বাইক হাওলাত
গণপতি আদিত্য
হাওলাতি বাই-সাইকেলটা আত্মীয়কে ফেরত দিয়ে পিতার লামগ্রান্টের টাকার সাথে কিছু যোগ করে একটি তৃতীয়হস্ত সিডি-সেভেন্টি হোণ্ডা কিনে বাড়ীতে প্রবেশ করলে মোটর সাইকেলটির সামনের মাডগার্ডে পাঁচটি সিঁদুরের ফোঁটা, ধান- দুর্বা ও মঙ্গল প্রদীপ জ্বেলে বরণ করে নেন ছত্রপতির মা। নবীন ডাক্তারের হঠাৎ বাই-সাইকেল থেকে মোটর সাইকেলে উত্তরণ কেউ কেউ আড়চোখে দেখলেও ছত্রপতির অসুস্থ পিতা খুবই আনন্দ পেয়েছেন এবং সতর্ক হয়ে বাইক চালাতে বলেছেন। বাড়ীতে প্রথম বাইক নিয়ে প্রবেশ করার আগে ছত্রপতি মাত্র একদিন ট্রেনিং নিয়েছে এক বড় ভাই অনুপ দত্তের কাছে। ট্রেনিং অসম্পূর্ণ রেখেই বাবা-মাকে মোটর সাইকেল দেখানোর উত্তেজনায় বাইক চালনায় এক্সপার্ট বন্ধু খালেদ জাহাঙ্গীরকে রাজী করায়। ফুলপুর থেকে প্রায় সবটা পথই চালিয়ে বাড়ির কাছাকাছি এসে ছত্রপতিকে চালাতে দিয়ে জাহাঙ্গীর পিছনে বসে। বাইক চালানোর কারণটা জাহাঙ্গীর ছত্রপতিকে জানায়- প্রথমদিনই কাকীমা দেখুন যে,তুমি চালাইতে পারো! তোমার একটা ইয়ে আছে না? ইয়ে মানে ইয়ে!
তালুকদার বাড়ীর সামনে হঠাৎ মোটর সাইকেলটি কন্ট্রোল হারিয়ে রাস্তা ছেড়ে একবারে নীচে কচুক্ষেতে! রসিক জলিল তালুকদার সেখানেই উপস্থিত, তিনি যেন আগেই জানতেন এখানে এই বিশেষ ঘটনাটি ঘটবে-
: এইটা আমরার ডাক্তর নাকি? না, না আমি কিচ্ছু দেহি নাই। কেউরে কিচ্ছু কইতাম না। আফনে এই ভাঙ্গা মটর গাড়ীটা কত দিয়া কিনছুইন? পইলা দিন কচু খাইছে, আর ভয় নাই! এই ক্ষেতের কচু খুব ভালা!
সম্পর্কে বড় ভাই রসিকজন জলিল তালুকদার ছত্রপতিকে চিরজীবন 'তুমি' বলে আজ 'আপনি' বলে সম্বোধন করছেন, কারণ এইক্ষেত্রে ভেঙ্গানোর জন্য তুমি সম্বোধনটা মোটেও যুৎসই হতো না। এক একটি 'আপনি' উচ্চারণ এক একটি লজ্জার চাবুক। ছত্রপতির মোটর বাইকের কচুক্ষেত দর্শন নিয়ে একটি নাতিদীর্ঘ রসালো গল্প সেদিন বিকেলেই গ্রামে রাষ্ট্র হয়ে গেলো!
মোটর সাইকেল তখন ঘরে ঘরে নেই। সারা ফুলপুর শহরে ছত্রপতিরটা সহ মাত্র ছেচল্লিশটি, এরটা ওকে ধার দেয়, ওরটা একে ধার! বাইক ধার দেওয়া-নেওয়ার একটা সামাজিক কালচার বেশ প্রতিষ্ঠিত!
