আজকের গল্প
ফুলি
রোকনুজ্জামান জুয়েল
ফুলির স্কুলে যাওয়ার বয়স। সকাল-সন্ধ্যা গতিময় পিচঢালা পথে জীবনের গতি খুঁজে। বাস্তবতার যাঁতাকলে পিষ্ট হয় স্বপ্নময় ভবিষ্যৎ। জ্যামে থমকে দাঁড়ায় ব্যস্ত সময়। জ্যাম তার জীবনের চাকা ঘুরায়। ফুলের গন্ধের সাথে উড়িয়ে দেয় জীবনের মায়া।
গাড়ির চিপায় দাঁড়িয়ে জানালায় উঁকি দিয়ে বলে- ফুল নিবেন আপা।
হ্যাঁ বা না সূচক কোন উত্তর আসে না।
- ভাইয়া, ফুল নিবেন ফুল।
নিরুত্তর জিজ্ঞাসা। কালো গ্লাস ভেদ করে ক্ষুধার্ত কণ্ঠ শ্রুতিপথে প্রবেশ করতে ব্যর্থ হয়।
বইমেলায় যাওয়ার পথে থেমে যায় বন্ধু রফিকের গাড়ির চাকা।
যানজটের সুবাদে মেয়েটি- স্যার, ফুল লাগবে?
শিক্ষকতা পেশায় সম্পৃক্ত থাকায় 'স্যার' শব্দের সাথে খুব বেশি হৃদ্যতা। মেয়েটির কণ্ঠে 'স্যার' শব্দটিতে সম্মানের চেয়ে অসহায়ত্ব বেশি প্রকাশ পায়।
বিশ টাকার একটা নোটের বিনিময়ে হাতবদল হলো একটি গোলাপ। পরক্ষণেই তার হাতে দিয়ে বললাম, ফুল দেওয়ার মত কেউ নেই আমার। তাই তোমাকেই দিলাম 'হ্যাপি ভ্যালেনটাইনস ডে'।
ফুলির চোখে মুখে এক চিলতে হাসি ফুটে উঠতে উঠতেই ট্রাফিক সিগনাল উঠে যায়।