পঞ্চম শিল্প বিপ্লবের উপযোগী মানব সম্পদ তৈরিতে শিক্ষার আমূল পরিবর্তন করতে হবে : টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী জনাব মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, নতুন প্রজন্মকে ডিজিটাল মানবসম্পদ হিসেবে গড়ে তোলা আমাদের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। স্মার্ট নাগরিক কিংবা স্মার্ট সমাজ দক্ষ মানবসম্পদের ওপর নির্ভরশীল। শিক্ষা মানে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার পাশাপাশি ডিজিটাল দক্ষতা অর্জনের শিক্ষা । তিনি চতুর্থ শিল্প বিপ্লব বা পঞ্চম শিল্প বিপ্লবের উপযোগী মানব সম্পদ তৈরির জন্য শিক্ষার আমূল পরিবর্তন ও সমন্বয়ের মাধ্যমে সংশ্ষ্টিদের নিরলসভাবে কাজ করার আহ্বান জানান।
মন্ত্রী আজ ঢাকায় জাতীয় শিক্ষা ব্যবস্থাপনা একাডেমি মিলনায়তনে একাডেমির ১৯৩ তম বুনিয়াদি প্রশিক্ষণের অংশগ্রহণকারিদের সাথে আয়োজিত মুক্ত আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বিসিএস ৩৮তম ব্যাচে নিয়োগ প্রাপ্ত শিক্ষা ক্যাডারের প্রশিক্ষণার্থীদের উদ্দেশ্যে শিক্ষার ডিজিটাল রূপান্তরের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে বলেন, পঞ্চম শিল্প বিপ্লবের উপযোগী মানব সম্পদ তৈরিতে শিক্ষা ব্যবস্থা এবং শিক্ষকদের ভূমিকা অপরিসীম। শিক্ষার আমুল পরিবর্তন দরকার উল্লেখ করে ডিজিটাল প্রযুক্তি বিকাশের এই অগ্রদূত বলেন, আমাদের ছাত্র-ছাত্রীরা খুবই মেধাবি। তারা যে কোন জটিলতা ধারণ করতে সক্ষম। স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে নতুন প্রজন্ম আমাদের সবচেয়ে বড় শক্তি। শিক্ষার ডিজিটাল রূপান্তরের স্বপ্নদ্রষ্টা জনাব মোস্তাফা জব্বার বলেন, এখনকার যুগে বাস করে কেউ যদি কোন ডিজিটাল যন্ত্র ব্যবহার করতে না পারে তবে তাদের ভবিষ্যত অন্ধকার। তিনি বলেন, ইতোমধ্যেই দেশের সুবিধা বঞ্চিত অঞ্চলের ছেলে মেয়েদের ডাক ও টেলিযোাগযোগ বিভাগের উদ্যোগে এসওএফ তহবিলের অর্থায়নে আমরা ৬৫০টি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং পার্বত্য অঞ্চলে ২৮টি পাড়াকেন্দ্রে ডিজিটাল কনটেন্টের পাঠ দানের মাধ্যমে শিক্ষার ডিজিটাল রূপান্তরের অভিযাত্রা শুরু করেছি। আরও এক হাজারটি বিদ্যালয়ে শিক্ষার ডিজিটাল রূপান্তরের কাজ চলছে। তিনি বলেন, ডিজিটাল পদ্ধতিতে পাঠদান প্রচলিত পাঠদান পদ্ধতির চেয়ে অনেক বেশি আকর্ষণীয় এবং স্মার্ট মানব সম্পদ তৈরির জন্য কার্যকর একটি পদ্ধতি। শিক্ষার্থীরা এক বছরের পাঠ্যক্রম এক মাসেই সহজে আয়ত্বে আনতে সক্ষম এবং ডিজিটাল পদ্ধতিতে পাঠ প্রদানের ফলে শিক্ষার্থী ভর্তি এবং নিয়মিত উপস্থিতির হার অনেক গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। টেলিযোগোযোগ মন্ত্রী দেশের দূর্গম ও সুবিধা বঞ্চিত এলাকায় প্রাথমিক বিদ্যালয় ও পাড়া কেন্দ্রে ডিজিটাল পদ্ধতিতে পাঠ দানের অভিজ্ঞতা ব্যক্ত করে বলেন, আশপাশের স্কুলের শিক্ষার্থীরা অনেকে টিসি নিয়ে এই সকল স্কুলে চলে আসছে। যেসব স্কুলে কম্পিউটার আছে সেসব প্রতিষ্ঠানে ডিজিটাল কনটেন্ট দেওয়ার দাবি উঠেছে। তিনি বলেন, আমাদের শিক্ষার্থীদের যদি সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয়, তাহলে বিশ্বের যেকোনো মানদণ্ডকে তারা অতিক্রম করতে পারবে।
জাতীয় শিক্ষা ব্যবস্থাপনা একাডেমির পরিচালক অধ্যাপক শাহ মো: আমির আলীর সভাপতিত্বে একাডেমির মহাপরিচালক প্রফেসর ড. নিজামুল করিম বক্তৃতা করেন। মহাপরিচালক প্রিন্টিং শিল্পে কম্পিউটার সংযুক্তি, ডিজিটাল প্রযুক্তিতে বাংলাভাষার প্রবর্তন এবং শিক্ষার ডিজিটাল রূপান্তরে জনাব মোস্তাফা জব্বার এর অবদান তুলে ধরেন।