ছত্রপতির বাইকগুরু অনুপ কুমার দত্ত একজন প্রথম শ্রেণীর ঠিকাদার। তিনি ছত্রপতির বড়বোনের সহপাঠী, পাশাপাশি গ্রাম, একই হাইস্কুলের ছাত্র তারা। গ্র্যাজুয়েট অনুপ দত্ত যখন একটি চকচকে সিডিআই - হানড্রেড টেন হোণ্ডাতে কালো সানগ্লাস পরে বসতেন, বোম্বের গোবিন্দ ইত্যাদি নায়কদের নিশ্চয়ই বলা যেতো, "তুই এহন পিছে যাহ্, অনুদা আসতেছে!"
ছত্রপতি বাইক গুরুর জন্য সর্বদা সশ্রদ্ধচিত্ত। ফুলপুর কলেজের মাঠে তৃতীয়দিন ট্রেনিং শেষে সন্তুষ্ট হয়ে অনুপ দত্ত ছত্রপতিকে এমন একটি উপদেশ দিলেন যা তিনি কাউকে সচরাচর দেন না। নিরীহ প্রকৃতির বলে, একান্ত ছোট ভাই বলে এবং এটি ছত্রপতির জীবনে বিশেষ কাজে আসবে নিশ্চিত জেনেই অনুপদা এই উপদেশটি দিলেন। এই উপদেশ দেবার সময় অসামাজিক ভাষা ও শব্দের উদ্ভব হবে জেনেও নিরূপায় হয়ে শুধুমাত্র ছোটভাইয়ের মঙ্গলের জন্য তিনি এই মূল্যবান উপদেশটি প্রদান করলেন,
"মোটর সাইকেল নিজের স্ত্রীলোকের মতো, কাউকে কখনো ধার দিবা না। কোনোদিন তা আগের মতো আর পাইবা না। একটু হইলেও ডিসটার্ব পাইবা, অন্যে মাত্র পাঁচ মিনিট হাতাইলেও! এমনকি আমি তোমার গুরু, আমি চাইলেও দিবা না, বুজ্জ?"
(২)
ছত্রপতির সিডি-সেভেন্টি ভালোই চলছিলো, তবে এটি কিছুদিনের মধ্যেই হীরালাল চৌহানের মোটর সাইকেল কারখানার নিয়মিত কাস্টমার হয়ে গেলো। জলিল তালুকদার একদিন হীরালালের দোকানে ছত্রপতিকে দেখে বললেন, "পুরান গাড়ী আর বারো সাঙ্গার নারী"!
একদিন ছত্রপতি দুপুর বেলা ভাত খাচ্ছিলো এমন সময় হন্তদন্ত হয়ে সোলায়মান মৃধা ঘরে ঢুকে বলে
: দাদা, বাইকের চাবিটা একটু দেন! আম্মার অবস্থা খারাপ!
: আমি তো বিকেলে গ্রামের বাড়ী যাব, বাবাকে দেখতে!
: দাদা, আমার গাড়ীটা নষ্ট, গ্যারেজে আছে। যাইয়াম আর আইয়াম। আফনে বাড়ীতে যাইতে পারবাইন। প্লিজ দাদা!
ছত্রপতির মাথা জুড়ে তখন গুরুবচন প্রকট হয়ে উঠলো। একদিন ময়মনসিংহ থেকে ফেরার পথে ফেরী পার হয়ে ছত্রপতি দেখে, লাস্ট বাস ছেড়ে চলে গেছে। কীভাবে ফুলপুর পৌঁছাবে এই রাতে,ট্রাকের আশায় দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ভাবছিলো, হঠাৎ সোলায়মান বাইক নিয়ে হাজির,
: উঠেন দাদা!
কিশোরগঞ্জ থেকে বাসে ফেরার পথে একদিন মাইজবাগ এসে বাস নষ্ট,দুই তিন ঘণ্টা লাগবে সারাতে, সন্ধ্যা সমাগত প্রায়, আবার সোলায়মান মৃধা,
: দাদা, এখানে কী করুইন! উঠেন যাই গা!
