ইন্টারমিডিয়েট পর্যন্ত এক কলেজে পড়াশোনা করেছি আমরা। আমি ওকে..। সারাক্ষণই আসলে ওকে নিয়ে ভাবি। কিন্তু ও বিষয়টা বোঝে কি না আমি জানি না। আমার কম্পিউটারে তার কয়েকটি ছবি রয়েছে। সেদিন চিত্রনায়িকার ছবিটাকে সাইজ করে বিজ্ঞাপনটি তৈরির প্রস্তুতি নেই। চিত্রনায়িকার ছবি স্ক্যানারে দিয়ে ভাবছিলাম নিশির কথা। এ সময় নিশির ছবিটা বিজ্ঞাপনে লাগিয়ে দেখতে চাইলাম কেমন লাগে। এর মাঝে একটি ফোন আসে, বাইরে বের হই। চেয়ারে বসার সঙ্গে সঙ্গে আপনার অফিসের পিয়নটা এসে দ্রুত বিজ্ঞাপনটি চাইলো। আমি আসলে তাড়াহুড়া করে দিয়ে দেই। লক্ষ্যই ছিলো না যে, নায়িকার ছবি নয় নিশির ছবি লাগিয়ে দিয়েছি। টোটাল কাজটাই হয়েছে মনের অজান্তে। এই একটি ভুল অনেক বড় ঘটনার জন্ম দিয়েছে, তা আমি আঁচ করতে পারছি। তবে নিশির কি অবস্থা হয়েছে আমি বলতে পারবো না। আমি তার কাছে কিভাবে সরি বলবো, জানি না। এ জন্য তাকে কত মাশুল দিতে হচ্ছে, তাও জানি না। 

বুঝতে পেরেছি-
কথাটা বলে ইমরানকে থামিয়ে দিলেন আশফাক সাহেব। এর পর নিজেদের বিপত্তির কথা তুলে ধরলেন। জানালেন চিত্রনায়িকা, সিইও, পুলিসহ সবাইকে কিভাবে ম্যানেজ করতে হয়েছে। তিনি এও জানালেন, পত্রিকা অফিস গরম করে দিয়েছে পাঠকরা ফোন করে। পুলিশ পর্যন্ত তদন্ত  করতে চলে এসেছে। 
এত কিছুর পরও আশফাক সাহেবের মুখে হাসি থাকে কি করে, সেটা ভেবে পাচ্ছে না ইমরান। এ আবার কোন রহস্য। রহস্যের জট খুললেন আশফাক সাহেব নিজেই। জানালেন, চিত্রনায়িকার ছবি না চেপে নিশির ছবি ছাপায় কোম্পানীর সিইও খুব খুশি হয়েছেন। বিজ্ঞাপনটি এতো আলোচিত হবে , তা তিনি ধারণাই করেননি। কিন্তু এত সাড়া পড়েছে যে, তিনি বিমোহিত। তিনি নিশিকে ব্রান্ড এ্যাম্বাসেডর হিসেবে ব্রেক দিতে চান। 
এ কথা শোনে পিলে চমকানোর মতো অবস্থা ইমরানের। তারও অনেকদিনের ইচ্ছে ছিল নিশিকে মডেল বানাবে। কিন্তু  কোনো প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কথা বলে পরেই নিশিকে জানাবে। নিশিকে সে জোর করে হলেও রাজি করাবে। তা না হলে তার মা-বাবাকে বলে তাকে রাজি করাবে। কিন্তু বড় কোন কোম্পানীর সঙ্গে কথা বলার সুযোগ করতে না পারায়, সে তার সুপ্ত বাসনা মনেই রেখেছিল এতদিন। কিন্তু আজ এত বড় কোম্পানীর বিজ্ঞাপনের মডেল হিসেবে সুযোগ একেবারেই দোরগোড়ায়.. এর পরও খুশি হতে পারেনি ইমরান।
এখন তার মডেলের চেয়ে বড় চিন্তা নিশির কি অবস্থা হয়েছে তা জানা দরকার। মনে মনে সিদ্ধান্ত নিলো মার্কেটিং ম্যানেজার চলে যাওয়ার পরই সে নিশিদের বাসায় ফােন করবে।

চলবে..