ধারাবাহিক উপন্যাস- পর্ব- ১১
নিশিকথা
ওমর ফারুক
ওসি সাহেব চলে যাওয়ার পর টুথপেস্ট কোম্পানীর সিইও জামিল আহমেদ তার অধঃস্তনদের নিয়ে সভা করতে বসেন। তিনি মার্কেটিং ম্যানেজার আশফাকের কাছে জানতে চান বিজ্ঞাপনে একজন জনপ্রিয় চিত্রনায়িকার ছবি যাওয়ার কথা ছিল। সে জন্য সেই নায়িকাকে এক লাখ টাকা অগ্রিমও দেয়া হয়েছে। কিন্তু পত্রিকায় ছবি ছা্পা হয়েছে অন্য তরুণীর। এর কারণ কি?
মার্কেটিং ম্যানেজার সকাল থেকেই ধারণা করছিলেন এমন প্রশ্নের মুখোমু্খি তাকে হতে হবে। তিনিও অবাক হয়েছেন। কিভাবে এ ঘটনা ঘটলো। সিইও জানালেন, এরই মধ্যে ওই চিত্র নায়িকা দুই দফা ফোন করে জানিয়েছেন- তাকে অপমান করা হয়েছে।
সিইওর কোন প্রশ্নের উত্তরই দিতে পারছেন না মার্কেটিং ম্যানেজার। শুধু আমতা আমতা করে যাচ্ছেন। তিনি পত্রিকায় নায়িকার ছবি না দেখে গ্রাফিক্স ডিজাইনার ইমরানকে ফোন করেছিলেন। কিন্তু ইমরানের ফোন বন্ধ পেয়েছেন। সে কারণে জানা গেল না আসলে কিভাবে কি হয়েছে। ইমরানকেই দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল বিজ্ঞাপনটা তৈরি করার জন্য। আর পজিটিভ তিনি দেখেও দিয়েছিলেন। কিন্তু ব্যস্ততার কারণে কার ছবি যাচ্ছে তা দেখার সময় পাননি।
সিইও যতোটা চটে যাওয়ার কথা ছিল, ততটা চটলেন না। বিষয়টায় অবাক হয়েছেন সবাই। পার্সেস অফিসারসহ অন্য কর্মকর্তারা ধরেই নিয়েছিলেন, এই অপরাধের কারণে মার্কেটিং ম্যানেজারের চাকরিটা বোধ হয় এবার আর থাকবে না। কিন্তু সিইও বললেন অন্যকথা। যে নায়িকার ছবি ছাপা হওয়ার কথা ছিল তার চেয়ে অধিক সুন্দরী এই তরুণী। পরিচিত জনের কয়েকটি ফোনও পেয়েছেন তিনি। তার পরিচয় জানতে চেয়েছেন তারা। এ ছাড়া ওসি চলে আসায় তার কাছে মনে হয়েছে বিজ্ঞাপনটি বেশ কার্যকরী হয়েছে। তিনি সিনেমার নায়িকার অভিযোগ না শুনেই বলে দিয়েছেন, দেখুন আপনার ছবির চেয়ে এই মেয়ের ছবি পেয়ে যাওয়ায় আসলে বিজ্ঞাপনটি পরিবর্তন করা হয়েছে। আপনি যে এক লাখ টাকা নিয়েছেন তা ফেরত দিতে হবে না। ফটাে সেসনের ছবিগুলো চাইলে আপনি নিয়ে যেতে পারেন।
তিনি এও জানালেন বিজ্ঞাপনে ছবির মেয়েটির চোখ, নাক-কান সবই যেন কথা বলছে। ঠোঁটের কোণের হাসিটা কার না চোখে পড়েছে। এত সুন্দর হাসি এর আগে তিনি দেখেছেন বলে মনে করতে পারছেন না। দুটো চোখ যেন পত্রিকার সব পাঠকের সঙ্গেই কথা বলে যাচ্ছে। হেয়ার স্টাইল একেবারে ভিন্ন। ছবিটি তোলার আগে যে তাকে সাজিয়েছে, তিনি নিশ্বয়ই বড় মাপের রূপ বিশেষজ্ঞ।
সিইও মেয়েটির সম্পর্কে জানতে চাইলেন মার্কেটিং ম্যানেজারের কাছে। মার্কেটিং ম্যানেজার নিরবতা ভেঙ্গে বললেন-
স্যার, আমাকে ক্ষমা করবেন। আসলে মেয়েটিকে আমি চিনি না। কিভাবে নায়িকার জাযগায় তার ছবি ছাপা হয়েছে তাও বুঝতে পারছি না। গ্রাফিক্স ডিজাইনার ইমরানকে সকাল থেকে ফোনে ধরার জন্য ট্রাই করছি। কিন্তু তার দুটো ফোন্ই বন্ধ।
ক্ষ্যাপে যান সিইও ।
তারতো একটা অফিস আছে, নাকি? আপনিতো একবার অফিসে গিয়ে খোঁজ নিতে পারতেন। আপনি এক্ষুনি ইমরানের কাছ থেকে জেনে আসুন এই মেয়েটি কে? কি তার পরিচয়? কিভাবে নায়িকার জায়গায় এ্ই মেয়ের ছবি ছাপা হলো। বিস্তারিত জেনে আসুন
চলবে....