সোলায়মানের চাবি চাওয়ার মাঝে ছত্রপতি নিজ মায়ের মুখচ্ছবি দেখতে পেলো, গুরুবচন মুহূর্তেই সে বিস্মৃত হলো। সোলায়মান তার সমবয়সী,একজন সাব ঠিকাদারের সাইট দেখাশুনা করে সে। ছত্রপতি বললো,
: দ্রুত মাকে দেখে আসুন, এই নিন চাবি।
সন্ধ্যা গড়িয়ে রাত্র হলো, সোলায়মান বাইক নিয়ে ফেরত এলো না। ছত্রপতি সোলায়মানের বাড়ী চিনে, ফুলপুর সদর থেকে তিন কিলোমিটার পথ। সোলায়মানের মা আর নেই, এ ধরনের একটি বিষাদময় সম্ভাবনা ছত্রপতিকে আচ্ছন্ন করে ফেললো এবং তার মনটি হায় হায় করে উঠলো। একটি রিক্সা নিয়ে কর্দমাক্ত তিন কিলোমিটার এসে ছত্রপতির মাথা ঘুরতে লাগলো চড়কির মতো, "সোলায়মান বাড়ীতে আসে নাই, তার মা সুস্থ আছেন।"
গুরুর বচন পুনঃ পুনঃ ছত্রপতির মনে ও পিঠে যুগপৎ যেন চাবুক মারতে লাগলো! পরদিন সকালে একটি রমরমা খবর রটে গেলো, ছত্রপতির মোটর সাইকেল জুয়াখেলার বোর্ডে আটকা পড়েছে। সোলায়মান জুয়াখেলায় এটিকে তার নিজের বাইক বললে একজন প্রতিবাদ করে, "এটি ডাক্তার ছত্রপতির বাইক, হয়তো চুরি করে তুই বেটা এনেছিস!" কারণ, মোটর সাইকেলের কালো উইণ্ডসিল্ডে নাম লেখা আছে,"কপিধ্বজ"।
ছত্রপতি তার এই বাহনের নাম রেখেছে কপিধ্বজ, মহাভারতের অর্জুনের রথের নামে। আর্টিস্ট দীপক ধরকে কতোবার যে এর ক্যালিগ্রাফিক স্টাইল বদল করতে হয়েছে, ফুলপুরের প্রায় সবাই চিনে এই ছোট্ট বাইকটিকে, ডাক্তার ছত্রপতির 'কপিধ্বজ'। যাহোক ছত্রপতি নিজে যে জুয়াখেলায় বসেনি, এমন একটি গা ঘিন ঘিন করা খবর যে রাষ্ট্র হয়ে রটেনি, খবরের কাকের জন্ম হয়ে উড়ে উড়ে যাবার তল্লাটে এটি একটি সৌভাগ্যই বলতে হবে।
"জুয়াখেলায় ডাক্তার বাবুর বাইক কি যেতে পারে না? ডাক্তাররা কি কেউ কোনদিন জুয়া খেলেনি?" এমন একটি জটিল প্রশ্ন একদিন প্রেসক্লাবে কেউ একজন উঠালে ছত্রপতির বন্ধু প্রেসক্লাব সভাপতি তাকে প্রশ্ন করেন,
" তুমি কয়দিন গ্রামের জঙ্গলে বসে ডাক্তার ছত্রপতির সাথে জুয়া খেলেছ?"
সোলায়মান দিন সাতেক পরে চেম্বারে তার অসুস্থ মাকে দেখাতে নিয়ে আসলে ছত্রপতি কিছুই বলতে পারে নি, যেন কোনো বাইক দেওয়া নেওয়ার ঘটনাই ঘটেনি। গুরুর বচন মনে শুধু পীড়া দিচ্ছিলো!
(৩)
ছত্রপতির প্রথম পোস্টিং একটি উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রে, পূর্বধলা উপজেলার আগিয়া ইউনিয়নে,পাশের জেলা নেত্রকোনায়। ফুলপুর থেকে পূর্বধলা বত্রিশ কিলোমিটার, সবটুকুই কাঁচারাস্তা। বর্ষাকালে রাস্তাটির কিছু কিছু স্থান এমন কর্দমাক্ত ও পিচ্ছিল হয় যে বাইক চালিয়ে দূরের কথা হেঁটে যাওয়াও দুষ্কর এবং জুতো পায়ে হাঁটা একটি অসম্ভব ব্যাপার!
