্তারিত বিবরণ আদালতের কাছে তুলে ধরা হয়েছে।
এর আগে এনবিআর কর্মকর্তা মো. মতিউর রহমান ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের নামে থাকা ৬৫ বিঘা (২ হাজার ১৪৫ শতাংশ) জমি, ৮টি ফ্ল্যাট, ২টি রিসোর্ট ও পিকনিক স্পট এবং ২টি শিল্পপ্রতিষ্ঠানের তথ্য পাওয়া যায়। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি সম্পত্তি তাঁর প্রথম স্ত্রী লায়লা কানিজের নামে। তাঁর নামে প্রায় ২৮ বিঘা জমি ও ৫টি ফ্ল্যাট রয়েছে; এর মধ্যে ঢাকার মিরপুরে একটি ভবনেই রয়েছে চারটি ফ্ল্যাট। সাবেক কলেজশিক্ষক লায়লা কানিজ বর্তমানে নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এবং জেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণবিষয়ক সম্পাদক।
গত ঈদুল আজহার সময় মতিউর রহমানের ছেলে ১৫ লাখ টাকার ছাগল কিনতে গিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনায় আসেন। ছেলের বিলাসী জীবনযাপনের সূত্র ধরেই মতিউরের সম্পদের বিষয়টি আলোচনায় আসে।