৪৫ বছর পর সরকারি কর্মচারী বিধিমালা যুগোপযোগী করার উদ্যোগ
খুব শিগগিরই ৪৫ বছর আগের সরকারি কর্মচারী আচরণ বিধিমালা যুগোপযোগী করে চূড়ান্ত করা হবে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন। একইসঙ্গে ১২ বছর আগের জাতীয় শুদ্ধাচার নীতিমালাটি হালনাগাদ করা হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) সচিবালয়ে বর্তমান সরকারের আমলের দ্বিতীয় সচিব সভার বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব এসব তথ্য জানান। বিকেল সাড়ে ৪টায় মন্ত্রিসভা কক্ষে শুরু হওয়া এই সভা চলে প্রায় দুই ঘণ্টারও বেশি। এতে প্রায় অর্ধশত সচিব অংশ নেন।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যখন প্রথম সচিব সভাটা করেন তখন আমাদের কাছে একটি নির্দেশনা এসেছিল, আমরা যেন বছরে অন্তত দুটি সচিব সভা করি। আমরা হিসাব করেছিলাম যে, জুলাই মাসে আমরা একটা সচিব সভা করবো। জুন মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম যে, প্রথম সভার যে বাস্তবায়ন অগ্রগতি সেটা জানার জন্য বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে জুন মাসের প্রথম সপ্তাহে আমরা চিঠি দিয়েছিলাম। সেটার পরিপ্রেক্ষিতে আমরা আজকের মিটিংটা করেছি।
‘আজকের মিটিংয়ে মূলত গত সভার বাস্তবায়ন অগ্রগতিটা আমরা আলোচনা করেছি, আমরা শুদ্ধাচার বিষয়ে কিছু আলোচনা করেছি, আমরা বাজেট বাস্তবায়ন নিয়ে আলোচনা করেছি এবং নির্বাচনী ইশতেহার নিয়ে আলোচনা করেছি। এছাড়া, দাপ্তরিক কাজে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সময়ে সময়ে যে নির্দেশনাগুলো দিয়েছিলেন সেগুলো যত্ন সহকারে সিরিয়াসলি অনুসরণ করে সে ব্যাপারে তাদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। সাধারণত আমরা যেটা করে থাকি, বাজেট বাস্তবায়নের স্বচ্ছতার কথা বলেছি। ’
সভায় বিশেষ কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে কি না বা শুদ্ধাচার বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা এটা আলোচনা করেছি। আমাদের যে শুদ্ধাচার নীতিমালাটি আছে সেটি প্রায় ১২ বছর হয়ে গেছে। এটি এখন আমরা আপডেট করার চিন্তা-ভাবনা করছি। সেই প্রসঙ্গটা আলোচনা হয়েছে।
‘আলোচনা হয়েছে যে, আমাদের একটা আচরণবিধি ছিল ১৯৭৯ সালের, সেটিকে আপডেট করার কার্যক্রম চলছিল, সেটির অগ্রগতি কী, সেটি আমরা জেনেছি। আমরা আশা করছি দ্রুত সেটি চূড়ান্ত হয়ে যাবে। ’
সরকারি আচরণবিধি হালনাগাদের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাকে জানানো হয়েছে এটা খুব দ্রুতই চূড়ান্ত করা হবে। আশা করছি খুব দ্রুতই হবে।
‘আমরা বলেছি, যে অধস্তন অফিস আছে যেখান থেকে সেবা দেওয়া হয় মানুষকে, সেই সেবাটা যেন ঠিক মতো দেওয়া হয়। সেই কাজটা যেন জোরালোভাবে মনিটর করা হয়। মানুষের যদি কোনো অভিযোগ থাকে সেগুলো যেন খুব সিরিয়াসলি নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হয়। ’
সম্প্রতি কয়েকজন সরকারি কর্মকর্তা বা সাবেক কর্মকর্তার দুর্নীতি সামনে এসেছে, সরকারি কর্মকর্তাদের দুর্নীতি নিয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে কি না- এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, না। স্পেসিফিক কিছু আলোচনা করিনি। এত সচিব নিয়ে তো আমরা এই জাতীয় বিষয় নিয়ে আলোচনা করবো না।
সচিবরাই তো নিয়ন্ত্রণ করবেন, মন্ত্রণালয়গুলোই তো নিয়ন্ত্রণ করবেন- এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, হ্যাঁ। কিন্তু আমরা একজন দুইজনের অপকর্ম নিয়ে, কোনো একটা অভিযোগ নিয়ে তো এত সচিব ডেকে এনে আলোচনা করবো না। এটা তো খুব স্বাভাবিক বিষয়। সরকারি কর্মকর্তাদের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয়, এ ধরনের কোনো আলোচনা- না। এ রকম কোনো আলোচনা হয়নি।
সম্প্রতি উচ্চ আদালত সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সম্পদের হিসাব বিবরণী জমা দিতে সরকারি কর্মচারী আচরণ বিধিমালাটি হালনাগাদের নির্দেশনা দিয়ে তিন মাসের সময় দেয়। মূলত এরই প্রেক্ষিতে বিষয়টি নিয়ে অগ্রসর হচ্ছে সরকার।