সাবান গুলালে যেমন পিচ্ছিল হয়, তেমনি একটি স্থান পূর্বধলার কাছাকাছি কালডোয়ার। বর্ষাকালে প্রবচনটাই এরকম, " কালডোয়ারের বন্দ, বইয়া বইয়া কান্দো।"
অফিসের কার্যোপলক্ষে ছত্রপতিকে আগিয়া থেকে মাঝেমাঝে কালডোয়ার হয়ে পূর্বধলা আসতে হতো এবং অনেক বার উক্ত প্রবচনের মর্ম রাস্তা হতে ছিটকে পড়ে হাড়ে হাড়ে টের পেতো।
একদিন আষাঢ় মাসে বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতে পূর্বধলা থেকে কালডোয়ারের রাস্তায় কাদার সাথে যুদ্ধ করে আগিয়া স্বাস্থ্যকেন্দ্রে বসে ছত্রপতি হাত পা ছেড়ে দিয়ে বিশ্রাম নিচ্ছিলো আর ভাবছিলো, বর্ষাকালে বাইক আর না, আর না!
হঠাৎ কোত্থেকে হাজির হয় সোলায়মান মৃধা,
: আদাব দাদা, হাসপাতালে কতক্ষণ আছেন?
: আরো ঘণ্টা দুয়েক আছি।
: পূর্বধলার রাস্তা কেমন, জানেন দাদা?
ছত্রপতি সোলায়মানের কুটবুদ্ধি ও হাওলাতি উদ্দেশ্য একেবারে নিশ্চিত হয়ে যায়,
: রাস্তা মোটামুটি আছে, আমি মাত্রই বাইক চালিয়ে এলাম।
: দাদা, একটু চাবিটা! যাব আর আসবো। উপজেলায় একটি জরুরী কাজ আছে। তারপর দুইভাই একসাথে ফুলপুর ফিরবো। লক্ষ্মী দাদা!
ছত্রপতির সোলায়মানকে দেখেই গুরুর বচন মনে হচ্ছিলো। একজন বেহায়া জুয়াড়ি দু'দিন মোটর বাইকে লিফট্ দিয়ে এভাবে প্রতিদান পাবার জন্য একেবারে নির্লজ্জ হয়ে ঘাড়ে চেপে বসেছে দেখে ছত্রপতি মোটেও আজ বিচলিত হয়নি। একজন প্রতারককে দ্বিতীয়বার প্রশ্রয় দেয়া যে মোটেও ভালো কর্ম নয় তা জেনেও সোলায়মান যে আজ বাইকটি নিয়ে জুয়া খেলায় বসবে না তা ছত্রপতি একপ্রকার মনে মনে নিশ্চিত হয়ে যায়। কালডোয়ারের রাস্তায় পিচ্ছিল কাদার সাথে আজ যে পরিমাণ যুদ্ধ করেছে ও ফুলপুর ফিরতে রূপসী গ্রামের এক কিলোমিটার কর্দমাক্ত পথের কষ্টের কথা ভেবে প্রিয় এই কপিধ্বজকে ছত্রপতির আজ একটি পর্বত প্রমাণ বোঝা মনে হতে লাগলো এবং এই বোঝার সবটুকু সোলায়মানের ঘাড়ে চাপিয়ে একপ্রকার প্রতিশোধ নিতে চাইলো।
গুরুর বচন সজ্ঞানে অমান্য করে ছত্রপতি কপিধ্বজের বোঝাটা সোলায়মানের কাঁধে দিয়ে ভারমুক্ত হয়,
: এই নেন চাবি, তাড়াতাড়ি আসবেন। বিকেলে চেম্বার আছে।
সোলায়মান যাবার পরপরই তুমুল বৃষ্টি শুরু হয়। দ্বিগুন ভাড়ায় একটি রিক্সা নিয়ে ছত্রপতি বিকেলেই ফুলপুর বাসায় পৌঁছে যায়। সন্ধ্যা পার হলো, রাত গভীর হলো, সোলায়মান এলো না। বিন্দুমাত্র ভ্রুক্ষেপ না করে ছত্রপতি ঘুমিয়ে পড়লো।
