সাংবাদিক কনক সারোয়ার ও আইনজীবী মহসীনকে সুপ্রিম কোর্টে তলব
মানবতারিবোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি চৌধুরী মঈনুদ্দীন ও ব্রিটিশ সরকারের মধ্যে চলমান একটি মামলার প্রেক্ষাপট নিয়ে টকশোতে বাংলাদেশের বিচার বিভাগ নিয়ে অবমাননাকর বক্তব্য দেওয়ার অভিযোগ এনে প্রবাসী সাংবাদিক কনক সারোয়ার ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মহসীন রশিদকে তলব করেছেন আপিল বিভাগ।
২১ জুলাই তাদের আপিল বিভাগে হাজির হতে বলা হয়েছে।
এ সময়ে কোনো আদালতে আইন পেশা পরিচালনা করতে পারবেন না আইনজীবী মহসীন রশিদ।
বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) তাদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার নোটিশ ইস্যু করে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন। একইসঙ্গে ওই টকশোর ভিডিও অপসারণ করতে বিটিআরসিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী তাপস কান্তি বল।
প্রবাসী সাংবাদিক কনক সারোয়ার ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মহসীন রশিদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার আবেদন করেন শহীদ জায়া শ্যামলী নাসরিন চৌধুরী।
একাত্তরে জামায়াতে ইসলামীর সহযোগী সংগঠন আল-বদর বাহিনীর হয়ে বুদ্ধিজীবী হত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ২০১৩ সালে চৌধুরী মঈনুদ্দীনকে মৃত্যুদণ্ড দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
এরপর ২০১৯ সালে মঈনুদ্দীনের ফৌজদারি অপরাধের বিবরণসহ একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী প্রীতি প্যাটেল সেই প্রতিবেদন তখনকার টুইটার (বর্তমানে এক্স) হ্যান্ডলে শেয়ার করেন।
তবে নিজেকে নির্দোষ দাবি করে যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের রিরুদ্ধে হাইকোর্টে মানহানির মামলা করেন মঈনুদ্দীন। মানহানির জন্য ৬০ হাজার পাউন্ড ক্ষতিপূরণ চাওয়া হয় এ মামলায়।
কিন্তু দেশটির হাইকোর্ট সেই মামলা বাতিল করে দেন। এ বাতিল আদেশের বিরুদ্ধে মঈনুদ্দীনের আপিল নিয়ে গত ২০ জুন রায় দেন যুক্তরাজ্যের সুপ্রিম কোর্ট। অর্থাৎ মঈনুদ্দীনের করা মানহানি মামলার বিচার চলবে।
এ রায়ের পর গত ২১ জুন সাংবাদিক কনক সারোয়র তার অনলাইন টিভিতে টকশো করেন। সে টকশোতে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মহসীন রশিদ।
তাপস কান্তি বল জানান, ইংল্যান্ড সরকার ও চৌধুরী মঈনুদ্দীনের মধ্যে সে দেশের সুপ্রিম কোর্টে একটি মামলায় রায় হয়েছে। সেই রায় নিয়ে ২১ জুন কনক সারোয়ার অনলাইনে একটি টকশো করেন। সেখানে অতিথি ছিলেন অ্যাডভোকেট মহসীন রশিদ। সেই টকশোতে বাংলাদেশের বিচার বিভাগ তথা উচ্চ আদালত নিয়ে অবমাননাকর কথাবার্তা বলা হয়েছে। বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। এমন প্রেক্ষাপটে আপিল বিভাগে একটি আবেদন করা হয়েছে।