Main Logo
আপডেট : ১৯ নভেম্বর, ২০২৩ ১০:১৩

অস্ট্রেলিয়ার ছয় না ভারতের তিন

নিজস্ব প্রতিবেদক

অস্ট্রেলিয়ার ছয় না ভারতের তিন
দীর্ঘ প্রায় চার বছরের অপেক্ষা। ছয় সপ্তাহের উত্তেজনা। সবকিছুর অবসান হবে আজ। শেষ হবে বিশ্বকাপ ক্রিকেট। অবসান হবে অনেক বিতর্কের। সেই লড়াইয়ে আজ মুখোমুখি স্বাগতিক ভারত ও অস্ট্রেলিয়া। আহমেদাবাদে দুপুর আড়াইটায় শুরু হবে ম্যাচটি।
 
অস্ট্রেলিয়া সর্বাধিকবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন। পাঁচবার বিশ্বকাপের শিরোপা জয় করেছে তারা। অন্যদিকে ভারতের বিশ্বকাপ ট্রফির সংখ্যা দুই। দারুণ পারফরম করে ভারত তৃতীয় শিরোপা জয়ের অপেক্ষায়। পারফরম্যান্সের বিচারে অস্ট্রেলিয়াকে পেছনে ফেলার কোনো যুক্তি নেই।
ভারত টুর্নামেন্টের একমাত্র অপরাজিত দল। গ্রুপ পর্বের ৯ ম্যাচের পর সেমিফাইনালও জিতেছে। অস্ট্রেলিয়া অবশ্য অপরাজিত থাকার সুযোগটা প্রথম ম্যাচেই হারিয়েছিল। এই ভারতের কাছেই হেরেছিল তারা। পরের ম্যাচেও এই হারের ধাক্কা সামলে উঠতে পারেনি দলটি। তবে দ্বিতীয় ম্যাচের পর থেকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি।
 
তৃতীয় ম্যাচে সেই যে জয়ের দেখা পেয়েছিল তারপর জয়ের ট্রাকেই রয়েছে অজিরা। একের পর এক সাত ম্যাচ জিতে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করে প্যাট কামিন্সের দল। এখানে শেষ নয়, গ্রুপ পর্বে দ্বিতীয় ম্যাচে যে দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে হেরেছিল সেমিফাইনালে সেই প্রোটিয়াদের হারিয়ে তারা ফাইনাল নিশ্চিত করেছে। নিয়েছে প্রতিশোধ।
এখন অস্ট্রেলিয়ার আর একটা প্রতিশোধ বাকি। আজকের ফাইনালের প্রতিপক্ষ ভারতের কাছে হেরে শুরু হয়েছিল তাদের বিশ্বকাপ পুনরুদ্ধারের মিশন। ফলে প্রোটিয়াদের হারিয়ে যেমন তাদের দেনা পাওনা মিটিয়ে দিয়েছে আজও একই লক্ষ্য অস্ট্রেলিয়ার। এই প্রতিশোধ মিশনের সফলতা ও ব্যর্থতার ওপর নির্ভর করছে অস্ট্রেলিয়ার শিরোপা সংখ্যা বেড়ে ছয় হবে, না ভারতের তিন হবে।
আজ আহমেদাবাদের যে পিচে খেলা হবে বিশ্বকাপের দ্বিতীয় সপ্তাহে এ পিচটি ব্যবহার করা হয়েছিল। এ পিচে পাকিস্তানের বিপক্ষে খেলেছিল স্বাগতিক ভারত। তবে লো স্কোরিং ম্যাচ হতে পারে এমন চিন্তা ভাবনা মাথায় না রাখা ভালো।
অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক প্যাট কামিন্স আগেই জানিয়েছেন, পিচ নিয়ে তার দলের কোনো অতিরিক্ত চিন্তা ভাবনা নাই। বৃষ্টির তেমন কোনো আশঙ্কা নেই, তবে শিশির সমস্যা থাকতে হারে। শিশির নিয়ে অবশ্য খুব বেশি উদ্বিগ্ন হওয়ারও কিছু নেই। কেননা শিশির যেনো মাঠে তেমন কোনো প্রভাব না ফেলতে পারে সে জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
টুর্নামেন্ট জুড়ে ভারতের ব্যাটার ও বোলাররা দারুণ আধিপত্য বিস্তার করে চলেছে। সে সঙ্গে ধারাবাহিকতাও। ভারতের ব্যাটারদের সঙ্গে প্রতিপক্ষ বোলাররা রীতিমত নাকাল হচ্ছে । দলটির সাবেক অধিনায়ক বিরাট কোহলি ৭১১ রান নিয়ে সবচেয়ে বেশি রানের তালিকার শীর্ষে । সেখানে অস্ট্রেলিয়ার হয়ে সবচেয়ে রান করা ডেভিড ওয়ার্নারের রান ৫২৮।
ব্যাটারদের মতো ভারতীয় বোলাররাও আধিপত্য করছে। ২৩ উইকেট নিয়ে মোহাম্মদ শামি সবার উপরে। এ তালিকায় অবশ্য অজি বোলার অ্যাডাম জাম্পা সহজে ছাড় দিচ্ছেন না। ২২ উইকেট নিয়ে শামির পরেই তিনি। সতীর্থদের কাছে শামি যতটা সহযোগিতা পাচ্ছেন জাম্পা অতটা পাচ্ছেন না। তবে ক্রিকেট হচ্ছে নির্ধারিত দিনের খেলা। নির্ধারিত দিনে যারা ভালো করবে সাফল্যের হাসি তারাই হাসবে। যেমনটা আফগানিস্তানের বিপক্ষে হেসেছিল গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের ব্যাট। ৯১ রানে ৭ উইকেট পতনের পরও ২৯২ রানের লক্ষ্যমাত্রায় জয় পেয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। এটা সম্ভব হয়েছিল ম্যাক্সওয়েলের অপরাজিত ২০১ রানের ঝড়ো ব্যাটিংয়ের সুবাদে।
দুই দলের খেলোয়াড়দের মধ্যে একটা মিল রয়েছে। উভয় দলের এমন ছয়জন খেলোয়াড় রয়েছেন যাদের এটা দ্বিতীয় ফাইনাল। এ ছয় ক্রিকেটারের পাঁচজন অস্ট্রেলিয়ার, একজন ভারতের। অস্ট্রেলিয়ার পাঁচজন হলেন ওয়ার্নার, স্টিভ স্মিথ, গ্লেন ম্যাক্সওয়েল, স্টার্ক ও হ্যাজলউড। ভারতের একমাত্র খেলোয়াড় হচ্ছেন বিরাট কোহলি। ছয় খেলোয়াড়ই তাদের প্রথম ফাইনাল ম্যাচে শিরোপা জয় করেছিল। কিন্তু আজ আর সে উপায় নেই। একপক্ষকে ঠিকই হারের স্বাদ নিতে হবে।
আজকের ম্যাচে কোনো দলে কোনো পরিবর্তনের ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি। উভয় দলই তাদের সেমিফাইনালে খেলা দলটাকে অপরিবর্তিত রাখছে। অস্ট্রেলিয়া অবশ্য মার্নাস লাবুশেনকে বাইরে রেখে মার্কাস স্টয়নিসকে দলে আনতে চেয়েছিল। তবে ভারতের বোলিং ডিপার্টমেন্টের কথা মাথায় রেখে সে চিন্তাভাবনা থেকে তারা সরে এসেছে। অর্থাৎ মার্নাস লাবুশেনই থাকছে দলে।
উপরে