পরদিন বিকেল বেলা হীরালাল চৌহান ছত্রপতির বাসায় কপিধ্বজকে পৌঁছে দেন। হীরালাল চৌহানের বক্তব্যের সারমর্মে ছত্রপতি একপ্রকার পেটখোলাসা আরাম অনুভব করে।
কালডোয়ার পর্যন্ত সোলায়মান কোনোমতে বাইক চালিয়ে যেতে পেরেছিলো, তারপর রাস্তার নীচে চলে যায়। ইঞ্জিনে পানি ঢুকে ও ব্রেক ছিঁড়ে যায়। লোকজনকে সাহায্য করতে বললে কেউ কেউ নাকি বলেছে, " নিজের জানটা নিয়েই যেতে পারি না, আপনের মাল টানি কেমনে?" দুটি ছেলেকে অনেক অনুনয় বিনয় করে একশত টাকা বকশিস দিয়ে বাইকটি রাস্তায় তুলেছে। তারপর দুইশত টাকা দিয়ে একটি ভ্যান গাড়ীতে বাইকটি উঠিয়ে পূর্বধলা পর্যন্ত যখন গিয়েছে ততক্ষণে উপজেলার অফিস বন্ধ করে অফিসাররা চলে গেছে। সারা পিচ্ছিল পথ তাকে ভ্যানগাড়ী ঠেলতে হয়েছে, না ঠেললে ভ্যানচালক বলেছে, " মাপ করেন, পারবো না।" মোটর সাইকেল সারাই করতে রাত আটটা বেজেছে, খরচ হয়েছে আটশত টাকা। ফেরার পথে বৃষ্টি ছিলো না, কিন্তু কালডোয়ারের রাস্তায় পুনরায় ব্রেকের তার ছিন্নভিন্ন হয়ে স্লিপ খেয়ে আবার রাস্তার নীচে উরু পরিমাণ পানিতে। অতঃপর একজন সহৃদয় ভ্যান চালককে দিয়ে বাইকটি উদ্ধার করে চারশত টাকা ভাড়া দিয়ে রাত একটায় হীরালাল চৌহানের গ্যারেজে প্রত্যাবর্তন। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত হীরালালের সময় লেগেছে কপিধ্বজ কে ঠিকঠাক করতে। চৌহানের বিল উঠেছে উনিশ শত টাকা। সব মিলিয়ে সোলায়মানের বাইক হাওলাতের মোট বিল দাঁড়িয়েছে তিনহাজার চারশত টাকা। কালডোয়ারের রাস্তায় চোট খেয়ে হাত ভেঙে গেছে ভয়ে পূর্বধলায় ডাক্তার দেখিয়েছে ও এক্স-রে করেছে। ডাক্তারের ফি ও ঔষধের দাম সহ বিল হয়েছে এগারো শত টাকা।
ছত্রপতি হীরালাল চৌহানকে জিজ্ঞেস করে,
: সোলায়মান নিজে বাইকটি দিতে আসেনি কেন?
: দাদা, সোলায়মান আর কখনো আপনার সামনে আসবে না দাদা। একটি প্রিয় জিনিস বিনা বাক্যে হাওলাত দিয়ে অতীতের প্রতিশোধ নিতে আপনার মত কিসিঞ্জার নাকি কাউকে আর সে আর জীবনে দেখেনি! আপনার চালাকি বিদ্যাটা নাকি ডক্টরেট পাস। আপনার নাকি রাজনীতি করা উচিত!
ছত্রপতি ডায়েরিতে ভালোভাবে হিসেব করে দেখে সোলায়মানের একদিনের বাইক হাওলাত খরচ সর্বমোট চারহাজার পাঁচশত, যা বাইকটির ক্রয়মূল্যের প্রায় পাঁচভাগের একভাগ! ষোলশত পঞ্চাশ টাকা স্কেলে ছত্রপতির মাসিক স্যালারি উনত্রিশ শত পঞ্চাশ টাকা মাত্র। গুরুবচন মান্যতা করে বাইকটি হাওলাত না দিলে ছত্রপতির জান ও এই সেকেণ্ড হ্যাণ্ড মালের আজ বারোটা বেজে যেত।