সোহেলের উত্থানে গ্রামের মানুষ অবাক
গ্রামের মানুষ জানেন ‘লটারির টাকায়’ বড় ব্যবসায়ী হয়ে কোটি কোটি টাকা কামাই করেছেন আবু সোলেমান মো. সোহেল। কিন্তু গ্রেপ্তারের পর গ্রামের মানুষ জানতে পারলেন ব্যবসা নয় প্রশ্নপত্র ফাঁস করে এতো টাকার মালিক হয়েছেন তিনি। গত সোমবার সিআইডি তাকেসহ প্রশ্ন ফাস চক্রের ১৭ জনকে গ্রেপ্তার করে। সােহেলের বাড়ি কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার বানাশুয়া গ্রামে। এই গ্রামের মানুষ জানেন, কোনো এক লটারি পেয়ে সোহেল বড় ব্যবসায়ী হয়েছেন। প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় তাঁর গ্রেপ্তার খবরে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
বাংলাদেশ রেলওয়ের উপসহকারী প্রকৌশলীসহ বিভিন্ন নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসে জড়িত অভিযোগে পিএসসির দুজন উপপরিচালক, দুজন সহকারী পরিচালকসহ ১৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। গত রবি ও গতকাল সোমবার রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে এই ১৭ ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর মধ্যে মিরপুরের ব্যবসায়ী আবু সোলায়মান মো. সোহেলসহ সাতজনকে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড করার জন্য আজ মঙ্গলবার আদালতে নেওয়া হয়েছে।
এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কুমিল্লার আদর্শ সদর উপজেলার আমড়াতলী ইউনিয়নের বানাশুয়া গ্রামের মানুষ সোহেলের বাবা আবদুল ওহাবকে ‘আবদুল ওহাব বিএসসি’ নামে চেনেন। তাঁর তিন ভাই ও দুই বোনের মধ্যে সোহেল সবার ছোট। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদ থেকে স্নাতক শেষ করেছেন বলে পরিবারকে জানান। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনের ছবিও তাঁর ফেসবুকে রয়েছে।
বানাশুয়া গ্রামের একাধিক বাসিন্দাবলেন, এলাকার লোকজন জানতেন, আমেরিকার কোনো এক লটারিতে সোহেল কোটি টাকা পেয়েছেন। সেই টাকায় এখন তিনি বড় ব্যবসায়ী। স্থানীয় ব্যক্তিদের কাছে কোটিপতি সোহেল নামেও বেশ পরিচিত তিনি। ঢাকা থেকে সোহেল যখন বাড়িতে আসতেন, তখন একা একা চলাফেরা করতেন। কারও সঙ্গে তেমন মেলামেশা করতেন না।
নাম না প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় লোকজন বলেন, সোহেলের এক ভাইয়ের কুমিল্লা নগরীর ছাতিপট্টিতে সোনার দোকান আছে। আরেক ভাইয়ের সোনার দোকান বুড়িচং উপজেলা সদরে। এই দুই দোকানে সোহেলের বড় বিনিয়োগ আছে বলে শুনেছেন গ্রামের মানুষ। গত রমজানের ঈদের আগে সোহেল বাড়ির পাশে ৬০ শতক জমি দেড় কোটি টাকায় কেনেন। এত কম বয়সে এত টাকার মালিক হওয়ায় এলাকায় সোহেলকে নিয়ে বেশ চর্চা হয়।
আমড়াতলী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান কাজী মোজাম্মেল হক বলেন, ‘সে (সোহেল) যে এই প্রশ্নপত্র ফাঁস চক্রের সঙ্গে জড়িত, এটা শুনেই অবাক হয়েছি। আমি জানতাম, সে ঢাকায় চাকরি না জানি ব্যবসা করত। একা একা চলাফেরা করত। এখন তো খবরে দেখলাম, সে প্রশ্নপত্র ফাঁস করে কোটি টাকার মালিক হয়ে গেছে। কি আশ্চর্যের বিষয়!’